DSE-2
Marks:-15
1. Discuss the role of Maharaja Nripendra Narayan for modernizing the Cooch Behar state .[কোচবিহার রাজ্যের আধুনিকীকরণে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের ভূমিকা আলোচনা কর।]
Answer:-কোচবিহার রাজবংশের ইতিহাসে যার আমলে কোচবিহার রাজ্যের খ্যাতি ও গৌরব চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল , সমাজব্যবস্থা ও শিক্ষাব্যবস্থায় যথার্থ আধুনিকতার সূচনা ঘটেছিল তিনি হলেন মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ । তার রাজত্বকাল ছিল কোচবিহারের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী অধ্যায় । তিনি ছিলেন একজন আধুনিক ও পরোপকারী রাজা। নৃপেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালে কোচবিহার একটি আধুনিক রাজ্যে পরিণত হয়। কোচবিহারের মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। শিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালকে নবজাগরণের যুগ 'এবং স্বর্ণযুগ' হিসেবে গণ্য করা হয়। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ বিভিন্নভাবে কোচবিহারের উন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। তিনি গণশিক্ষার প্রসার, নারী শিক্ষার বিস্তার, উচ্চশিক্ষার বিকাশ , সাহিত্যের বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেছিলেন। তিনি শিল্প ও স্থাপত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এক্ষেত্রে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের রানী মহারানী সুনীতি দেবীর ভূমিকাও অপরিসীম।
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ:-
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণকে আধুনিক কোচবিহারের স্থপতি হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি ১৮৬২ সালের ৪ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মাহারাজা নরেন্দ্র নারায়ণ ১৮৬৩ সালের ৬ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তখন নৃপেন্দ্র নারায়ণের বয়স মাত্র দশ মাস। যেহেতু তিনি তখনও শিশু ছিলেন ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল কর্তৃক নিযুক্ত কমিশনারের কাছে প্রশাসন হস্তান্তর করা হয়েছিল। নৃপেন্দ্র নারায়ণ কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। 1878 সালে নৃপেন্দ্র নারায়ণ কেশব চন্দ্র সেনের কন্যা সুনীতি দেবীকে বিয়ে করেন। সুনীতি দেবীর বয়স তখন মাত্র চৌদ্দ বছর। মহারাজ নৃপেন্দ্র নারায়ণ 18 সেপ্টেম্বর 1911 সালে তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোচবিহার রাজ্য শাসন করেছিলেন। মহারাজা নৃপ্রেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালে কোচবিহার একটি নতুন দৃষ্টান্তে পরিণত হয়। কোচবিহারের আধুনিকীকরণের পিছনে প্রধান প্রেরণা ছিলেন মহারানী সুনীতি দেবী। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ কোচবিহারের উন্নতির জন্য অনেক উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।
শিক্ষার বিকাশ:-
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন কোচবিহারের প্রথম শাসক যিনি ইংরেজি শিক্ষা লাভ করেন। রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশব চন্দ্র সেন প্রমুখের মতো তিনিও আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি মনে করতেন , শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। তিনি কোচবিহারে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন ।
১) গণশিক্ষার প্রসার:-
