Monday, December 25, 2023

North Bengal

 

DSE-2

Marks:-15

1. Discuss the role of Maharaja Nripendra Narayan for modernizing the Cooch Behar state .[কোচবিহার রাজ্যের আধুনিকীকরণে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের ভূমিকা আলোচনা কর।]

Answer:-কোচবিহার  রাজবংশের  ইতিহাসে যার আমলে কোচবিহার রাজ্যের খ্যাতি ও গৌরব চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল ,  সমাজব্যবস্থা ও শিক্ষাব্যবস্থায় যথার্থ আধুনিকতার সূচনা ঘটেছিল তিনি হলেন মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ।  তার রাজত্বকাল ছিল  কোচবিহারের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী অধ্যায় ।  তিনি ছিলেন একজন আধুনিক ও পরোপকারী রাজা।  নৃপেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালে কোচবিহার একটি আধুনিক রাজ্যে পরিণত হয়।  কোচবিহারের মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।  শিক্ষা বিস্তারের  ইতিহাসে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালকে  নবজাগরণের যুগ 'এবং স্বর্ণযুগ' হিসেবে গণ্য করা হয়।  মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ বিভিন্নভাবে কোচবিহারের উন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন।  তিনি গণশিক্ষার প্রসার,   নারী শিক্ষার বিস্তার, উচ্চশিক্ষার বিকাশ , সাহিত্যের বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেছিলেন। তিনি শিল্প ও স্থাপত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এক্ষেত্রে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের রানী মহারানী সুনীতি দেবীর ভূমিকাও অপরিসীম।

মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ:-

মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণকে আধুনিক কোচবিহারের স্থপতি হিসেবে গণ্য করা হয়।  তিনি ১৮৬২ সালের ৪ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মাহারাজা নরেন্দ্র নারায়ণ ১৮৬৩ সালের ৬ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।  তখন নৃপেন্দ্র নারায়ণের বয়স মাত্র দশ মাস।  যেহেতু তিনি তখনও শিশু ছিলেন ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল কর্তৃক নিযুক্ত কমিশনারের কাছে প্রশাসন হস্তান্তর করা হয়েছিল।  নৃপেন্দ্র নারায়ণ কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন।  1878 সালে নৃপেন্দ্র নারায়ণ কেশব চন্দ্র সেনের কন্যা সুনীতি দেবীকে বিয়ে করেন। সুনীতি দেবীর বয়স তখন মাত্র চৌদ্দ বছর।  মহারাজ নৃপেন্দ্র নারায়ণ 18 সেপ্টেম্বর 1911 সালে তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোচবিহার রাজ্য শাসন করেছিলেন।  মহারাজা নৃপ্রেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালে কোচবিহার একটি নতুন দৃষ্টান্তে পরিণত হয়।  কোচবিহারের আধুনিকীকরণের পিছনে প্রধান প্রেরণা ছিলেন মহারানী সুনীতি দেবী।  মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ কোচবিহারের উন্নতির জন্য অনেক উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। 

শিক্ষার বিকাশ:-

 মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন কোচবিহারের প্রথম শাসক যিনি ইংরেজি শিক্ষা লাভ করেন।  রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশব চন্দ্র সেন প্রমুখের মতো তিনিও আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।  তিনি মনে করতেন ,  শিক্ষা  জাতির মেরুদন্ড। তিনি কোচবিহারে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন ।

১) গণশিক্ষার প্রসার:-

মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের শাসনাকালে গণশিক্ষার প্রসার ঘটেছিল। তিনি ধর্মীয় সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত ছিলেন।  তিনি সকল ধর্মের প্রতি উদার মনোভাব গ্রহন করেন।  তার উদার মনোভাবের ফলে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমানরাও আধুনিক শিক্ষার প্রতি উদ্বিগ্ন ছিল।  1891 সালে মাথাভাঙ্গা, মেখলিগঞ্জ এবং দিনহাটার প্রাথমিক স্কুলগুলিকে মাধ্যমিক স্কুলে উন্নীত করা হয়।  এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে বিখ্যাত সমাজ সংস্কারক ঠাকুর পঞ্চান বর্মা মাথাভাঙ্গা থেকে এম.ই. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। 1899-1900 সালে কোচবিহার শহরে একটি ফার্সি স্কুল এবং মুসলমানদের সুবিধার জন্য একটি মক্তাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  

২) নারী শিক্ষার অগ্রগতি: 

কোচবিহারের রাজপরিবারে প্রথমে নারী শিক্ষা শুরু হয়।  মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের শাসনামলে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছিল।  1875 সালে কোচবিহারে 23টি মহিলা স্কুল ছিল যা থেকে আমরা  নারী শিক্ষার   অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পারি। এতে সক্রিয় অংশ নেন মহারানী সুনীতি দেবী।  1881-82 সালে 19 জন ছাত্রীর মধ্যে 17 জন প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল।  1888-89 সালে সরল শশী দাস এবং হেমাঙ্গিনী দাসী উচ্চ প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন।   1886 সালে একটি মহিলা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যার নাম ছিল 'রাজকুমার গার্লস স্কুল'।

উচ্চশিক্ষার প্রসার:-

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসারই নয়, মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালে কোচবিহারে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছিল।  মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ কোচবিহারের ছাত্রদের জন্য উচ্চ শিক্ষার প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন।তার  ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ 1888 সালে কোচবিহারে প্রথম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।  কলেজের নাম ছিল ভিক্টোরিয়া কলেজ।  বর্তমানে এটি আচার্য ব্রজেন্দ্র নাথ শিল কলেজ নামে পরিচিত।  কলেজটি শুধু উত্তরবঙ্গেই নয়, সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে যথেষ্ঠ সুনাম অর্জন করেছে। "রাজবংশী জাতির জনক ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা এবং বিশ্ববিখ্যাত ভাওয়াইয়া গায়ক আব্বাসউদ্দিন আহমেদ এই প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি লাভ করেন। 1881 সালে সুনিতী অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর নামকরণ করা হয়েছে মহারানী সুনীতি দেবীর নামে, যিনি এই স্কুল প্রতিষ্ঠার পিছনে মূল ভুমিকা পালন করেছিলেন।  

2. Evaluate the activities of Rai Saheb Thakur Panchanan Barma with special reference to his social reformation . (রায় সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার সামাজিক সংস্কারের বিশেষ উল্লেখ সহ তার কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করুন।)

Answer :- পঞ্চানন বর্মা ছিলেন কোচবিহারের রাজবংশী নেতা , রাজনীতিবিদ , আইনজীবি ও সমাজসংস্কারক। তিনি ঠাকুর পঞ্চানন , রায় সাহেব , ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য , তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি কোচবিহার রাজ্যে রাজবংশী জোতদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, তবে তাঁর সাহিত্য ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রধান কেন্দ্র ছিল রংপুর।ঔপনিবেশিক শাসনকালে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান বুদ্ধিজীবী ছিলেন রায়সাহেব পঞ্চানন বর্মা । 

জন্ম ও শিক্ষালাভ :- কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা মহকুমা হইতে ছয় মাইল দক্ষিণে খলিসামারী গ্রামে ১২৭২ সালের ১ লা ফাল্গুন মাসে শিব চতুর্দশী তিথিতে ( ইংরাজী ১৮৬৫ )  পঞ্চানন বর্মার জন্ম হয় ।  তাহার পিতার নাম ঘোসাল চন্দ্র সরকার এবং মাতার নাম চম্পলা দেবী ।  তিনি ছিলেন একজন  মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের সন্তান। কোচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে তিনি স্নাতক হন। তিনি প্রথম রাজবংশী যিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।কর্মক্ষেত্র রূপে কোচবিহারকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করলেও পরিস্থিতির চাপে তাকে ১৯০১ সনে কোচবিহার ছেড়ে রংপুর জজকোর্টে ওকালতি ব্যবসা আরম্ভ করতে হয় । এইখানেই তার আগামী দিনের নবজাগরণের কর্মযজ্ঞের শুভ সূচনা হয় ।

ক্ষত্রিয় আন্দোলন:- তিনি উওরবঙ্গের অবহেলিত ও নির্যাতিত রাজবংশী সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষত্রিয় আন্দোলনের সুচনা করেছিলেন। ১৮৯১ সালের জনগননায় রাজবংশী ক্ষত্রিয়দের কোচ বলে ঘোষনা করলে তুমুল আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনকে গতিশীল করার জন্য আন্দোলনকারীরা আইনজীবী পঞ্চানন বর্মাকে নেতৃত্বদানের জন্য আমন্ত্রন জানায়। ১৯১০ সালে ১লা মে রংপুর নাট্য মন্দিরে পঞ্চানন বর্মার উপস্থিতিতে একটি ক্ষত্রিয় সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, রংপুর, দিনাজপুর জেলা থেকে প্রায় ৪০০ জন মানুষ যোগদান করেন। এই সভায় কতগুলি গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যথা --

a) ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য একটি ক্ষত্রিয় সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়।

b) রাজবংশী ও কোচদের পৃথক জাতী ঘোষনার মধ্যে দিয়ে জনগননার রিপোর্ট পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন শুরু করার কথা বলা হয়।

c) ক্ষত্রিয় ছাত্রদের জন্য ছাত্রাবাস নির্মানের কর্মসুচি গ্রহন করা হয়।

d) একটি ক্ষত্রিয় সমিতির ধনভান্ডার গঠনের চিন্তাভাবনা করা হয়।

উপবীত অনুষ্ঠান :- ক্ষত্রিয় সমাজের উন্নতির জন্য তিনি বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহন করেন। কাশী, নবদ্বীপ এর পন্ডিত মন্ডলীর সঙ্গে আলোচনা করে তিনি সকল রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষকে উপবীত ধারন করতে আহ্বান জানান। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলা ১৩১৯ সালে ২৭শে মাঘ রবিবার করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে উপবীত অনুষ্ঠানে অসংখ্য রাজবংশীরা অংশগ্রহন করেন। এই দিনটি ক্ষত্রিয় সমাজের কাছে বিশেষ ভাবে স্মরনীয়।


