Wednesday, July 17, 2024

শিক্ষক দিবস Teachers Day

 মহান শিক্ষক শ্রী শ্রী সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিবস উদযাপন উপলক্ষে 

শিক্ষক দিবস উদযাপন-2023

স্থান:- বিবেকানন্দ কোচিং সেন্টার, নেতাজি বাজার, সিতাই, কোচবিহার।

তারিখ:- 5 ই সেপ্টেম্বর , 2023 , মঙ্গলবার।

অনুষ্ঠানসূচী :-

1. শিক্ষক ও অতিথি বরণ :- সকাল 7 টা।

2. মাল্যদান ও প্রদীপ প্রজ্জলন :- সকাল 7 টা 5 মিনিট।

3. উদ্বোধনী সঙ্গীত :- সকাল 7 টা 10 মিনিট।

4.শিক্ষক ও অতিথিদের বক্তব্য :- সকাল 7 টা 15মিনিট।

5. কবিতা আবৃতি :- সকাল 7 টা 30 মিনিট।

                              (i) বোম্বাগড়ের রাজা ( ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেনী)

                              (ii) কান্ডারী হুশিয়ার ( নবম  ও দশম শ্রেনী)

                              (iii) দুই বিঘা জমি ( একাদশ ও  দ্বাদশ শ্রেনী)

6. তাৎক্ষনিক বক্তৃতা ( নবম  থেকে দ্বাদশ শ্রেনী) সকাল 8 টা 15মিনিট।

                              বিষয় :- শিক্ষক দিবস প্রসঙ্গ ।      সময় :- 2 মিনিট।

7. প্রাক্তন মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান :- সকাল 8 টা 40 মিনিট।

8. নাটক :- সকাল 9 টা ।

9. নৃত্য প্রতিযোগিতা ।

10. পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান :- সকাল 9 টা 45 মিনিট।

11. অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি :- সকাল 10 টায়।

উক্ত অনুষ্ঠানে সকল ছাত্রছাত্রী , প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের সাদর আমন্ত্রন রইল।

বিনীত, 

সকল ছাত্রছাত্রীবৃন্দ


দুই বিঘা জমি


শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই   আর সবই গেছে ঋণে।

বাবু বলিলেন, “বুঝেছ উপেন,   এ জমি লইব কিনে।’

কহিলাম আমি, “তুমি ভূস্বামী,   ভূমির অন্ত নাই।

চেয়ে দেখো মোর আছে বড়ো-জোর   মরিবার মতো ঠাঁই।’

শুনি রাজা কহে, “বাপু, জানো তো হে, করেছি বাগানখান

পেলে দুই বিঘে প্রস্থে ও দিঘে   সমান হইবে টানা–

ওটা দিতে হবে।’ কহিলাম তবে   বক্ষে জুড়িয়া পাণি

সজল চক্ষে, “করুণ বক্ষে   গরিবের ভিটেখানি।

সপ্ত পুরুষ যেথায় মানুষ   সে মাটি সোনার বাড়া,

দৈন্যের দায়ে বেচিব সে মায়ে   এমনি লক্ষ্মীছাড়া!’

আঁখি করি লাল রাজা ক্ষণকাল   রহিল মৌনভাবে,

কহিলেন শেষে ক্রূর হাসি হেসে,  “আচ্ছা, সে দেখা যাবে।’



পরে মাস দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে   বাহির হইনু পথে–

করিল ডিক্রি, সকলই বিক্রি   মিথ্যা দেনার খতে।

এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায়   আছে যার ভূরি ভূরি–

রাজার হস্ত করে সমস্ত   কাঙালের ধন চুরি।

মনে ভাবিলাম মোরে ভগবান   রাখিবে না মোহগর্তে,

তাই লিখি দিল বিশ্বনিখিল   দু বিঘার পরিবর্তে।

সন্ন্যাসীবেশে ফিরি দেশে দেশে   হইয়া সাধুর শিষ্য

কত হেরিলাম মনোহর ধাম, কত মনোরম দৃশ্য!

ভূধরে সাগরে বিজনে নগরে   যখন যেখানে ভ্রমি

তবু নিশিদিনে ভুলিতে পারি নে   সেই দুই বিঘা জমি।

হাটে মাঠে বাটে এই মতো কাটে   বছর পনেরো-ষোলো–

একদিন শেষে ফিরিবারে দেশে   বড়ই বাসনা হল।


নমোনমো নম সুন্দরী মম   জননী বঙ্গভূমি!

গঙ্গার তীর স্নিগ্ধ সমীর,   জীবন জুড়ালে তুমি।

অবারিত মাঠ, গগনললাট  চুমে তব পদধূলি,

ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড়   ছোটো ছোটো গ্রামগুলি।

পল্লবঘন আম্রকানন   রাখালের খেলাগেহ,

স্তব্ধ অতল দিঘি কালোজল–  নিশীথশীতল স্নেহ।

বুকভরা মধু বঙ্গের বধূ   জল লয়ে যায় ঘরে–

মা বলিতে প্রাণ করে আনচান,   চোখে আসে জল ভরে।

দুই দিন পরে দ্বিতীয় প্রহরে   প্রবেশিনু নিজগ্রামে–

কুমোরের বাড়ি দক্ষিণে ছাড়ি   রথতলা করি বামে,

রাখি হাটখোলা, নন্দীর গোলা, মন্দির করি পাছে

তৃষাতুর শেষে পঁহুছিনু এসে   আমার বাড়ির কাছে।



বিদীর্ণ হিয়া ফিরিয়া ফিরিয়া   চারি দিকে চেয়ে দেখি–

প্রাচীরের কাছে এখনো যে আছে,   সেই আমগাছ একি!

