DSE:- 4
1. Discuss the process of merger of the Princely State of Cooch Behar with the State of West Bengal.
Answer :- ১৯৪৭ সনের ১৫ই আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে। লর্ড মাউন্ট- ব্যাটনের সুপারিশ অনুযায়ী বৃটিশ পার্লামেন্টে যে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাশ হয় তাহার ৮নং ধারা অনুযায়ী দেশীয় রাজাগুলি, ভারত অথবা পাকিস্তান কোন্ রাষ্ট্রে যোগদান করবে তা নিজেরাই স্থির করতে পারবে । এই বিষয়ে রাজার মত-ই চূড়ান্ত, প্রজাগণের কিছু বলবার অধিকার নেই।
এই বিষয় নিয়ে কোচবিহারে বিভিন্ন দল পরস্পর বিরোধী চেষ্টা করেছিল । একদল কোচবিহার ভারতের সাথে যুক্ত হোক, দ্বিতীয় দল কোচবিহার পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হোক বলে মত প্রকাশ করেন । কোচবিহার প্রথমে ভারতের সঙ্গে সংযুক্তির পর আবার পশ্চিমবঙ্গ অথবা আসামের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে এই বিষয়ে আন্দোলন চলতে থাকে। এই সব মত বিরোধের জন্য কোচবিহারের বুকে নূতন এক সমস্যার উদ্ভব হইল। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত দেশীয় রাজাদের নবগঠিত ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগদান করার জন্য বিশেষ অনুবোধ জানান। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে কোচবিহার রাজ্যের মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণ ভূপ বাহাদুর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একান্ত অনুরোধে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এক Coochbehar Merger Agreement চুক্তি স্বাক্ষর করে কোচবিহার রাজ্যটিকে ১৯৪৯ সনে ২৮শে আগস্ট তারিখে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে রাখার কথা ঘোষণা করেন। এই ইতিহাস-প্রসিদ্ধ দেশীয় রাজাটিকে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্পণ করেন ১৯৪৯ সনের ১২ই সেপ্টেম্বর। চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয় ভারতের গভর্ণর জেনারেলের পক্ষে ভারত সরকারের মিনিস্ট্রী অব স্টেটের উপদেষ্টা ডি. পি. মেনন ও কোচবিহার মহারাজার মধ্যে। এই চুক্তিতে ৯টি ধারা সংযোজিত হয়।
ভারত সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন দফায় আলোচনা অনুসারে প্রথমে কোচবিহার কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসাবে স্বীকৃতি পায়। পরে তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় কোচবিহার রাজ্যটিকে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেন। এই সময়ে কংগ্রেস দলের পক্ষ হইতে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন স্থানে মিটিং মিছিল আরম্ভ হয় এবং এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে প্রজাহিতসাধনী নামে স্থানীয় একটি দল ব্যাপক আন্দোলন আরম্ভ করে। তৎকালীন পত্র-পত্রিকাগুলিতেও সংযুক্তির বিষয়ে জোরালো মত প্রকাশ করা হয়। ১৯৫০ সালের জানুয়ারীতেই রাজ্যসরকার-'The Cooch Behar (Assimilation of State Laws) Act-1950, পাশ করেন এবং কোচসরকারের কয়েকটি আইনকে রাজ্যের আইনবিধির অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়। ১৯৬০ সালের ৪ঠা মার্চ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্রবিভাগের ঘোষণাক্রমে জলপাইগুড়ি বিভাগ পুনর্গঠিত হয় এবং কোচবিহার এই বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হয়।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির পুনর্গঠন:-
স্বাধীনতার মাশুল হিসেবে প্রাকৃতিক-সীমানাশ্রিত উত্তরবঙ্গ থেকে রংপুর, বগুড়া, পাবনা ও রাজশাহী এই চারটি পূর্ণ জেলাই শুধু পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হ'ল না, সেই সঙ্গে অবশিষ্ট ৫টি উত্তরবঙ্গীয় জেলার অঙ্গচ্ছেদও করা হলো। রাডক্লিফ' সাহেবের উপর পড়ে ছিল এই সীমানা-নির্ধায়ণের ব্যাপারটা এবং তিনি তার জটিল ও দুর্বোধ্য পদ্ধতিতে বেভাবে জেলাগুলিকে ভাগ করেছেন, তা মূলতঃ একতরফা শাসকীয় সিদ্ধান্ত। উত্তরবঙ্গের প্রত্যেকটি জেলারই বিভাজন হওয়ায় জেলার সীমানার পুননির্ধারণ এবং প্রশাসনিক পুনর্বিন্তাস প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
No comments:
Post a Comment