স্বীকৃতি :- পরবর্তী জনগননায় সরকার বাধ্য হয়ে রাজবংশী ও কোচদের পৃথক জাতী বলে ঘোষনা করে। এই ঘটনার পরিপেক্ষিতে কোচবিহারের মহরাজ পঞ্চানন বর্মাকে কোচবিহার থেকে বিতাড়িত করে। কিন্তু তার পরেও ক্ষত্রিয় আন্দোলনের গতি রোধ করা সম্ভব হয়নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে পঞ্চানন বর্মা ক্ষত্রিয়দের সেনাবাহিনীতে যোগদানের আহ্বান জানান। এমনকি ক্ষত্রিয়দের জন্য একটি পৃথক ব্যাটেলিয়ন গঠনের চেষ্ঠা করেন। যুদ্ধে সহযোগিতা করার জন্য ব্রিটিশ সরকার তাকে রায়সাহেব উপাধী দিয়ে সন্মানিত করেন।

ক্ষত্রিয়দের তপশিলি জাতিতে অন্তভুক্ত :- ১৯১৯ সালে ভারতীয় আইনসভা চালু হলে পঞ্চানন বর্মা আইনসভার সদস্য হন। ১৯৩২ সালে তপশিলি কারা তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। এই সুযোগে তিনি রাজবংশী ক্ষত্রিয়দের তপশিলি শ্রেনীতে অন্তভুক্ত করেন। এর ফলে ক্ষত্রিয় সম্প্রদায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার অধিকারী  হয়।

মূল্যায়ন :- পঞ্চানন বর্মা কেবলমাত্র সমাজ সংস্কারক ছিলেন না , রাজবংশী সম্প্রদায়ের অগ্রগতির জন্য তিনি লেখালেখিও করেছেন। রংপুর সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় তিনি রাজবংশী ভাষায় গান , উপকথা, প্রবাদ , প্রবচন ইত্যাদিও প্রকাশ করতেন। নারী জাতির উপর নির্যাতন বন্ধ করতে তিনি '' ডাংধরী মাও'' নামক একটি কবিতাও প্রকাশ করেন। ১৯৩৪ সালে পঞ্চানন বর্মা কোলকাতায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের অগ্রগতিতে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের  জন্য তিনি  ' ঠাকুর ' নামে সর্বাধিক পরিচিতি পান।।

3. Briefly discuss the religious beliefs of the Rajbanshi people living in North Bengal .(উত্তরবঙ্গে বসবাসকারী রাজবংশীদের ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর। )

Answer:-রাজবংশী উত্তরবঙ্গের প্রধান নৃ-গোষ্ঠী।  তারা বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির পূজা করে যেমন নদীর দেবী, বনের দেবী ইত্যাদি।  রাজবংশী সম্প্রদায় ব্রাহ্মণ্য ঐতিহ্য দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শিব , নারায়ণ , বিষ্ণু , দুর্গা , কালী , লক্ষ্মী , সরস্বতী , মনসা প্রভৃতি ব্রাহ্মণ্য দেবদেবীদেরও অনুসরণ করে এবং পূজা করে। কীর্তন হল তাদের ধর্মীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন।  তা সত্ত্বেও, তাদের কিছু স্বতন্ত্র দেব-দেবীর পাশাপাশি হুদুম দেও, বিষোহরি, গড়ম, মেচেনি খেলা, বাস খেলা, ধর্ম ঠাকুর, মাসান, গোরক্ষনাথ, সন্ন্যাসী, বুড়ি  ইত্যাদির আরাধনা করার প্রচলন রয়েছে।   বিভিন্ন অনিষ্ট থেকে রক্ষা করার জন্য এই দেব-দেবীদের প্রতিতারা  তাদের ভক্তি প্রদর্শন করে।

১) বিষোহরী:- বিষোহরী  হলেন সাপের দেবী।  এই দেবীকে পূজা করার দুটি কারণ রয়েছে।  রাজবংশীরা বিবাহের পর নবদম্পতি মায়ের  কাছ থেকে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে।  আরেকটি কারণ হল পরিবারের সকল সদস্যের পাশাপাশি গৃহপালিত পশুদের ভাল রাখতে রাজবংশীরা বিষহরী মায়ের আরাধনা করে। বিষোহরী দেবী  দুই প্রকার।  একটি হল কানি-বিষোহরী, যা সাধারণত বেশি পূজা করা হয়।  অন্যজন হলেন গীতালি বিষহরী।  বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় তাকে পূজা করা হয়।  

২) বলরাম:- বলরামের একমাত্র অস্ত্র হল লাঙ্গল । যেহেতু বেশিভাগ রাজরংশীরা চাষবাস করে তাই  লাঙ্গল কৃষকদের কাছে খুবই প্রয়োজনীয় একটি অস্ত্র । তাই কৃষকেরা এই দেবতার পূজা করে থাকে । 

৩) শিব আরাধনা:- ভগবান শিবের পূজা এখানে খুবই জনপ্রিয় । দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক শিব মন্দির রয়েছে । এই সমস্ত মন্দির রাজ্য কর্তৃক পরিচালিত । এখানে জনসাধারণ সারা বছর ধরেই পূজা করে এবং সেই সঙ্গে ভক্ত সমাগম হয়ে থাকে । শিবরাত্রির সময়ে বিশাল সমাবেশ হয় এই সময় দুর - দুরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরগুলিতে আসে । বিশেষ করে বাণেশ্বর ও জল্পেশ  মন্দিরে ভক্তরা  বেশি আসে ।

৪) গড়াম:- রাজবংশী সমাজের মধ্যে ইনিই সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রাম দেবতা।  এটি একটি গ্রামের উপকণ্ঠে, সাধারণত একটি বাঁশঝাড়ের ভিতরে মন্দির স্থাপন করে অনেক দেবতা ও দেবীর স্থান দেওয়া হয়।এই মন্দিরগুলিতে কোন দেবতা বা দেবীর মূর্তি নেই, শুধুমাত্র কয়েকটি মাটির ঢিবি দেব-দেবীদের প্রতিনিধিত্ব করে।  কখনও কখনও কিছু দেবীর মূর্তি পটে আঁকা হয় এবং মন্দিরের ছাদ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বা পাটের কাঠি দিয়ে মাটিতে খাড়া করে রাখা হয়।  গরাম দেবতা তিস্তা বুড়ি (নদীর দেবী), কৃষ্ণ (বৈষ্ণব দেবতা), সন্ন্যাসী (শৈব দেবতা), সত্য পীর (রাজবংশীদের দ্বারা গৃহীত ইসলামিক দেবতা,) এর সাথে একত্রিত হয়। এখানে কালী এবং ভাদ্র কালী (শক্তি দেবতা)র পুজাও করা হয়।  সমস্ত আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে এই দেবতার পূজা করা হয়।  রাজবংশী গ্রামবাসীদের বিশ্বাস এই দেবীরা তাদের যে কোন ধরনের অশুভ দৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে পারেন।

৫) পীর:- রাজবংশী সম্প্রদায় পীর দেবতার পুজা করে থাকে। রাজবংশীরা বিশ্বাস করে যে পীর দেবতা যে কোন রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারেন। একটি বিশেষ দিনে বাশের আগাগোরা লাল কাপড় বেধে ও বাশের ডগায় একগোছা চুল বেধে ছোটছোট ছেলেরা নেচে বেরোয়। তার পর পীর দেবতার ভর করা হয়।

৬) হুদুমদেও পূজা:- প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে অন্য ভাবেও দেব আশীর্বাদ লাভ করা যায় । দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে খরায় শস্যের ক্ষতির আশঙ্কার হাত থেকে মুক্তি পেতে হুদুমদেও পূজা করা হয়ে থাকে । গ্রামের মহিলারা একটু দূরে নির্জন স্থানে একত্রিত হয় , অনুষ্ঠান করার সময় ওই স্থানে কোন পুরুষ মানুষের থাকার অনুমতি নেই ।

৭) বৈষ্ণব সম্প্রদায় :- এখানে বৈষ্ণবদের মধ্যে শঙ্করপন্থী এবং দামোদরপন্থী নামে দুটি সম্প্রদায় দেখা যায় যারা হল যথাক্রমে শঙ্কর এবং দামোদর দেবের শিষ্য ।  শঙ্করদের ছিলেন কায়স্থ । তিনি নামগান অর্থাৎ ভগবান হরির পবিত্র গান প্রচার করেন , পবিত্র ধর্মকথা আলোচনা করেন এবং ভক্তিভাবে ভাগবত পাঠ করেন । অন্যদিকে দামোদরপন্থীরা ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করতেন।

এছাড়াও রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষেরা গোরক্ষনাথ, মাষান , দুর্গা , ভন্ডানী , জগন্নাথ , সুবোচিনী, চরক ইত্যাদি দেবদেবীর পুজা করে থাকে। 

উপসংহার :- রাজবংশীদের ধর্মীয় উৎসব গুলি তাদের মধ্যে মিলনের বার্তা বহন করে। উওরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায় পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধতার সুচনা ঘটায় এইসব রীতিনীতি গুলি।।