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের শাসনাকালে গণশিক্ষার প্রসার ঘটেছিল। তিনি ধর্মীয় সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত ছিলেন। তিনি সকল ধর্মের প্রতি উদার মনোভাব গ্রহন করেন। তার উদার মনোভাবের ফলে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমানরাও আধুনিক শিক্ষার প্রতি উদ্বিগ্ন ছিল। 1891 সালে মাথাভাঙ্গা, মেখলিগঞ্জ এবং দিনহাটার প্রাথমিক স্কুলগুলিকে মাধ্যমিক স্কুলে উন্নীত করা হয়। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে বিখ্যাত সমাজ সংস্কারক ঠাকুর পঞ্চান বর্মা মাথাভাঙ্গা থেকে এম.ই. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। 1899-1900 সালে কোচবিহার শহরে একটি ফার্সি স্কুল এবং মুসলমানদের সুবিধার জন্য একটি মক্তাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
২) নারী শিক্ষার অগ্রগতি:
কোচবিহারের রাজপরিবারে প্রথমে নারী শিক্ষা শুরু হয়। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের শাসনামলে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছিল। 1875 সালে কোচবিহারে 23টি মহিলা স্কুল ছিল যা থেকে আমরা নারী শিক্ষার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পারি। এতে সক্রিয় অংশ নেন মহারানী সুনীতি দেবী। 1881-82 সালে 19 জন ছাত্রীর মধ্যে 17 জন প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। 1888-89 সালে সরল শশী দাস এবং হেমাঙ্গিনী দাসী উচ্চ প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। 1886 সালে একটি মহিলা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যার নাম ছিল 'রাজকুমার গার্লস স্কুল'।
উচ্চশিক্ষার প্রসার:-
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসারই নয়, মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালে কোচবিহারে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছিল। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ কোচবিহারের ছাত্রদের জন্য উচ্চ শিক্ষার প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন।তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ 1888 সালে কোচবিহারে প্রথম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজের নাম ছিল ভিক্টোরিয়া কলেজ। বর্তমানে এটি আচার্য ব্রজেন্দ্র নাথ শিল কলেজ নামে পরিচিত। কলেজটি শুধু উত্তরবঙ্গেই নয়, সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে যথেষ্ঠ সুনাম অর্জন করেছে। "রাজবংশী জাতির জনক ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা এবং বিশ্ববিখ্যাত ভাওয়াইয়া গায়ক আব্বাসউদ্দিন আহমেদ এই প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি লাভ করেন। 1881 সালে সুনিতী অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর নামকরণ করা হয়েছে মহারানী সুনীতি দেবীর নামে, যিনি এই স্কুল প্রতিষ্ঠার পিছনে মূল ভুমিকা পালন করেছিলেন।
2. Evaluate the activities of Rai Saheb Thakur Panchanan Barma with special reference to his social reformation . (রায় সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার সামাজিক সংস্কারের বিশেষ উল্লেখ সহ তার কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করুন।)
Answer :- পঞ্চানন বর্মা ছিলেন কোচবিহারের রাজবংশী নেতা , রাজনীতিবিদ , আইনজীবি ও সমাজসংস্কারক। তিনি ঠাকুর পঞ্চানন , রায় সাহেব , ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য , তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি কোচবিহার রাজ্যে রাজবংশী জোতদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, তবে তাঁর সাহিত্য ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রধান কেন্দ্র ছিল রংপুর।ঔপনিবেশিক শাসনকালে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান বুদ্ধিজীবী ছিলেন রায়সাহেব পঞ্চানন বর্মা ।
