Friday, December 1, 2023

নবম শ্রেনীর বাংলা ব্যকারণ

 নবমশ্রেনী ; বিষয়: বাংলা 
শিক্ষক:- স্বপন কুমার রায়।

 1. সমীভবন কাকে বলে ? উ:- পাশাপাশি বা কাছাকাছি উচ্চারিত দুটি ভিন্ন ব্যঞ্জনের একটি অপরটির প্রভাবে পরিবর্তিত হয়ে একই বা একই ধরনের ব্যঞ্জনে পরিণত হলে তাকে সমীভবন বা ব্যঞ্জন সংগতি বলে । * 

সমীভবনেরমী অপর নাম সমীকরণ । 

 সমীভবনের উদাহরণ হল : দুর্গা > দুগ্গা , বড়দা > বদ্দা , উৎসব > উচ্ছব , ধর্ম > ধম্ম, বৎসর > বচ্ছর , পদ্ম > পদ্দ , মহাত্মা > মহাত্তা ইত্যাদি । 

 2. সমীভবন কয় প্রকার ? উ:- সমীভবন তিন প্রকার : প্রগত সমীভবন , পরাগত সমীভবন ও অন্যোন্য সমীভবন ।

 3. পরাগত সমীভবন কাকে বলে? উ:-পরাগত সমীভবন : যে সমীভবনে পরবর্তী ব্যঞ্জনের প্রভাবে পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের পরিবর্তন ঘটে , তাকে পরাগত সমীভবন বলে । যেমন : দুর্গা > দুগ্গা , কর্ম > কৰ্ম্ম । 

 4.অন্যোন্য সমীভবন কাকে বলে? উ:- অন্যোন্য সমীভবন : যে সমীভবনে পারস্পরিক প্রভাবে উভয় ব্যঞ্জনের পরিবর্তন ঘটে , তাকে অন্যোন্য সমীভবন বলে । যেমন : বৎসর > বচ্ছর , উৎসব > উচ্ছব।

 5. প্রগত সমীভবন কাকে বলে? উ:- প্রগত সমীভবন : যে সমীভবনে পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের প্রভাবে পরবর্তী ব্যঞ্জনের পরিবর্তন ঘটে , তাকে বলে প্রগত সমীভবন । যেমন : পদ্ম > পদ্দ । 

 6. সর্বনাম কী? উ:-বিশেষ্য পদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহার করা হয় , তাকে সর্বনাম পদ বলে । সব রকম নামের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় বলে এর নাম সর্বনাম । আমি , উদাহরণ : আমরা , তুমি , আপনি , আপনাকে , আপনার , ইহা , ইনি , উনি ইত্যাদি ।

 7. সাপেক্ষ সর্বনাম কী? যে সর্বনাম পদ দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বা বস্তুর সংযোগ সাধন করে বা সঙ্গতি বিধান করে তাকে সাপেক্ষ সর্বনাম বলে ।যে - সে , সে , যিনি - তিনি , যাহা - তাহা। 

 8. সমষ্টিবাচক সর্বনাম বা সাকল্যবাচক সর্বনাম কী? যে সর্বনামের দ্বারা সমষ্টিবাচক ব্যক্তি , বস্তু বা ভাবকে বোঝানো হয় , তাকে সমষ্টিবাচক সর্বনাম বা সাকল্যবাচক সর্বনাম বলে । উদাহরণ : সব , সর্ব , সকল , সবাই ।

 9. আত্মবাচক সর্বনাম কী? এই সর্বনাম নিজস্ব বা আত্মভাব প্রকাশ করে । উদাহরণ : স্বয়ং , নিজে নিজ খোদ , নিজে নিজে , আপনি । 

 10. অপিনিহিতি কথার অর্থ কী ? উ:-অপিনিহিতি কথার অর্থ হল পূর্বে স্থাপন ।অপিনিহিতিতে ই বা উ স্বরকে পূর্বে স্থাপন করা হয় । দেখিয়া > দেইখ্যা দ্ + এ + খ্ + ই ++ আ > দ্ + এ + ই +++ আ ( য় = য ) উপরের উদাহরণে ই স্বরটি প্রথমে খ - এর পরে ছিলো , অপিনিহিতির ফলে খ চলে গেছে ই - র পর , ই এক ঘর এগিয়ে গেছে ।