1. Write an essay on Quit India Movement in North Bengal. 

১৯৪২ খ্রিস্টাবদের ৮ই আগস্ট জাতীয় কংগ্রেসের ডাকে  সাড়া দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা কামী জনগণ  ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু করেছিলো, তাতে উওরবঙ্গের মানুষও ব্যাপকভাবে অংশগ্রহন করেছিল। উওরবঙ্গের জলপাইগুড়ি মালদহ এবং দিনাজপুর জেলার সাধারণ মানুষ, স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে ভারতছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল।  উওরবঙ্গের কৃষক , শ্রমিক, ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী সহ সকল শ্রেনীর মানুষ এই আন্দোলনে অংশগ্রহন করে।

◆ জলপাইগুড়িতে ভারতছাড়ো আন্দোলনের প্রভাব ; 

জলপাইগুড়িতে এই আন্দোলনের সমর্থনে জলপাইগুড়ির পৌরকমিশনারগণ পদত্যাগ করলেন। ছাত্রেরা স্কুল-কলেজ ছেড়ে মিছিলে অংশ নেয়।। ৮ই আগষ্ট জলপাইগুড়িতে তারাপদ ব্যানার্জি ও উমা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল শুরু হয়। এই মিছিলের ফলে সমস্ত সরকারী কাজকর্ম স্তব্ধ হয়ে যায়।

◆ মালদা জেলায় ভারতছাড়ো আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া ; 

মালদা জেলায় এই আন্দোলনের প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন—পিয়া নিবাসী, সুবোধকুমার মিশ্র। তাদেঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে জনতা রেল লাইন তুলে ফেলে, টেলিগ্রামের তার ও খুঁটি উপড়ে ফেলে, পোষ্ট অফিস ও রেলস্টেশনে আগুন লাগায়। ১৯৪২ সালের ৮ ঠা আগষ্ট সরকার সুবোধকুমার মিশ্রকে বন্দী করে।  কিন্তু জনগনের আন্দোলনের প্রভাবে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

◆ দিনাজপুরে ভারতছাড়ো আন্দোলন ; 

দিনাজপুরে এই আন্দোলন সম্পূর্ণ গণ-বিদ্রোহের রূপ নেয়। ১৩ই সেপ্টেম্বর রাতে কমপক্ষে ৮০০০ লোকের এক বিরাট গণ-বাহিনী গোপনে ডাঙ্গিঘাটে সমবেত হয় এবং সরোজ চ্যাটার্জির নেতৃত্বে পরদিন সকালে বালুরঘাট শহরকে ঘিরে ফেলে। অবরুদ্ধ শহরের মধ্যে তখন শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ। সাবরেজিষ্টি অফিস অগ্নি সংযোগ করা হয়। দেওয়ানী আদালত ও সমবায় ব্যাঙ্ক-ভবন ভস্মীভূত হয়। টেলিগ্রাফের তার ও যন্ত্রপাতি ছিড়ে ফেলে দেওয়া হয়। সারাদিন ধরে জনতা সম্পূর্ণ শহরটিকে তছনছ করে ফেলে। পোষ্ট অফিস, রেল স্টেশন, কৃষি অফিস, গোডাউন, এমন কি ইউনিয়ন বোর্ডের অফিস পর্যন্ত আক্রান্ত ও বিধ্বস্ত হয়। গাঁজা ও মদের দোকান চুরমার করা হয়। পরদিন সকালে বিরাট পুলিশবাহিনী  শহরে প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীদের কবল থেকে শহর উদ্ধার করে। সর্বত্র সভা ও মিছিল বের করা নিষিদ্ধ করা হয়। 

1. (Write in short the demographic pattern of North Bengal during Colonial rule .)ঔপনিবেশিক শাসনকালে উত্তরবঙ্গের জনসংখ্যার বিন্যাস সংক্ষেপে লেখ।

2. (Write an essay on the Brahma Samaj Movement in Princely State of Cooch Behar .)  কোচবিহার রাজ্যের ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের উপর একটি প্রবন্ধ লেখ।  

Answer :-  মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের সঙ্গে মনীষী কেশব চন্দ্র সেনের পারিবারিক সংযোগ কোচবিহারের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা । সুনীতি দেবীর সঙ্গে মহারাজের বিবাহবন্ধন এই অঞ্চলের সমাজ ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এক পরিবর্তনের সূচনা করে।ভারত পথিক রাজা রামমোহন রায়ের প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্ম সমাজের প্রস্তুতিক্ষেত্র কোচবিহারের প্রতিবেশী জেলা রংপুর হলেও , কোচবিহারে ব্রাহ্মসমাজের ঢেউ এসেছিল প্রায় অর্ধশতাব্দী পরে । কোচবিহারে এই ধর্ম তেমন দানা বাঁধতে না পারলেও , সামাজিক , সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কোচবিহারের সর্বাঙ্গীণ উন্নতিতে ব্রাহ্মসমাজের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না । 

ব্রাহ্মসমাজের বিবর্তন :- ১৮২৮ খ্রীষ্টাব্দে মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন । এক্শ্বরবাদের প্রতিষ্ঠা , মনবতাবাদের প্রসার, সর্বধর্মসমন্বয়ের উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে একে একে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্রসেন , বীজয়কৃষ্ণ গোস্বামী প্রমুখ এই দলে যোগ দেন।

রামমোহন রায়ের মৃত্যর পরে  বিভিন্ন  বিষয়কে কেন্দ্র করে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কেশবচন্দ্রের তাঁর মতভেদ দেখা দেয় । ফলে কেশবচন্দ্র সেন ও তাঁর অনুগামীরা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন ব্রাহ্মসমাজ থেকে বহিষ্কৃত হন । এরপর তাঁরা ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ ' ( ১৮৬৬ খ্রিঃ ) নামে একটি পৃথক সংগঠন গড়ে তোলেন । এদিকে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন মূল সংগঠনটি আদি ব্রাহ্মসমাজ ' নামে পরিচিতি লাভ করে । 

পরবর্তীকালে কেশবচন্দ্র সেন ব্রাহ্মসমাজের রীতি ভেঙে তার ১৪ বছরের নাবালিকা কন্যা সুনীতি দেবীকে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়নের সঙ্গে বিবাহ দিলে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদিকে সাধারন ব্রাহ্মসমাজ ও অন্যদিকে কেশবচন্দ্রসেনের নেতৃত্বে নববিধান ব্রাহ্মসমাজ গঠিত হয়। এভাবেই কোচবিহারের সঙ্গে ব্রাহ্মসমাজের যোগসুত্র গঠিত হয়।

ব্রাহ্ম  আন্দোলনের প্রভাব :-

প্রকৃতপক্ষে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের বিবাহের সময় থেকে এই রাজ্যে ব্রাহ্ম সমাজের প্রত্যক্ষ প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ।এই রাজ্যের কেশব অনুগামীরাও নববিধান ব্রাহ্মসমাজভুক্ত হয়। সুনীতি দেবীর বিয়ের পর রাজবাড়িতে ব্রাহ্মাধর্মের উপাসনা ও প্রার্থনা হতে থাকে । রাজা ও রাণীর চেষ্টার ফলে নববিধান ব্রাহ্মসমাজ রাষ্ট্রীয় ধর্মরূপে পরিগণিত হয় । জেনকিন্‌স স্কুলে প্রতি সন্ধ্যাবেলা ব্রহ্ম উপাসনা চালু করা হয় । 

কেশবচন্দ্র সেনের মৃত্যুর  দু'বছর পরে ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দের ১৫ ই আগষ্ট  রাজবাড়ির পৃষ্ঠপোষকতায় নববিধান ব্রাহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় ।উক্ত নববিধান ব্রাহ্মমন্দিরটি ছিল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ ব্রাহ্মমন্দির । মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ নববিধান সমাজভুক্ত হলেও এই ধর্মেরই অপর শাখা ' সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ ' মহারাজের কৃপালাভ থেকে বঞ্চিত হয়নি এবং সেই সঙ্গে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ তাঁর পূর্বপুরুষদের প্রচলিত বিভিন্ন দেবসেবা নিষ্ঠা সহকারে পালন করে গেছেন ।

 সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের আচার্য ছিলেন আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল । মহামনীষী ব্রজেন্দ্রনাথ শীলকে ১৮৯৬ খ্রীষ্টাব্দে কোচবিহারের  মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ কোচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করেন ।

কোচবিহার রাজ্যকে কুসংস্কার , গোঁড়ামি ইত্যাদি থেকে মুক্ত করতে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণও ব্রাহ্মসমাজের ঘোষিত নীতি অনুসারে শিক্ষার ব্যাপারে যথেষ্ট উদ্যোগী হন । তিনি রাজ্যের সর্বত্র বিভিন্ন স্তরের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ছাত্রদের মানসিক বিকাশের জন্য বিদ্যালয়গুলিতে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।

মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ , মহারাণী সুনীতি দেবী ছাড়াও কোচবিহার রাজ্যে ব্রাহ্ম আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন রাজভ্রাতা কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ ও তাঁর স্ত্রী কেশব কন্যা সাবিত্রী দেবী এবং মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের পুত্র ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণ। ব্রাহ্মরা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিকাশের উদ্দেশ্যে ' সুকথা ' নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন । ব্রাহ্মধর্মের আচার অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকতো এই মাসিক পত্রিকাটিতে ।