জন্ম ও শিক্ষালাভ :- কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা মহকুমা হইতে ছয় মাইল দক্ষিণে খলিসামারী গ্রামে ১২৭২ সালের ১ লা ফাল্গুন মাসে শিব চতুর্দশী তিথিতে ( ইংরাজী ১৮৬৫ ) পঞ্চানন বর্মার জন্ম হয় । তাহার পিতার নাম ঘোসাল চন্দ্র সরকার এবং মাতার নাম চম্পলা দেবী । তিনি ছিলেন একজন মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের সন্তান। কোচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে তিনি স্নাতক হন। তিনি প্রথম রাজবংশী যিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।কর্মক্ষেত্র রূপে কোচবিহারকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করলেও পরিস্থিতির চাপে তাকে ১৯০১ সনে কোচবিহার ছেড়ে রংপুর জজকোর্টে ওকালতি ব্যবসা আরম্ভ করতে হয় । এইখানেই তার আগামী দিনের নবজাগরণের কর্মযজ্ঞের শুভ সূচনা হয় ।
ক্ষত্রিয় আন্দোলন:- তিনি উওরবঙ্গের অবহেলিত ও নির্যাতিত রাজবংশী সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষত্রিয় আন্দোলনের সুচনা করেছিলেন। ১৮৯১ সালের জনগননায় রাজবংশী ক্ষত্রিয়দের কোচ বলে ঘোষনা করলে তুমুল আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনকে গতিশীল করার জন্য আন্দোলনকারীরা আইনজীবী পঞ্চানন বর্মাকে নেতৃত্বদানের জন্য আমন্ত্রন জানায়। ১৯১০ সালে ১লা মে রংপুর নাট্য মন্দিরে পঞ্চানন বর্মার উপস্থিতিতে একটি ক্ষত্রিয় সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, রংপুর, দিনাজপুর জেলা থেকে প্রায় ৪০০ জন মানুষ যোগদান করেন। এই সভায় কতগুলি গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যথা --
a) ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য একটি ক্ষত্রিয় সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়।
b) রাজবংশী ও কোচদের পৃথক জাতী ঘোষনার মধ্যে দিয়ে জনগননার রিপোর্ট পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন শুরু করার কথা বলা হয়।
c) ক্ষত্রিয় ছাত্রদের জন্য ছাত্রাবাস নির্মানের কর্মসুচি গ্রহন করা হয়।
d) একটি ক্ষত্রিয় সমিতির ধনভান্ডার গঠনের চিন্তাভাবনা করা হয়।
উপবীত অনুষ্ঠান :- ক্ষত্রিয় সমাজের উন্নতির জন্য তিনি বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহন করেন। কাশী, নবদ্বীপ এর পন্ডিত মন্ডলীর সঙ্গে আলোচনা করে তিনি সকল রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষকে উপবীত ধারন করতে আহ্বান জানান। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলা ১৩১৯ সালে ২৭শে মাঘ রবিবার করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে উপবীত অনুষ্ঠানে অসংখ্য রাজবংশীরা অংশগ্রহন করেন। এই দিনটি ক্ষত্রিয় সমাজের কাছে বিশেষ ভাবে স্মরনীয়।
স্বীকৃতি :- পরবর্তী জনগননায় সরকার বাধ্য হয়ে রাজবংশী ও কোচদের পৃথক জাতী বলে ঘোষনা করে। এই ঘটনার পরিপেক্ষিতে কোচবিহারের মহরাজ পঞ্চানন বর্মাকে কোচবিহার থেকে বিতাড়িত করে। কিন্তু তার পরেও ক্ষত্রিয় আন্দোলনের গতি রোধ করা সম্ভব হয়নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে পঞ্চানন বর্মা ক্ষত্রিয়দের সেনাবাহিনীতে যোগদানের আহ্বান জানান। এমনকি ক্ষত্রিয়দের জন্য একটি পৃথক ব্যাটেলিয়ন গঠনের চেষ্ঠা করেন। যুদ্ধে সহযোগিতা করার জন্য ব্রিটিশ সরকার তাকে রায়সাহেব উপাধী দিয়ে সন্মানিত করেন।
ক্ষত্রিয়দের তপশিলি জাতিতে অন্তভুক্ত :- ১৯১৯ সালে ভারতীয় আইনসভা চালু হলে পঞ্চানন বর্মা আইনসভার সদস্য হন। ১৯৩২ সালে তপশিলি কারা তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। এই সুযোগে তিনি রাজবংশী ক্ষত্রিয়দের তপশিলি শ্রেনীতে অন্তভুক্ত করেন। এর ফলে ক্ষত্রিয় সম্প্রদায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার অধিকারী হয়।