 11. প্রতিপাদিক কী? প্রতিপাদিক হলো বিভক্তিহীন নাম - প্রকৃতি বা সাধিত শব্দ এবং বিভক্তিহীন তবে প্রত্যয়যুক্ত ক্রিয়ামূল বা ক্রিয়া - প্রকৃতি । প্রকৃতির সাথে প্রত্যয়ের যোগে যে শব্দ ও ক্রিয়ামূল গঠিত হয় তার নাম প্রাতিপাদিক । 

 12.নাম - প্রাতিপাদিক কী? নাম - প্রাতিপাদিক বিভক্তহীন ও প্রত্যয়হীন কিংবা বিভক্তিহীন অথচ প্রত্যয়যুক্ত নাম - প্রকৃতিকে নাম প্রাতিপাদিক বলে । উদাহরণ : দোকান + দার = দোকানদার + কে = দোকানদারকে । 

 13. ক্রিয়া - প্রাতিপাদিক কী? ক্রিয়া - প্রাতিপাদিক বিভক্তহীন ও প্রত্যয়যুক্ত ধাতু - প্রকৃতিকে ক্রিয়া - প্রাতিপাদিক বলে । উদাহরণ : কর্ + অ = করা + কে = করাকে।

 14. অসম্পুর্ণ বা পঙ্গু ধাতু কী? যে সব ক্রিয়াকে সব কালে ও ভাবে ব্যবহার করা চলে না তাদের বলা হয় অসম্পুর্ণ ক্রিয়া । যে সব ধাতু থেকে এ ধরনের ক্রিয়া হয় তাকে বলে অসম্পুর্ণ বা পঙ্গু ধাতু । যেমন- দেখ ।

 15. মৌলিক বা সিদ্ধ ধাতু কাকে বলে? যেসকল ধাতুকে ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা যায় না তাদের মৌলিক বা সিদ্ধ ধাতু বলে । উদাহরণ : √কর্ , √চল , √দেখ্‌ , √খেল , √পড় , √খা ।

 16. সাধিত ধাতু কাকে বলে? মৌলিক ধাতু কিংবা নাম শব্দের সাথে আ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে যে ধাতু গঠিত হয় তাকে সাধিত ধাতু বলে । উদাহরণ : √কর + আ = √করা , √দেখ্ + আ = √দেখা , √পড্‌ + আ = √পড়া । 

17.সংযোগমূলক বা যৌগিক ধাতু কাকে বলে? মৌলিক ধাতু যুক্ত হয়ে যে ধাতু গঠন করে তাকে সংযোগমূলক বা যৌগিক ধাতু বলে । উদাহরণ : পূজা কর্ , রাজি হ , কষ্ট পা , শাস্তি দে । 

 18.অব্যয় কী? বাক্যে বা শব্দের সাথে ব্যবহৃত যে সকল ধ্বনি - বিভক্তি , বচন , লিঙ্গ ও কারকভেদে কোনোভাবে পরিবর্তন হয় না , সেসকল পদকে অব্যয় বলে । 

19.হেতুবাচক অব্যয় কী ? হেতুবাচক অব্যয় : যে অব্যয় হেতু বা কারণ বোঝাতে ব্যবহৃত হয় তাকে হেতুবাচক অব্যয় বলে । যেমন- কারণ , বলে , কেননা , এই জন্য , যেহেতু , এই হেতু ইত্যাদি । 

 20.সংশয়সূচক অব্যয় কী? সংশয়সূচক অব্যয় : যে অব্যয় সংশয় বা সন্দেহ বোঝাতে ব্যবহৃত হয় তাকে সংশয়সূচক অব্যয় বলে । যেমন- বুঝি , নাকি , হয়তো , তাই নাকি , ইত্যাদি ।

 21.সিদ্ধান্তবাচক অব্যয় কী? সিদ্ধান্তবাচক অব্যয় : যে অব্যয় সিদ্ধান্ত বোঝাতে ব্যবহৃত হয় তাকে সিদ্ধান্তবাচক অব্যয় বলে । যেমন- সুতরাং , বোধহয় , তাই , কাজেই , অতএব। 

 22.সাপেক্ষ অব্যয় কী? সাপেক্ষ অব্যয় : যে সকল অব্যয় পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত অর্থাৎ একটিকে ব্যবহার করলে আর একটিকে ব্যবহার করতেই হয় তাকে নিত্যসম্বধী অব্যয় বলে । যেমন- যেমন- তেমন , যত - তত , যখন – তখন , ইত্যাদি । 