উপসংহার:-

 ব্রাহ্ম ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন প্রকার সামাজিক সংস্কারের চেষ্টা  করেছিলেন কিন্তু তার সুফলগুলি বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ভোগ করেছেন সমাজের উচ্চশ্রেণীর লোকেরা ।কোচবিহারের খুব সামান্য সংখ্যক জনসাধারণ ই ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেছিলেন । নগর ভিত্তিক আন্দোলন সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হয় ।ব্রাহ্ম আন্দোলন কোচবিহার রাজ্যের জনসাধারণের অন্তরকে স্পর্শ করতে না পারলেও এই আন্দোলনের গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না । কারণ ব্রাহ্ম আন্দোলনকারীরাই তাঁদের অক্লান্ত চেষ্টার ফলে সমাজ সংস্কারের দ্বারা কুসংস্কারের বেড়াজাল থেকে এই রাজ্যকে মুক্ত করার অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে আধুনিকতার বিকাশ ঘটাতে সচেষ্ঠ হয়েছিলেন।


1. Write a short note on Tobacco cultivation in Cooch Behar . (কোচবিহারে তামাক চাষ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ। )
পশ্চিম বাংলার বুকে যেসব ফসলের চাষ করা হয়ে থাকে। সেই ফসল গুলির মধ্যে একটি অন্যতম উচ্চমূল্যের বাণিজ্যিক ফসল হলো তামাক। রাজ্যের বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া একটি প্রান্তিক জেলা কোচবিহার। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে যে তামাক উৎপাদন করা হয়ে থাকে তার শতকরা ৮০ ভাগই উৎপাদন হয় কোচবিহার জেলাতে।
পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা হিমালয় পর্বতের পাদদেশের সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত । তাই এই কোচবিহার জেলা তামাক চাষের জন্য একটি উপযুক্ত জলবায়ুর এলাকা। কেবলমাত্র কোচবিহারের উত্তরাংশ এবং তুফানগঞ্জ বাদে সর্বত্রই ব্যাপকভাবে তামাক চাষ করা হয়ে থাকে । লালবাজার অঞ্চল উন্নতমানের তামাকের জন্য বিখ্যাত । এছাড়াও মেখলীগঞ্জ , মাথাভাঙ্গা এবং দিনহাটা পরগনাগুলিতে ব্যাপকভাবে তামাক চাষ করা হয় ।তামাকের মরশুম এলে আবাল- বৃদ্ধ - বনিতা সবাই তামাক চাষের বিভিন্ন কাজে লেগে পড়ে । তামাক গাছের নীচের দিকের ছোট পাতা কিংবা পর্ব থেকে গজিয়ে ওঠা শাখা ভেঙে দেওয়ার জন্য অনেকক্ষেত্রে ছোটদের কাজে লাগানো হয় । এতে উপরের পাতাগুলি বড় হয় । পাতা কাটার উপযোগী হলে সেগুলি গাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রোদে শুকানো হয় । একাজে বাড়ির শিশু ও মহিলাই বেশি লিপ্ত থাকে ।দু'শ্রেণির তামাক চাষ করা হয়ে থাকে যেমন সাধারণ এবং হামাকো । মেখলীগঞ্জে হামাকো তামাক ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়ে থাকে । 
তামাকের ব্যবসা - বাণিজ্য বিশাল এবং এই তামাকের মাধ্যমে এখানকার লোকেরা প্রচুর অর্থ পেয়ে থাকে । এখান থেকে  বাংলার পূর্ব - দিকের জেলাগুলিতে ব্যাপকহারে তামাক পাঠানো হয় । বর্মার ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর হাজার হাজার মণ তামাক মেখলীগঞ্জ এবং লালবাজার থেকে নিয়ে যায় । 
2. Write an essay on the Tebhaga Movement in North Bengal .(উত্তরবঙ্গের তেভাগা আন্দোলনের উপর একটি প্রবন্ধ লেখ।)
অবিভক্ত বাংলায় সংগঠিত কৃষক আন্দোলন গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ১৯৪৬ খ্রি: সংগঠিত তেভাগা আন্দোলন । বর্গাদার বা ভাগ-চাষীরা এতে অংশ নেয়। মোট উৎপন্ন ফসলের তিন ভাগের দুইভাগ পাবে চাষী, এক ভাগ জমির মালিক- এই দাবি থেকেই তেভাগা আন্দোলনের সূত্রপাত। এই আন্দোলনের জনক নামে খ্যাত হাজী মোহাম্মদ দানেশ। আগে বর্গাপ্রথায় জমির সমস্ত ফসল মালিকের গোলায় উঠত এবং ভূমিহীন কৃষক বা ভাগ-চাষীর জন্য উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক বা আরও কম বরাদ্দ থাকত। যদিও ফসল ফলানোর জন্য বীজ ও শ্রম দু'টোই কৃষক দিত। তৎকালীন পূর্ব বাংলা এবং পশ্চিমবঙ্গে এই আন্দোলন সংগঠিত হয়। তবে দিনাজপুর ও রংপুর জেলায় এই আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছিল।
প্রধান দাবিঃ- 
ক) তেভাগা আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি ছিল উৎপন্ন ফসলের ২/৩ ভাগ তাদের দিতে হবে। 
খ) জমিতে ভাগ চাষীদের দখলিসত্ব দিতে হবে।
 গ) ভাগচাষির খামারে ধান তুলতে হবে। 
ঘ) ভাগ চাষের ধান বুঝে নিয়ে জমির মালিকর রসিদ দেবে।
বিস্তার :-
 অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে তেভাগা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল । উত্তরবঙ্গ , বিশেষত দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও মহকুমা ও রংপুর , মালদা ও জলপাইগুড়ি সংলগ্ন এলাকা হয়ে উঠল আন্দোলনের কেন্দ্র । ময়মনসিংহ ( কিশোরগঞ্জ ) , মেদিনীপুর মহিষাদল , সুতাহাটা ও নন্দীগ্রাম  আর ২৪ পরগনাতেও গড়ে ওঠে তেভাগার ঘাঁটি । হিন্দু ও মুসলমান কৃষক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলে । সশস্ত্র সংগ্রামের কিনারা পর্যন্ত পৌঁছেছিল তেভাগা ।
3. Write a note on the Sepoy Mutiny ( 1857 ) in North Bengal . (উত্তরবঙ্গে সিপাহী বিদ্রোহ (১৮৫৭) সম্পর্কে একটি নিবন্ধ  লেখ।  )
১৮৫৭ খ্রি: সিপাহী বিদ্রোহ শুরু হলে তা ভারতের বিস্তির্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৫৭ খ্রি: বোম্বাই এর তলোয়ার নামক জাহাজে সিপাহী মঙ্গলপান্ডে বিদ্রোহের সুচনা করে। শিগ্রই এই বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৫৭ খ্রি: সিপাহী বিদ্রোহের সময় কোচবিহার রাজ্য ছিল  ইংরেজের করদরাজ্য । শুধু তাই নয় , অস্তিত্ব রক্ষায় সে সময় কোচবিহার ছিল ইংরেজের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল এবং তার লোকবলও কিছুই ছিল না । অন্যদিকে উত্তরবঙ্গে তখন ইংরেজের সামরিক ছাউনিও তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না । অতএব স্বাভাবিক কারণেই সিপাহী - বিদ্রোহে উত্তরবঙ্গ তেমনভাবে উত্তাল হয়ে ওঠেনি । 
তবু সিপাহী - বিদ্রোহ ইংরেজ সামরিক ছাউনিতে এত ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করেছিল যে , উত্তরবঙ্গের ছোট ছোট সেনানিবাসেও তার প্রতিচ্ছায়া  পড়েছিল । দক্ষিণ বাংলার সেনা - ছাউনির একদল বিদ্রোহী সৈন্য বিদ্রোহ প্রচারের জন্য মুর্শিদাবাদের ভিতর দিয়ে এসে গঙ্গা পেরিয়ে রাজশাহীতে ঢোকে এবং রামপুর , নোয়ালিয়া ও আরদার মাঝপথে এক জায়গায় ছাউনি ফেলে । রাজশাহীর সদর অফিস ও ইংরেজ - ফ্যাক্‌টরীগুলির ইয়োরোপীয় সৈন্যদের সাহায্যে অতর্কিত আক্রমণে বিদ্রোহী সেনাদের বন্দী করে ফেলা সম্ভব হয় । 
সিপাহী বিদ্রোহ রক্ত - রঞ্জিত না হলেও তার ফল হিসেবে উত্তরবঙ্গ সরাসরি বৃটিশ শাসনের আওতায় আসে । তার ফলে ইংরেজ সরকার ভারতে কতকগুলো প্রশাসনিক পরিবর্তন আনেন । তার সুফল উত্তরবঙ্গেও দেখা দেয় । ব্রিটিশ সরকার  ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার উন্নতিসাধনের পাশাপাশি অধিক দায়িত্বশীল ও নিবিড় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সচেষ্ঠ হন।