বসি তার তলে নয়নের জলে   শান্ত হইল ব্যথা,

একে একে মনে উদিল স্মরণে   বালক-কালের কথা।

সেই মনে পড়ে জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে  রাত্রে নাহিকো ঘুম,

অতি ভোরে উঠি তাড়াতাড়ি ছুটি   আম কুড়াবার ধুম।

সেই সুমধুর স্তব্ধ দুপুর,   পাঠশালা-পলায়ন–

ভাবিলাম হায় আর কি কোথায়   ফিরে পাব সে জীবন!

সহসা বাতাস ফেলি গেল শ্বাস   শাখা দুলাইয়া গাছে,

দুটি পাকা ফল লভিল ভূতল   আমার কোলের কাছে।

ভাবিলাম মনে বুঝি এতখনে   আমারে চিনিল মাতা,

স্নেহের সে দানে বহু সম্মানে   বারেক ঠেকানু মাথা।


হেনকালে হায় যমদূত-প্রায়  কোথা হতে এল মালী,

ঝুঁটি-বাঁধা উড়ে সপ্তম সুরে   পাড়িতে লাগিল গালি।

কহিলাম তবে, “আমি তো নীরবে   দিয়েছি আমার সব–

দুটি ফল তার করি অধিকার,   এত তারি কলরব!’

চিনিল না মোরে, নিয়ে গেল ধরে  কাঁধে তুলি লাঠিগাছ–

বাবু ছিপ হাতে পারিষদ-সাথে   ধরিতেছিলেন মাছ।

শুনি বিবরণ ক্রোধে তিনি কন,   “মারিয়া করিব খুন!’

বাবু যত বলে পারিষদ-দলে   বলে তার শতগুণ।

আমি কহিলাম, “শুধু দুটি আম  ভিখ মাগি মহাশয়!’

বাবু কহে হেসে, “বেটা সাধুবেশে   পাকা চোর অতিশয়।’

আমি শুনে হাসি আঁখিজলে ভাসি,   এই ছিল মোর ঘটে–

তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ,   আমি আজ চোর বটে


নবম ও দশম শ্রেনী


কান্ডারী হুশিয়ার!

- কাজী নজরুল ইসলাম

দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার 

লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার! 


দুলিতেছে তরি, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ, 

ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ? 

কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ। 

এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার। 


তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান! 

যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান। 

ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান, 

ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার। 


অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরন 

কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি পন। 

হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? 

কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার 


গিরি সংকট, ভীরু যাত্রীরা গুরু গরজায় বাজ, 

পশ্চাৎ-পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ! 

কান্ডারী! তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যজিবে কি পথ-মাঝ? 

করে হানাহানি, তবু চলো টানি, নিয়াছ যে মহাভার! 


কান্ডারী! তব সম্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর, 

বাঙালীর খুনে লাল হল যেথা ক্লাইভের খঞ্জর! 

ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়, ভারতের দিবাকর! 

উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পূনর্বার। 


ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান, 

আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন্ বলিদান 

আজি পরীক্ষা, জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ? 

দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুশিয়ার!


বোম্বাগড়ের রাজা
সুকুমার রায়
কেউ কি জান সদাই কেন বোম্বাগড়ের রাজা
ছবির ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখে আমসত্ত ভাজা ?
রানীর মাথায় অষ্ট প্রহর কেন বালিশ বাঁধা ?
পাঁউরুটিতে পেরেক ঠোকে কেন রানীর দাদা ?
কেন সেথায় সর্দি হ'লে ডিগ্‌বাজি খায় লোকে ?
জোছনা রাতে সবাই কেন আলতা মাখায় চোখে ?
ওস্তাদেরা লেপ মুড়ি দেয় কেন মাথায় ঘাড়ে ?
টাকের 'পরে পণ্ডিতেরা ডাকের টিকিট মারে ?

রাত্রে কেন ট্যাঁক্‌ঘড়িটা ডুবিয়ে রাখে ঘিয়ে ?
কেন রাজার বিছ্‌না পাতা শিরীষ কাগজ দিয়ে ?
সভায় কেন চেঁচায় রাজা 'হুক্কা হুয়া' ব'লে ?
মন্ত্রী কেন কল্‌সী বাজায় ব'সে রাজার কোলে ?
সিংহাসনে ঝোলায় কেন ভাঙা বোতল শিশি ?
কুমড়ো দিয়ে ক্রিকেট খেলে কেন রাজার পিসি ?
রাজার খুড়ো নাচেন কেন হুঁকোর মালা প'রে ?
এমন কেন ঘটছে তা কেউ বলতে পার মোরে ?









No comments:

Post a Comment