মূল্যায়ন :- পঞ্চানন বর্মা কেবলমাত্র সমাজ সংস্কারক ছিলেন না , রাজবংশী সম্প্রদায়ের অগ্রগতির জন্য তিনি লেখালেখিও করেছেন। রংপুর সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় তিনি রাজবংশী ভাষায় গান , উপকথা, প্রবাদ , প্রবচন ইত্যাদিও প্রকাশ করতেন। নারী জাতির উপর নির্যাতন বন্ধ করতে তিনি '' ডাংধরী মাও'' নামক একটি কবিতাও প্রকাশ করেন। ১৯৩৪ সালে পঞ্চানন বর্মা কোলকাতায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের অগ্রগতিতে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য তিনি ' ঠাকুর ' নামে সর্বাধিক পরিচিতি পান।।
3. Briefly discuss the religious beliefs of the Rajbanshi people living in North Bengal .(উত্তরবঙ্গে বসবাসকারী রাজবংশীদের ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর। )
Answer:-রাজবংশী উত্তরবঙ্গের প্রধান নৃ-গোষ্ঠী। তারা বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির পূজা করে যেমন নদীর দেবী, বনের দেবী ইত্যাদি। রাজবংশী সম্প্রদায় ব্রাহ্মণ্য ঐতিহ্য দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শিব , নারায়ণ , বিষ্ণু , দুর্গা , কালী , লক্ষ্মী , সরস্বতী , মনসা প্রভৃতি ব্রাহ্মণ্য দেবদেবীদেরও অনুসরণ করে এবং পূজা করে। কীর্তন হল তাদের ধর্মীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন। তা সত্ত্বেও, তাদের কিছু স্বতন্ত্র দেব-দেবীর পাশাপাশি হুদুম দেও, বিষোহরি, গড়ম, মেচেনি খেলা, বাস খেলা, ধর্ম ঠাকুর, মাসান, গোরক্ষনাথ, সন্ন্যাসী, বুড়ি ইত্যাদির আরাধনা করার প্রচলন রয়েছে। বিভিন্ন অনিষ্ট থেকে রক্ষা করার জন্য এই দেব-দেবীদের প্রতিতারা তাদের ভক্তি প্রদর্শন করে।
১) বিষোহরী:- বিষোহরী হলেন সাপের দেবী। এই দেবীকে পূজা করার দুটি কারণ রয়েছে। রাজবংশীরা বিবাহের পর নবদম্পতি মায়ের কাছ থেকে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে। আরেকটি কারণ হল পরিবারের সকল সদস্যের পাশাপাশি গৃহপালিত পশুদের ভাল রাখতে রাজবংশীরা বিষহরী মায়ের আরাধনা করে। বিষোহরী দেবী দুই প্রকার। একটি হল কানি-বিষোহরী, যা সাধারণত বেশি পূজা করা হয়। অন্যজন হলেন গীতালি বিষহরী। বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় তাকে পূজা করা হয়।
২) বলরাম:- বলরামের একমাত্র অস্ত্র হল লাঙ্গল । যেহেতু বেশিভাগ রাজরংশীরা চাষবাস করে তাই লাঙ্গল কৃষকদের কাছে খুবই প্রয়োজনীয় একটি অস্ত্র । তাই কৃষকেরা এই দেবতার পূজা করে থাকে ।
৩) শিব আরাধনা:- ভগবান শিবের পূজা এখানে খুবই জনপ্রিয় । দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক শিব মন্দির রয়েছে । এই সমস্ত মন্দির রাজ্য কর্তৃক পরিচালিত । এখানে জনসাধারণ সারা বছর ধরেই পূজা করে এবং সেই সঙ্গে ভক্ত সমাগম হয়ে থাকে । শিবরাত্রির সময়ে বিশাল সমাবেশ হয় এই সময় দুর - দুরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরগুলিতে আসে । বিশেষ করে বাণেশ্বর ও জল্পেশ মন্দিরে ভক্তরা বেশি আসে ।
৪) গড়াম:- রাজবংশী সমাজের মধ্যে ইনিই সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রাম দেবতা। এটি একটি গ্রামের উপকণ্ঠে, সাধারণত একটি বাঁশঝাড়ের ভিতরে মন্দির স্থাপন করে অনেক দেবতা ও দেবীর স্থান দেওয়া হয়।এই মন্দিরগুলিতে কোন দেবতা বা দেবীর মূর্তি নেই, শুধুমাত্র কয়েকটি মাটির ঢিবি দেব-দেবীদের প্রতিনিধিত্ব করে। কখনও কখনও কিছু দেবীর মূর্তি পটে আঁকা হয় এবং মন্দিরের ছাদ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বা পাটের কাঠি দিয়ে মাটিতে খাড়া করে রাখা হয়। গরাম দেবতা তিস্তা বুড়ি (নদীর দেবী), কৃষ্ণ (বৈষ্ণব দেবতা), সন্ন্যাসী (শৈব দেবতা), সত্য পীর (রাজবংশীদের দ্বারা গৃহীত ইসলামিক দেবতা,) এর সাথে একত্রিত হয়। এখানে কালী এবং ভাদ্র কালী (শক্তি দেবতা)র পুজাও করা হয়। সমস্ত আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে এই দেবতার পূজা করা হয়। রাজবংশী গ্রামবাসীদের বিশ্বাস এই দেবীরা তাদের যে কোন ধরনের অশুভ দৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে পারেন।