1 . Answer any ten questions from the following : 
( a ) Write the full form of S.R.C. 
উ:- SRC এর পুরো কথা হল States Reorganisation Commission.
( b ) Who was the last Independent king of Cooch Behar State ?
উ:- কোচবিহারের শেষ স্বাধীন রাজা ছিলেন জগদীপেন্দ্র নারায়ন।
 ( e ) What do you mean by " Haluya " in Cooch Behar and Jalpaiguri ?
উ :- কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে Haluya বলতে একধরনের প্রথাগত নাচকে বোঝানো হয়।
 ( d ) In which year Rai Saheb Panchanan Barma was born ?
উ:- বাংলা 1272 সালে 1 লা ফাল্গুন (ইংরেজি 1865 খ্রি: ) পঞ্চানন বর্মা জন্মগ্রহন করেন।
 ( e ) In which year was the Rajbanshi Kshatriya Samiti founded ?
উ:- পঞ্চানন বর্মা রাজবংশীদের জন্য বাংলা 1317 সালে রংপুর জেলায় ক্ষত্রিয় সমিতি তৈরি করেন ।
 ( f ) Name two of the Bengalee tea planters in North Bengal . 
 ( g) Who wrote the famous book The Rajbanshis of North Bengal " ? 
উ :- চারুচন্দ্র সান্যাল The Rajbanshis of North Bengal  গ্রন্থটি লিখেছেন।
( h ) Who was the founder of Khen Dynasty ? 
উ :- কামতাপুরে খেনবংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেন নীলধ্বব্জ। তিনি কামতেশ্বর উপাধী নেন।
(i) When did the Anglo-Koch treaty signed? 
উ :- অ্যাংলো - কোচ সন্ধি স্বাহ্মরিত হয় 1773 খ্রিষ্টাব্দে।
(j) When did the Rangpur Sahitya Parisad establish/found ?
উ:- রংপুর সাহিত্য পরিষদ গঠিত হয় 1905 খ্রিষ্টাব্দে।
(k) Who was the Hubsi ruler who attaked Kamtapur?
উ:- গৌড়ের হাবসি রাজা আলাউদ্দিন হোসেন শাহ কামতাপুর আক্রমন করেন।
(l) Who founded Nabobidhan Brahma Samaj ? 
উ:- কেশবচন্দ্র সেন 1880 খ্রিষ্টাব্দে নববিধান ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।
(m) Who gave the title Brahmananda to Keshab Ch. Sen?
উ:- কেশবচন্দ্র সেনকে ব্রহ্মানন্দ উপাধী দেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
(n) Who wrote 'The Autobiography of an Indian Princess' / Amrit Bindu / Sishu Keshab ? 
উ :- মহারানী সুনীতি দেবী The Autobiography of an Indian Princess ও অমৃতবিন্দু , শিশু কেশব গ্রন্থগুলি লিখেছেন।
(o) What is the present name of Victoria College ?
উ:- ভিক্টোরিয়া কলেজের বর্তমান নাম এ. বি. এন. শীল কলেজ।
(p) Who was the founder of Cooch Behar dynasty ?
উ :- কোচবিহার রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেন চন্দন।

Monday, December 18, 2023

project Theatrical Script

 A PROJECT REPORT ON

 Theatrical Script of a Short story 

Entitled

 ' Counterparts ' 

-James Joyce

---------------------------------------------------------------------

BONA FIDE  CERTIFICATE 

 This is to certify that this project report entitled THEATRICAL SCRIPT OF JAMES JOYCE'S SHORT STORY COUNTERPATS  by ------- ROLL NO -----CLASS -XII ; REGISTRATION NO . ------  submitted during the academic year 2023-24 is a bonafide record of work , done under my supervision . 

Signature of the Project Guide with date

 Name : -------------

Designation:-----------

Department:--------------

 School:-------------

---------------------------------------------------------------------

Acknowledgement

 This project has given me the opportunity for learning and self development through group activities . I consider myself lucky to work under ------------whose motivating words and monitoring , care have paved the path of our knowledge and made us to work together , our gratitude to him . 

 Last but not the least , I am grateful to all of my friends and family members who helped me to complete the project .

------------------

 Signature of the Student

---------------------------------------------------------------------

Contents

Introduction

 Methods and Techniques 

 Outcome of the Project 

Conclusion 

References 

----------------------------------------------------------------

 INTRODUCTION


Film world is totally a very competitive field One can have an idea of the best movie all the time but if the script is not formatted correctly , it will not be even read There are a few steps to write the script of a film or a theatre.The Script is the outline of all the elements like audio visual enamour and dialogue which are required to tell a story through the medium of film or television.

A short story is not so effective as a theatre or film . I have chosen   ' Counterparts ' written by James Joyce which is a script of a theatre . It is completely a fundamental work  which develops some good qualities like creativity , power of intelligence and originality among the students . It can be performed gorgeously . Dialogues are written in a simple way to memorise easily .This will help to develop the language as well as stage direction and using of props .

----------------------------------------------------------------

METHODS AND TECHNIQUES 

On the first day , we Chose the prose piece ' Counterparts ' written by James Joyce . We planned that a rich theatrical script can be made to develop from this prose piece . 

 On the second day , we explored the behavioral types of each of the characters . 

On the third day , we were divided into groups and the story was divided into different parts . 

Fourth Day We started writing dialogues . Our teacher sketched the necessary improvisations and modifications .

 Fifth day,  On the fourth day , we Developed a draft script as per the instructions that were given by our teacher .

Sixth Day,  Roles were distributed through tests .  Short listed students were asked to read out their script roles .

 Seventh Day , The copy of the final script was distributed to each student . Rehearsal of the drama started . Some students were given off - stage duties like playing music . preparing the stage , arranging props etc. Our teacher was unanimously selected the director to conduct the rehearsal .

On the eighth day, the drama was performed in our school auditorium.

On the ninth day, the project report was submitted for evaluation. 

-------------------------------------------------------------------

OUTCOME OF THE PROJECT 

The dramatization is done from ' counterparts ( Dubliners ) by James Joyce . The rough or first draft of the script is modified during the reharsal and performance . The main script is given below :

Characters : [ Minor ]

 Miss Parker:-A typist of the office . 

Mr. Shelly :- The chief clerk of the office . 

Mr. Crosboie:-The other partner of the law farm.

' Crosbie and Alleyne ' where Farrington worked . 

Pat : A waiter at O'Neill's shop .

 Miss Delacour :-A client at the law farm .

 Ada:- Farrington's wife . 

Charlie and Tom : Farrington's children . 

Characters : [ Major ]

 Mr. Farrington :-The protagonist of the play who is insulted a number of times by his boss Mr. Alleyne . 

Mr. Alleyne : -Mr. Farrington's boss who insults him for not finishing his work in time . 

Scene - 1 

Place : At the office ' Crosbie and Alleyne " 

 Mr. Alleyne [ From backstage ) Send Farrington here ! 

Miss Parker Mr Farrington ! Mr. Farrington ! Mr. Alleyne wants you upstairs . 

Mr. Farrington ( Mutters ] Blast him ! Finally , be knocks on the door of his boss Mr. Al leyne on the first floor . 

Mr. Farrington : [ in a low voice May I ... 

Mr. Alleyne : Come in ! ( without losing a moment he starte shouting ) Farrington ? What is the meaning of this ? Why do I always have to complain against you ? May I ask why you hav en't made a copy of the contract between Bodley and Kirwan ? 

Mr. Farrington:- But Mr. Shelly said, sir .....

Mr. Alleyne:- Shelly said , Sir ... kindly listen to what I and not what Mr. Shelly says , Sir ! we have always some excuse or another for shirking work . Let me tell you if the contract is not copied before this evening I'll lay the matter before Mr Crosbie . Do hear me now ?

 Farrington:-Yes sir . 

 Mr. Alleyne:- Do you hear me now ? ... Ay , and another matter ! I might as well be talking to the wall as talking to you . Understand once and for all that you get half an hour for lunch and not an hour and a half . How many dishes do you want ? Do you mind leaving now ? 

Mr. Farrington : Yes , sir .

Mr. Alleyne : Eh ? Are you going to stand there all day ? Upon my word , Farrington , you take things easy ! 

Mr. Farrington : Sir , actually I was waiting to see . 

Mr. Alleyne : Very good , you needn't wait to see .

Scene II

 Mr. Farrington:- Pat , give me a drink like a good fellow . And , oh , caraway seeds please ! ( Farrington drinks ) It's almost an hour since I left office .

( Having paid his bill , Farrington goes back to his office .  )

Scene III 

Mr. Shelly:- Mr. Alleyne has been calling for you . Where have you been ? 

Farrington ( Sighs ):-  I know that game . Five times in a day is a little bit too much . Well , you better look sharp and get a copy of our correspondence in the Delacour case for Mr. Alleyne .. 

( Farrington goes upstairs to Mr. Alleyn's room where he finds Mr. Delacour talking intimately with Mr. Alleyne . He keeps the copy of contract on Mr. Allevne's table and bows humbly but nobody carvis to notice his bow . )

 Mr. Alleyne : ( Tapping a finger ) That's all right , you can go . 

( Farrington comes down to his table and starts writing . When the clock strikes five . he finds he still has fourteen pages left . He shivers . ) 

Mr. Farrington : ( looking at the pages he has copied ) Blast me ! Blast me ! Mistakes again ! I've written Bernard Bernard in stead of Bernard Bodley and have to start again on a clean sheet . Damn it !

( Suddenly Farrington finds Mr. Alleyne and Miss Delacour standing in front of him ) ( Humbly ) : Yes , Sir .... 

Mr. Alleyne :- Oh shut up Farrington ! Again ... again it's you who stand respon sible for everything .... 

Mr. Farrington:- What ... what Sir ? I'm not getting you properly . 

Mr. Alleyne:- Don't look callous . Two letters from Miss Delacour's case are missing and I hold you responsilble for everything . Got my point ?

 Mr. Farrington : Truely speaking . Sir , I know nothing about those two letters . 

Mr. Alleyne : ( mimicking Farrington ) I ... know ... nothing . Tell me , do you take me for a fool ? Do you think I'm a fool ? 

Mr. Farrington : ( Defends himself ) I don't . think Sir , that ... that's a fair question to put to me . 

Mr. Alleyne:-  Again ? Again ? you .... you impertinent ruffian ! I'll make things difficult for you ! Wait till you see !

Scene - IV

 ( Farrington returns home , goes in through the side door and finds the kitchen empty and the kitchen fire nearly out . ) 

Farrington ( Shouting ):-  Ada ! Ada ! ( A little boy comes running down the stairs . )  Who is that ?

Tom : Me , pa . 

Farrington:- Who are you ? Charlie ?

 Tom :- No. pa . Tom . 