 23.আবেগসূচক অব্যয়পদ কী? যে শব্দগুলি দিয়ে মনের আনন্দ , বেদনা , ক্রোধ , ঘৃণা , বিস্ময় , লজ্জা , সম্মতি , ইত্যাদি মনের নানারকম ভাব বা আবেগ প্রকাশ করা হয় তাদেরই আবেগসূচক অব্যয়পদ বলে । যেমন — ওরে বাবা , এঃ দূর ছাই , কী জ্বালা , হিন , হায় হায় , আ মরি । শাবাশ । শাবাশ । 

 24.সংকোচক অব্যয় কী? সংকোচক অব্যয় : যে অব্যয় বাক্যের অর্থকে সংকুচিত করে অর্থাৎ কাঙ্ক্ষিত ফলের বিপরীত ফল প্রকাশ করে তাকে সংকোচক অব্যয় বলে । যেমন- কিন্তু , পরন্তু , বরং , বরঞ্চ , তথাপি , অথচ ইত্যাদি । 

 25. পদান্বয়ী অব্যয় কী? যে অব্যয় বাক্য মধ্যস্থ একটি পদের সঙ্গে অন্য একটি পদের অন্বয় বা সম্বন্ধ স্থাপন করে , তাকে পদান্বয়ী অব্যয় বলে । যেমন- হইতে , থেকে , চেয়ে , নিমিত্ত , বিনা , ব্যতীত , অবধি , সঙ্গে , দ্বারা ইত্যাদি । 

 26. বিভক্তি ও অনুসর্গের পার্থক্য আলোচনা কর । পার্থক্যগুলি হল --- ১ ) অনুসর্গের স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার আছে , বিভক্তির স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার নেই । ২ ) বিভক্তি পদের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় থাকে । অনুসর্গ পদের পরে আলাদা ভাবে বসে । ৩ ) বিভক্তি কোনো পদ নয় । অনুসর্গ নিজে এক ধরনের অব্যয় পদ ।  
27. বিভক্তি ও নির্দেশকের পার্থক্য আলোচনা কর । বিভক্তি ও নির্দেশকের মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য আছে ১ ) বিভক্তি কারক বা সম্বন্ধ নির্দেশ করে । নির্দেশক শব্দের পরে যুক্ত হয়ে বচন নির্দেশ করে । ২ ) নির্দেশকের পর বিভক্তি যুক্ত হতে পারে । বিভক্তির পর নির্দেশক যুক্ত হতে পারে না । ৩ ) শব্দে বিভক্তিযুক্ত হলেই উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় কিন্তু নির্দেশক যুক্ত হলেও অনেক সময় বিভক্তি যোগ করার প্রয়োজন হয় ।

 28. প্রত্যয় কী? যেসব ধ্বনি, শব্দ বা ধাতুর শেষে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ বা ধাতু গঠন করে সেইসব ধ্বনিকে প্রত্যয় বলে । যেমন — চল্ + অন্ত = চলন্ত ; জমি + দার = জমিদার । এখানে ' অন্ত ' ও ' দার ' দুটি প্রত্যয় ।

 29. কৃৎ প্রত্যয় কী? ধাতুর সঙ্গে যুক্ত প্রত্যয়কে বলা হয় কৃৎ প্রত্যয় , এবং কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে যে নতুন শব্দ গঠিত হয় , তাকে কৃদন্ত শব্দ বলে । যেমন — গম ( ধাতু ) + অন ( প্রত্যয় ) = গমন ( কৃদন্ত শব্দ ) 

 30.. তদ্ধিত প্রত্যয় কাকে বলে? শব্দের সঙ্গে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে , তাকে বলা হয় তদ্ধিত প্রত্যয় , এবং তদ্ধিত প্রত্যয় যুক্ত হয়ে যে - শব্দ গঠিত হয় তাকে তদ্ধিতান্ত শব্দ বলে । যেমন — রঘু ( শব্দ ) + অ ( তদ্ধিত প্রত্যয় ) - রাখব ( তদ্ধিতান্ত শব্দ ) 31. উপসর্গ ও অনুসর্গের পার্থক্য লেখ? উপসর্গ শব্দের আগে বসে কিন্তু অনুসর্গ শব্দের পরে বসে। 32. বিশেষণ কী? যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে। যেমন: ভালো, মন্দ ।

No comments:

Post a Comment