৫) পীর:- রাজবংশী সম্প্রদায় পীর দেবতার পুজা করে থাকে। রাজবংশীরা বিশ্বাস করে যে পীর দেবতা যে কোন রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারেন। একটি বিশেষ দিনে বাশের আগাগোরা লাল কাপড় বেধে ও বাশের ডগায় একগোছা চুল বেধে ছোটছোট ছেলেরা নেচে বেরোয়। তার পর পীর দেবতার ভর করা হয়।
৬) হুদুমদেও পূজা:- প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে অন্য ভাবেও দেব আশীর্বাদ লাভ করা যায় । দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে খরায় শস্যের ক্ষতির আশঙ্কার হাত থেকে মুক্তি পেতে হুদুমদেও পূজা করা হয়ে থাকে । গ্রামের মহিলারা একটু দূরে নির্জন স্থানে একত্রিত হয় , অনুষ্ঠান করার সময় ওই স্থানে কোন পুরুষ মানুষের থাকার অনুমতি নেই ।
৭) বৈষ্ণব সম্প্রদায় :- এখানে বৈষ্ণবদের মধ্যে শঙ্করপন্থী এবং দামোদরপন্থী নামে দুটি সম্প্রদায় দেখা যায় যারা হল যথাক্রমে শঙ্কর এবং দামোদর দেবের শিষ্য । শঙ্করদের ছিলেন কায়স্থ । তিনি নামগান অর্থাৎ ভগবান হরির পবিত্র গান প্রচার করেন , পবিত্র ধর্মকথা আলোচনা করেন এবং ভক্তিভাবে ভাগবত পাঠ করেন । অন্যদিকে দামোদরপন্থীরা ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করতেন।
এছাড়াও রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষেরা গোরক্ষনাথ, মাষান , দুর্গা , ভন্ডানী , জগন্নাথ , সুবোচিনী, চরক ইত্যাদি দেবদেবীর পুজা করে থাকে।
উপসংহার :- রাজবংশীদের ধর্মীয় উৎসব গুলি তাদের মধ্যে মিলনের বার্তা বহন করে। উওরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায় পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধতার সুচনা ঘটায় এইসব রীতিনীতি গুলি।।
1. Write an essay on Quit India Movement in North Bengal.
১৯৪২ খ্রিস্টাবদের ৮ই আগস্ট জাতীয় কংগ্রেসের ডাকে সাড়া দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা কামী জনগণ ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু করেছিলো, তাতে উওরবঙ্গের মানুষও ব্যাপকভাবে অংশগ্রহন করেছিল। উওরবঙ্গের জলপাইগুড়ি মালদহ এবং দিনাজপুর জেলার সাধারণ মানুষ, স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে ভারতছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল। উওরবঙ্গের কৃষক , শ্রমিক, ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী সহ সকল শ্রেনীর মানুষ এই আন্দোলনে অংশগ্রহন করে।
◆ জলপাইগুড়িতে ভারতছাড়ো আন্দোলনের প্রভাব ;
জলপাইগুড়িতে এই আন্দোলনের সমর্থনে জলপাইগুড়ির পৌরকমিশনারগণ পদত্যাগ করলেন। ছাত্রেরা স্কুল-কলেজ ছেড়ে মিছিলে অংশ নেয়।। ৮ই আগষ্ট জলপাইগুড়িতে তারাপদ ব্যানার্জি ও উমা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল শুরু হয়। এই মিছিলের ফলে সমস্ত সরকারী কাজকর্ম স্তব্ধ হয়ে যায়।
◆ মালদা জেলায় ভারতছাড়ো আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া ;
মালদা জেলায় এই আন্দোলনের প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন—পিয়া নিবাসী, সুবোধকুমার মিশ্র। তাদেঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে জনতা রেল লাইন তুলে ফেলে, টেলিগ্রামের তার ও খুঁটি উপড়ে ফেলে, পোষ্ট অফিস ও রেলস্টেশনে আগুন লাগায়। ১৯৪২ সালের ৮ ঠা আগষ্ট সরকার সুবোধকুমার মিশ্রকে বন্দী করে। কিন্তু জনগনের আন্দোলনের প্রভাবে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