Farmington:-  Where's your mom ? 

Tum : She's out at the Chapel . 

Farrington:- That's nonsense ! Did she think of leaving any dinner for me ?

 Tom : Pa , I ...

 Farrington:- Light the lamp . What do you mean by having the place in darkness ? Is the other child in bed ? 

( He aits down on one of the chairs heavily When the box lights the lamp Farrington bange his fet on the table )

 Farrington : What's for my dinner ? 

Tom : I'm going to cook it for you , Pa.

Farrington:-  ( Jumps up and points to the fire on that fire ! You let the fire out ! By God , I'll teach you to do that again ! 

 I'll teach you a lesson today ! 

Tom : ( erize bitterly O. Pa ! Pa , lesve me please ! 

Farrington:-  Now , you won't let the fire out the next time ! take that , you little whelp ! 

Tom : O , Pa ! Don't beat me , Pa ! And I'll .. I'll say a Hail Mary for you .. I'll says Hail Mary for you , Pa , if you don't beat me ... I'll say a Hail Mary .... 

[ Curtains ]

-------------------------------------------------------------------

CONCLUSION 

On completion of the project , we have learnt the following :

 ( i ) How to transform a story into a good theatrical script . 

( ii ) How to enjoy group activities .

( iii ) How to develop skills in writing dialogues and communication . 

( iv ) How to place correct language in the proper context .

 ( v ) The necessity of body language , gestures in communication .

 (Vi )  Others can develop an idea about how to dramatize a story . This script can be used as a model for future students . 

------------------------------------------------------------------

References

1. Zenith Roy& Manas Chattopadhyay, Higher Secondary English Guide,Kolkata,2017.

2. Chakraborty & Chakraborty, Higher Secondary English Digest, Kolkata,2017.

3. Dr. P.C Dhar & P.K Ray, Smart English, Kolkata,2015.

4. W.B.C.H.S.E Text Book.

5. A. S Hornby, Advanced Learner's Dictionary, Eight Edition, 2010.

-------------------------------------------------------------------













  James Joyce

Born:- 2 February , 1882.

Died:- 13 january, 1941.



উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস saq

 Xii History SAQ

1. বর্ণবৈষম্য নীতি কোন দেশে চালু হয়? উ:- দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্য নীতি কোন দেশে চালু হয়।

2. ফিদেল কাস্ত্রো কে ছিলেন? উ:- কিউবার রাষ্ট্র প্রধান ছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো।

3. স্বাধীন ভারতের প্রথম নির্বাচন কবে হয়েছিল? উ:- 1951- 52 খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন ভারতের প্রথম নির্বাচন হয়েছিল।

4. বার্লিন অবরোধ কী? উ:- 1948 খ্রি: 24 শে জুলাই সোভিয়েত রাশিয়া বার্লিনের প্রবেশের প্রধান সড়ক অবরোধ করে। এই ঘটনা বার্লিন অবরোধ নামে পরিচিত।

5. বুলগানিন কে ছিলেন? উ:- সোভিয়েত রাশিয়ার প্রধান মন্ত্রী ছিলেন বুলগানিন।

6. কার নেতৃত্বে ঝাসি রেজিমেন্ট গঠিত হয়? উ:- লক্ষ্মী স্বামীনাথনের নেতৃত্বে ঝাসি রেজিমেন্ট গঠিত হয়।

7. কে কবে সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি ঘোষনা করেন? উ:- 1932 খ্রি: ব্রিটিস প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডোনাল্ড সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি ঘোষনা করেন।

8. মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ কেন? উ:- মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ কারন এই অধিবেশনে মুসলিমদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবী গৃহিত হয়।

9. মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় কতজন শ্রমিক নেতা অভিযুক্ত হন? উ:- মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় 33 জন শ্রমিক নেতা অভিযুক্ত হন।

10. নব্যবঙ্গীয় কারা? উ:- হিন্দু কলেজের তরুণ শিক্ষক ডিরোজিওর অনুগামীরা নব্যবঙ্গ নামে পরিচিত। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন রামতণু লাহিড়ী, রাধানাথ শিকদার প্রমুখ।

11. চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক কাদের বলা হয়? উ:- কোন নিয়োগ কর্তার অধীনে নিদিষ্ট সময় কাজ করার চুক্তিতে আবদ্ধ শ্রমিকদের চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক বলে।

12. হিন্দু বিধবা পুনবিবাহ আইন কবে পাশ হয়? উ:- হিন্দু বিধবা পুনবিবাহ আইন 1856 খ্রিস্টাব্দে পাশ হয়।

13. মার্কেন্টাইলবাদ কাকে বলে?

উ:- সরকারের নিয়ন্ত্রিত ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতিকে মার্কেন্টাইলবাদ বলে।

 14.  ইংরেজরা ভারতে  প্রথম বাণিজ্যকেন্দ্র কোথায় ও কবে স্থাপন করেন?

উ:-ইংরেজরা ভারতে  প্রথম বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপন করে 1612 খ্রিস্টাব্দে , সুরাটে । 

15. কে কবে পাঞ্জাবকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন?

উ:- 1849 খ্রিস্টাব্দের্ড ডালহৌসি পাঞ্জাবকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন । 

16.  আলিনগরের সন্ধি কবে ও কাদের মধ্যে  স্বাক্ষরিত হয়?

উ:- 1757 খ্রিস্টাব্দে ক্লাইভ ও সিরাজদৌল্লার মধ্যে আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় । 

17. পতিদার কারা?

উ:- গুজরাটের জমিদার  সম্প্রদায়কে পতিদার বলা হয় ।

 18. মুক্তদ্বার নীতি কী?

উ:- 1899 খ্রিস্টাব্দে মর্কিন  রাষ্ট্রপতি জন হে ঘোষণা করেন যে চীনের সঙ্গে সকল বহিরাগত রাষ্ট্রই বাণিজ্য করতে পারবে । এটি মুক্তদার নীতি নামে পরিচিত । 

19. চীনে কবে আফিম আমদানি বন্ধ হয়?

উ:- 1857 খ্রিস্টাব্দে চীন আফিৎ আমদানি বন্ধ হয় ।

 20. কে কেরালায় অশ্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন?

উ:-  নারায়ণ গুরু কেরালা অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন ।

 21. স্যাডলার কমিশন কেন গঠিত হয়?

উ:- ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শিক্ষাব্যবস্থার অনুসন্ধান ও সংস্কারের জন্য স্যাডলার কমিশ 1917 খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয় ।

22. লক্ষ্ণৌ চুক্তি কবে কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?

উ:-  1916 খ্রিস্টাব্দে জাতীয়  কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে লক্ষ্ণৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । 

23. হো - চি - মিন কে ছিলেন?

উ:- ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধে প্রধান নেতা এবং উত্তর ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি ছিলেন হো - চি - মিন।

 24. ক্যাবিনেট মিশনের সদস্য কারা ছিলেন?

উ:- ক্যাবিনেট মিশনের সদস্য হলেন এ ভি আলেকজান্ডার , পেথিক লরেন্স ও স্ট্যাফোর্ড ক্লিপস ।

 25. রশিদ আলী দিবস কী?

উ:-  1946 খ্রিস্টাব্দের 12 ফেব্রুয়ারি কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আজাদ হিন্দ বাহিনীর ক্যাপ্টেন  রশিদ আলির মুক্তির দাবিতে রশিদ আলি দিবস পালন করা হয় । ব্রিটিশ সরকার ইতিপূর্বে রশিদ আলিকে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল ।

 26. মার্শাল পরিকল্পনা কী?

উ:-  1947 খ্রিস্টাব্দের 5 জুন মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব মার্শাল সাম্যবাদের প্রতিরোধের জন্য যুদ্ধবিধ্বস্ত পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিকে উন্নয়নের জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন । এটি মার্শাল পরিকল্পনা নামে পরিচিত ।

 27. পি. পি. পি (পাকিস্তান পিপলস্ পার্টি  ) কে কবে গঠন করেন? 

উ:- জুলফিকার আলি ভুট্টো পাকিস্তান পিপিলস্ পার্টি গঠন করেন । 

28. অন্ধকূপ হত্যা  কী?

উ:- সিরাজদ্দৌলা কলকাতা দখল করার পর 146 জন বন্দি ইংরেজকে 18 লম্বা ও 14' -10 ' চওড়া একটি ছোটো ঘরে আটক রাখা হয় । এর ফলে দমবন্ধ হয়ে 123 জন মারা যায় । এটি ' অন্ধকূপ হত্যা ' নামে পরিচিত । 

29. দস্তক কী? 

উ:- ফারুকশিয়রের ফরমান ( 1717 ) অনুযায়ী  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি  বিনা শুল্কে বাংলাদেশে বাণিজ্য করার ছাড়পত্র পায় যা  দত্তক নামে পরিচিত।

30. সাম্রাজ্যবাদ কী?

উ:- একটি দেশের ওপর যখন অপর একটি দেশ আধিপত্য স্থাপন করে সেই দেশের সম্পদকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে , তখন তাকে সাম্রাজ্যবাদ বলে ।

 31. এজেন্সি ব্যবস্থা কী?

উ:- 1753 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1775 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার বিভিন্ন কর্মচারীদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করে পণ্য ক্রয় করত । এটি এজেন্সি ব্যবস্থা নামে পরিচিত । 

32. উডের ডেসপ্যাচ কী?

উ:- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড 1854 খ্রিস্টাব্দে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য যে পরিকল্পনা তৈরি করেন তা উডের ডেসপ্যাচ নামে পরিচিত।

33. কে কবে বিধবা বিবাহ আইন পাশ করেন?