◆ দিনাজপুরে ভারতছাড়ো আন্দোলন ;
দিনাজপুরে এই আন্দোলন সম্পূর্ণ গণ-বিদ্রোহের রূপ নেয়। ১৩ই সেপ্টেম্বর রাতে কমপক্ষে ৮০০০ লোকের এক বিরাট গণ-বাহিনী গোপনে ডাঙ্গিঘাটে সমবেত হয় এবং সরোজ চ্যাটার্জির নেতৃত্বে পরদিন সকালে বালুরঘাট শহরকে ঘিরে ফেলে। অবরুদ্ধ শহরের মধ্যে তখন শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ। সাবরেজিষ্টি অফিস অগ্নি সংযোগ করা হয়। দেওয়ানী আদালত ও সমবায় ব্যাঙ্ক-ভবন ভস্মীভূত হয়। টেলিগ্রাফের তার ও যন্ত্রপাতি ছিড়ে ফেলে দেওয়া হয়। সারাদিন ধরে জনতা সম্পূর্ণ শহরটিকে তছনছ করে ফেলে। পোষ্ট অফিস, রেল স্টেশন, কৃষি অফিস, গোডাউন, এমন কি ইউনিয়ন বোর্ডের অফিস পর্যন্ত আক্রান্ত ও বিধ্বস্ত হয়। গাঁজা ও মদের দোকান চুরমার করা হয়। পরদিন সকালে বিরাট পুলিশবাহিনী শহরে প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীদের কবল থেকে শহর উদ্ধার করে। সর্বত্র সভা ও মিছিল বের করা নিষিদ্ধ করা হয়।
1. (Write in short the demographic pattern of North Bengal during Colonial rule .)ঔপনিবেশিক শাসনকালে উত্তরবঙ্গের জনসংখ্যার বিন্যাস সংক্ষেপে লেখ।
2. (Write an essay on the Brahma Samaj Movement in Princely State of Cooch Behar .) কোচবিহার রাজ্যের ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের উপর একটি প্রবন্ধ লেখ।
Answer :- মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের সঙ্গে মনীষী কেশব চন্দ্র সেনের পারিবারিক সংযোগ কোচবিহারের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা । সুনীতি দেবীর সঙ্গে মহারাজের বিবাহবন্ধন এই অঞ্চলের সমাজ ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এক পরিবর্তনের সূচনা করে।ভারত পথিক রাজা রামমোহন রায়ের প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্ম সমাজের প্রস্তুতিক্ষেত্র কোচবিহারের প্রতিবেশী জেলা রংপুর হলেও , কোচবিহারে ব্রাহ্মসমাজের ঢেউ এসেছিল প্রায় অর্ধশতাব্দী পরে । কোচবিহারে এই ধর্ম তেমন দানা বাঁধতে না পারলেও , সামাজিক , সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কোচবিহারের সর্বাঙ্গীণ উন্নতিতে ব্রাহ্মসমাজের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না ।
ব্রাহ্মসমাজের বিবর্তন :- ১৮২৮ খ্রীষ্টাব্দে মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন । এক্শ্বরবাদের প্রতিষ্ঠা , মনবতাবাদের প্রসার, সর্বধর্মসমন্বয়ের উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে একে একে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্রসেন , বীজয়কৃষ্ণ গোস্বামী প্রমুখ এই দলে যোগ দেন।
রামমোহন রায়ের মৃত্যর পরে বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কেশবচন্দ্রের তাঁর মতভেদ দেখা দেয় । ফলে কেশবচন্দ্র সেন ও তাঁর অনুগামীরা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন ব্রাহ্মসমাজ থেকে বহিষ্কৃত হন । এরপর তাঁরা ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ ' ( ১৮৬৬ খ্রিঃ ) নামে একটি পৃথক সংগঠন গড়ে তোলেন । এদিকে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন মূল সংগঠনটি আদি ব্রাহ্মসমাজ ' নামে পরিচিতি লাভ করে ।
পরবর্তীকালে কেশবচন্দ্র সেন ব্রাহ্মসমাজের রীতি ভেঙে তার ১৪ বছরের নাবালিকা কন্যা সুনীতি দেবীকে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়নের সঙ্গে বিবাহ দিলে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদিকে সাধারন ব্রাহ্মসমাজ ও অন্যদিকে কেশবচন্দ্রসেনের নেতৃত্বে নববিধান ব্রাহ্মসমাজ গঠিত হয়। এভাবেই কোচবিহারের সঙ্গে ব্রাহ্মসমাজের যোগসুত্র গঠিত হয়।
ব্রাহ্ম আন্দোলনের প্রভাব :-