উ:-  লর্ড ডালহৌসি , 1856 খ্রিস্টাব্দে বিধবা বিবাহ আইন পাশ করেন । 

34. কে কবে কুয়ো - মিন - তাং দল গঠন করেন?

উ:- 1912 খ্রিস্টাব্দে সান - ইয়াৎ সেন কুয়ো - মিন - তাং দলটি প্রতিষ্ঠা করেন । 

( vi ) 1909 খ্রিস্টাব্দে মর্লে - মিন্টো সংঙ্গর আইনে মুসলিমদের জন্য পৃথক আসন সংরক্ষণ করা হয় । অথবা , 1916 খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে লক্ষ্ণৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । ( vii ) 1943 খ্রিস্টাব্দে পঞ্চাশের মন্বন্তর হয়েছিল । অথবা ,

35. পুনা চুক্তি কবে ও কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?

উ:-  1932 খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস ও আম্বেদকরের মধ্যে পূনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । 

36. স্বত্ববিলোপ নীতির ফলে কোন কোন রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হয়?

উ:- ঝাসী, উদয়পুর , সাতারা , নাগপুর ,  প্রভৃতি রাজ্যগুলি স্বত্ববিলোপ নীতির ফলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয় । 

37. দিকু কারা?

উ:- আদিবাসীরা বহিরাগত জমিদার , মহাজন , ব্যবসায়ী দের দিকু বলত ।

38) মেকলে মিনিট কী?

উ:- 1835 খ্রিস্টাব্দে মেকলে লর্ড বেন্টিঙ্কের কাছে একটি প্রতিবেদন পেশ করে ভারতে ইংরেজি মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রচলনের দাবি করেন । এটি মেকলে মিনিট নামে পরিচিত ।

 39) সিমলা দৌত্যের নেতৃত্ব কে দেন?  উ:- মহামান্য আগা খাঁ সিমলা দৌত্যের নেতৃত্ব দেন । 

40) কোথায় প্রথম নৌ বিদ্রোহের সূচনা হয়? উ:-  বোম্বাই - এর তলোয়ার জাহাজে প্রথম নৌবিদ্রোহের সূচনা হয় । 

41) হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা কে?

উ:- ভারতের পরমাণু কমিশনের প্রথম সভাপতি ও বিখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ছিলেন হোমি জাহাঙ্গির ভাবা ।

42) বেন বেল্লা কে? উ:- স্বাধীন আলজেরিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন বেন বেল্লা।

43) বুলগানিন কে ছিলেন? উ:- বুলগানিন ছিলেন সোভিয়েত রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি।

44) 'এশিয়া এশিয়াবাসীর জন্য' --- স্লোগানটি কার? উ:- এই স্লোগানটি জাপানের ।

45) ক্যাবিনেট মিশনের তিনজন সদস্যের নাম  লেখ? উ:-ক্যাবিনেট মিশনের তিনজন সদস্যের নাম এ. ভি আলেকজান্ডার , পেথিক লরেন্স , স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস ।

46) হো-চি-মিন কে ছিলেন? উ:-  হো - চি - মিন ছিলেন ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধের নায়ক এবং উত্তর ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি । 

47) কোন বছর ভিয়েতনাম গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষিত হয়? উ:- 1975 খ্রিস্টাব্দে ভিয়েতনাম গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয় ।

( vii )মর্লে  - মিন্টো সংস্কার আইন কবে পাশ হয়?   উ:-  মর্লে  - মিন্টো সংস্কার আইন পাশ হয় 1909 খ্রিস্টাব্দে । 

( viii ) লক্ষ্ণৌ চুক্তি কবে ও কাদের মধ্যে  স্বাক্ষরিত হয়?  উ:- 1916 খ্রিস্টাব্দে , কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের মধ্যে লক্ষ্ণৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ।

 50) কবে ও কোথায়  ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়?   উ:- 1925 খ্রিস্টাব্দে , কানপুরে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয় । 

( ix ) কে অ্যাংলিসিস্ট - ওরিয়েন্টালিস্ট বিতর্কের অবসান ঘটান?  উ:- লর্ড বেন্টিঙ্ক অ্যাংলিসিস্ট - ওরিয়েন্টালিস্ট বিতর্কের অবসান ঘটান । 

( x )   কে কেরালায় অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলেন?  উ:- শ্রীনারায়ণ গুরু কেরালায় অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন । 

52) কবে চিনে আফিম আমদানি বন্ধ হয়?  উ:-  1857 খ্রিস্টাব্দে চিনে আফিং আমদানি বন্ধ হয় । 

53) সাহুকার কারা?  উ:-  মহারাষ্ট্রের মহাজনদের সাহুকার বলা হয় । 

54) আলিনগরের সন্ধি কবে ও কাদের মধ্য হয়? উ:- 1757 খ্রিস্টাব্দে ক্লাইভ ও সিরাজদৌল্লার মধ্যে আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় । 

55) কে পাঞ্জাবকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন?  উ:-  লর্ড ডালহৌসি , 1849 খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন । 

56) মার্কেন্টাইলবাদ কী? উ:- মার্কেন্টাইলবাদ হল সরকারের প্রভাবাধীন ঔপনিবেশিক বাণিজ্য নীতি । 

57) দিয়েন-বিয়েন ফু ঘটনা কী? উ:- ভিয়েতনামের দিয়েন - বিয়েন - ফু নামে একটি স্থানে ফরাসিরা য়ে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছিল তা ভিয়েতমিন সেনাপতি গিয়াপের আক্রমণে 1954 খ্রিস্টাব্দে ধ্বংস হয় এবং ফরাসিরা আত্মসমর্পণ করে । এই ঘটনা দিয়েন - বিয়েন - ফু - র ঘটনা নামে পরিচিত । 

58) নেভারে প্লান কী? উ:- 1954 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি সেনাপতি নেভারে ভিয়েতমিনদের ধ্বংস করার জন্য যে পরিকল্পনা করেন , তা নেভারে প্ল্যান নামে পরিচিত । 

59) কে কবে ট্রুম্যান নীতি ঘোষনা করেন? উ:- 1947 খ্রিস্টাব্দের 12 মার্চ মার্কিন রাষ্ট্রপতি হ্যারি ট্রুম্যান , ট্রুম্যান নীতি ঘোষণা করেন ।

60) পঞ্চাশের মন্বন্তর কবে হয়? উ:-  1350 বঙ্গাব্দে পঞ্চাশের মন্বন্তর হয়।

 61) ভাইকম সত্যাগ্রহ কী? উ:- 1924 খ্রিস্টাব্দে ভাইকম গ্রামে মন্দির সংলগ্ন রাস্তায় দলিত হিন্দুদের চলাচল করার দাবিতে যে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সূচনা হয় , তা ভাইকম সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত । 

62) কে কবে প্রার্থনা সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন? উ:-1867 খ্রিস্টাব্দে আত্মারাম পাণ্ডুরঙ্গ প্রার্থনা সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন । 

63) কে কবে বিধবা বিবাহ আইন পাশ করেন? উ:- 1856 খ্রিস্টাব্দে লর্ড ডালহৌসি বিধবাবিবাহ আইন পাশ করেন । 

64) স্বামী বিবেকানন্দের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখ? উ:-  স্বামী বিবেকানন্দের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম - ( i ) বর্তমান ভারত , ( ii ) রাজযোগ । 

65) কে কবে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন? উ:-  1784 খ্রিস্টাব্দে , স্যার উইলিয়াম জোনস এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন ।

66) ভারতীয় রেলপথের জনক কাকে বলে? উ:-  লর্ড ডালহৌসিকে রেলপথের জনক বলা হয় ।

 67) ড: সুকর্ন কে ছিলেন? উ:- ড . সুকর্ণ ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার মুক্তিসংগ্রামের প্রধান নেতা ও ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি ।

68) OPEC কী? উ:-  মধ্যপ্রাচ্যের তৈল উৎপাদনকারী রাষ্ট্রগুলির আন্তঃরাষ্ট্র সংগঠন টি OPEC নামে পরিচিত।

69) কে সুয়েজখাল জাতীয়করন করেন? উ:-  মিশরের রাষ্ট্রপতি নাসের সুয়েজ খাল জাতীয়করণ করেন ।

70) গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং কবে হয়? উ:- 1946 খ্রিস্টাব্দের 16-20 আগস্ট গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং হয় । 

71) D-Day বা মুক্তি দিবস কবে পালন করা হয়? উ:- 1939 খ্রিস্টাব্দের 27 অক্টোবর দিনটি মুক্তি দিবস হিসেবে পালন করা হয় ।

72) চিনে শতদিবসের সংস্কার কবে হয়? উ:- চীনে 1898 খ্রিস্টাব্দে শতদিবসের সংস্কার হয় । 

73) সত্য শোধক সমাজ কে প্রতিষ্ঠা করেন? উ:-  1873 খ্রিস্টাব্দে মহারাষ্ট্রে জ্যোতিবা ফুলে সত্যশোধক সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন । 

74) মুক্তদ্বার নীতি কে ঘোষনা করেন? উ:- মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন হে চীনে মুক্তদার নীতি ঘোষণা করেন । 

75)   ওয়েলথ্ অফ নেশনস্ ' গ্রন্থটির লেখক কে? উ:- ওয়েলথ্ অফ নেশনস্ ' গ্রন্থটির লেখক অ্যাডাম স্মিথ । 

76) ক্যাপ্টেন কুক কোন কোন দেশ আবিষ্কার করেন? উ:- ক্যাপ্টেন  কুক অস্ট্রেলিয়া , হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ , নিউজিল্যান্ড প্রভৃতি দেশ আবিষ্কার করেন । 