প্রকৃতপক্ষে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের বিবাহের সময় থেকে এই রাজ্যে ব্রাহ্ম সমাজের প্রত্যক্ষ প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ।এই রাজ্যের কেশব অনুগামীরাও নববিধান ব্রাহ্মসমাজভুক্ত হয়। সুনীতি দেবীর বিয়ের পর রাজবাড়িতে ব্রাহ্মাধর্মের উপাসনা ও প্রার্থনা হতে থাকে । রাজা ও রাণীর চেষ্টার ফলে নববিধান ব্রাহ্মসমাজ রাষ্ট্রীয় ধর্মরূপে পরিগণিত হয় । জেনকিন্স স্কুলে প্রতি সন্ধ্যাবেলা ব্রহ্ম উপাসনা চালু করা হয় ।
কেশবচন্দ্র সেনের মৃত্যুর দু'বছর পরে ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দের ১৫ ই আগষ্ট রাজবাড়ির পৃষ্ঠপোষকতায় নববিধান ব্রাহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় ।উক্ত নববিধান ব্রাহ্মমন্দিরটি ছিল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ ব্রাহ্মমন্দির । মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ নববিধান সমাজভুক্ত হলেও এই ধর্মেরই অপর শাখা ' সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ ' মহারাজের কৃপালাভ থেকে বঞ্চিত হয়নি এবং সেই সঙ্গে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ তাঁর পূর্বপুরুষদের প্রচলিত বিভিন্ন দেবসেবা নিষ্ঠা সহকারে পালন করে গেছেন ।
সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের আচার্য ছিলেন আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল । মহামনীষী ব্রজেন্দ্রনাথ শীলকে ১৮৯৬ খ্রীষ্টাব্দে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ কোচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করেন ।
কোচবিহার রাজ্যকে কুসংস্কার , গোঁড়ামি ইত্যাদি থেকে মুক্ত করতে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণও ব্রাহ্মসমাজের ঘোষিত নীতি অনুসারে শিক্ষার ব্যাপারে যথেষ্ট উদ্যোগী হন । তিনি রাজ্যের সর্বত্র বিভিন্ন স্তরের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ছাত্রদের মানসিক বিকাশের জন্য বিদ্যালয়গুলিতে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ , মহারাণী সুনীতি দেবী ছাড়াও কোচবিহার রাজ্যে ব্রাহ্ম আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন রাজভ্রাতা কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ ও তাঁর স্ত্রী কেশব কন্যা সাবিত্রী দেবী এবং মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের পুত্র ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণ। ব্রাহ্মরা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিকাশের উদ্দেশ্যে ' সুকথা ' নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন । ব্রাহ্মধর্মের আচার অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকতো এই মাসিক পত্রিকাটিতে ।
উপসংহার:-
ব্রাহ্ম ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন প্রকার সামাজিক সংস্কারের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তার সুফলগুলি বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ভোগ করেছেন সমাজের উচ্চশ্রেণীর লোকেরা ।কোচবিহারের খুব সামান্য সংখ্যক জনসাধারণ ই ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেছিলেন । নগর ভিত্তিক আন্দোলন সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হয় ।ব্রাহ্ম আন্দোলন কোচবিহার রাজ্যের জনসাধারণের অন্তরকে স্পর্শ করতে না পারলেও এই আন্দোলনের গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না । কারণ ব্রাহ্ম আন্দোলনকারীরাই তাঁদের অক্লান্ত চেষ্টার ফলে সমাজ সংস্কারের দ্বারা কুসংস্কারের বেড়াজাল থেকে এই রাজ্যকে মুক্ত করার অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে আধুনিকতার বিকাশ ঘটাতে সচেষ্ঠ হয়েছিলেন।
No comments:
Post a Comment