77) দূরপ্রাচ্য কী? উ:-  দূরপ্রাচ্য বলতে চিন - জাপানকে বোঝায় । 

78) নয়া সাম্রাজ্যবাদের যুগ কাকে বলে? উ:- 1814-1914 – এই সময়কে ‘ নয়াসাম্রাজ্যবাদের যুগ ' বলা হয় । 

79) পুতুল সরকার কী? উ:-  একটি শক্তিশালী দেশ অন্য একটি দেশ অধিকার করে সেই দেশের সরকারকে নিজের ইচ্ছামতো পরিচালনা করে । এই বিদেশি নিয়ন্ত্রিত সরকারকে পুতুল সরকার বলে । 

80) পলাশির লুন্ঠন কী? উ:- পলাশির যুদ্ধের পর ইংরেজরা ভারতবর্ষ থেকে প্রচুর সম্পদ লুঠ করে নিজ দেশ ইংল্যান্ডে নিয়ে যায় । এই ঘটনা পলাশির লুণ্ঠন নামে পরিচিত ।

81) কে কবে সতীদাহ প্রথা রদ করেন? উ:-  1929 খ্রিস্টাব্দে , লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেন । 

82) তিন আইন কী? উ:- 1872 খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার যে আইন পাশ করে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করেন এবং অসবর্ণ বিবাহকে স্বীকৃতি দেন তা তিন আইন নামে পরিচিত ।

 83) পতিদার কারা? উ:- গুজরাটের যৌথ রাজস্ব আদায়কারী স্থানীয় মোড়ল শ্রেণির মানুষদের পতিদার বলা হয় । 

84) প্রথম আফিম যুদ্ধ কবে হয়? উ:- 1839–42 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের সঙ্গে চীনের প্রথম আফিৎ যুদ্ধ হয়েছিল । 

85) কে কবে সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি ঘোষনা করেন? উ:- 1932 খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডোনাল্ড সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি প্রবর্তন করেন ।

অজয় মুখার্জি , সতীশ সামন্ত , সুশীল বাড়া প্রমুখ তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের প্রধান নেতা ছিলেন । অথবা , মাতঙ্গিনী হাজরা - কে ' গান্ধিবুড়ি ' বলা হয় । ( xii ) 

87) সুভাষচন্দ্র নিকোবর দ্বীপের কী নাম দেন? উ:- সুভাষচন্দ্র বসু নিকোবর দ্বীপের নামকরণ করেন ‘ স্বরাজ দ্বীপ ' । 

88) ভারতীয় মহাকাশ চর্চার জনক কে? উ:-  বিক্রম সারাভাই - কে ' ভারতের মহাকাশচর্চার জনক ' বলা হয় ।

89) নববিধান কে প্রতিষ্ঠা করেন? উ:- কেশব চন্দ্র সেন।

90) TISCO কে প্রতিষ্ঠা করেন? উ:- জামসেদজি টাটা।

91) নব্যবঙ্গ কাদের বলে? উ:- ডিরোজিওর অনুগামীদের নব্য বঙ্গ বলে।

92) শ্বেতাঙ্গদের বোঝা ধারণার জনক কে? উ:- কিপলিং।

93) মহলানবিশ মডেল কী? উ:-  প্রশান্ত মহলানবিশ সোভিয়েত রাশিয়ার অনুকরণে ভারতের দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার যে মডেল তৈরি করেন , তা নেহরু মহলানবিশ মডেল নামে পরিচিত ।

94) কে কবে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন? উ:- স্বামী বিবেকানন্দ 1897 খ্রিস্টাব্দে।

95) আজাদ হিন্দ ফৌজ কে গঠন করেন? উ:- রাসবিহারী বোস।

96) বঙ্গবন্ধু  কাকে বলে? উ:- মুজিবর রহমান - কে ' বঙ্গবন্ধু ' বলা হয় । 

97) বক্সারের যুদ্ধ কাদের মধ্য হয়? উ:-  ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে দিল্লীর সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম অযোধ্যার নবাব সুজাদ্দৌল্লাও মিরকাশিমের মধ্যে 1764 খ্রিস্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধ হয়েছিল । 

98) ইলবার্ট বিল কী? উ:-  1883 খ্রিস্টাব্দে ও রিপনের আইনসচিব সিপিইলবার্ট একটি খসড়া বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইউরোপীয় বিচারকদের সমমর্যাদা ও অধিকার দান করেন । এটি ইলবার্ট বিল নামে পরিচিত । 

99) সান ইয়াৎ সেনের তিনটি নীতি কি? উ:-  সান - ইয়াৎ - সেনের তিনটি নীতি হল ( 1 ) জন জাতীয়তাবাদ  ( ii ) জন - গণতন্ত্র বাদ ও ( iii ) জন - জীবিকাবাদ । 

100) বুলগানিন কে? উ:- বুলগানিন হলেন একজন সোভিয়েত রাজনীতিবিদ।


সুয়েজ সংকটও ট্রুম্যান নীতি ও মার্শাল পরিকল্পনা

 4)  সুয়েজ সংকট সৃষ্টির কারণগুলি লেখো । সুয়েজ সংকটের গুরুত্ব বা ফলাফলগুলি উল্লেখ করো । 3 + 5 

 উত্তর:-   আরব - ইজরায়েল দ্বন্দ্ব চলাকালে ব্রিটেন ও ফ্রান্স ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিলে আরব দেশগুলি ক্ষুব্ধ হয় এবং নাসেরের সঙ্গেও পাশ্চাত্য দেশগুলির মনোমালিন্য শুরু হয় | আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্রিটেন ও ফ্রান্সই সুয়েজ খালের ওপর সবথেকে বেশি নির্ভরশীল ছিল | মার্কিন বিদেশমন্ত্রী ডালেস যখন সুয়েজ খাল ব্যবহারকারী দেশগুলিকে নিয়ে এক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেন তখনও ব্রিটেন ও ফ্রান্স সে প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি । এর ফলে সুয়েজ সংকট তৈরি হয় |

 [ 1 ] আসওয়ান বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প : - নাসের চেয়েছিলেন মিশরের আর্থিক উন্নয়নের জন্য নীলনদের ওপর আসওয়ান বাঁধ নির্মাণ করতে । কেননা , এই বাঁধের সাহায্যে ৮ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে জলসেচ করে সেগুলি আবাদি জমিতে পরিণত করা যাবে । আবার এই বাঁধের জলাধার থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে তা শিল্পোন্নয়নে সাহায্য করবে । এই নির্মাণ প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছিল ১৪০০ মিলিয়ন ডলার । ইংল্যান্ড , আমেরিকা ও বিশ্বব্যাংক মিলিতভাবে এই প্রকল্পের জন্য ৭০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে রাজিও হয় | কিন্তু এক বছর আলোচনা চলার পর আমেরিকা ও ব্রিটেনের প্ররোচনায় বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রস্তাব বাতিল করে দিলে নাসের প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন । 

[ 2 ] সুয়েজ খাল জাতীয়করণ :-  ক্ষুদ্ধ নাসের সুয়েজ খাল এবং সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানির জাতীয়করণ করেন ( ২৬ জুলাই , ১৯৫৬ খ্রি . ) এবং ঘোষণা করেন যে , [ i ] এই সুয়েজ খাল থেকে আদায় করা অর্থ আসওয়ান বাঁধ নির্মাণে খরচ করা হবে । [ ii ] কোম্পানির বিদেশি অংশীদারদের প্রচলিত বাজারদর অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে । [ iii ] আন্তর্জাতিক যোগসূত্র হিসেবে সব দেশের জাহাজ এই জলপথ ব্যবহার করতে পারবে । এর ঠিক তিনমাস পরে ( ২৯ অক্টোবর , ১৯৫৬ খ্রি . ) ব্রিটেন ও ফ্রান্সের গোপন প্ররোচনায় ইজরায়েল মিশর আক্রমণ করে ।

সুয়েজ সংকটের গুরুত্ব বা ফলাফল:-

 [ 1 ] আরব দুনিয়ার পশ্চিমি বিদ্বেষ :- প্রথম আরব - ইজরায়েল যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমেত পশ্চিমি শক্তিগুলি নিজেদের স্বার্থে নানাভাবে ইজরায়েলকে সাহায্য করেছিল । এমতাবস্থায় সুয়েজ সংকটকে কেন্দ্র করে মিশরের ওপর ইঙ্গ - ফরাসি আক্রমণ শুরু হলে মিশর - সহ গোটা আরব দুনিয়ায় পশ্চিম - বিরোধী মনোভাবের সৃষ্টি হয় ।

[ 2 ] শত্রুতা বৃদ্ধি :- সুয়েজ সংকট মিশর ও ইজরায়েলের মধ্যে শত্রুতাকে চরমে নিয়ে যায় | ইজরায়েলকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আরও জটিল হয়ে ওঠে ।

 [ 3 ] মিশরের কর্তৃত্ব :- মিশর কর্তৃক সুয়েজ খাল জাতীয়করণকে আন্তর্জাতিক দুনিয়া স্বীকৃতি দিলে সুয়েজ খালের ওপর মিশরের কর্তৃত্ব দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় । 

[4] ইজরায়েলের মার্কিন নির্ভরতা বৃদ্ধি:-সুয়েজ সংকটের জেরে সংঘটিত দ্বিতীয় আরব - ইজরায়েল যুদ্ধে ইজরায়েল আর্থিক ও সামরিক দিক থেকে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয় । এই ক্ষতিপূরণের জন্য ইজরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় |

5) বিশ্বে ঠান্ডা লড়াইয়ে ট্রুম্যান নীতি ও মার্শাল পরিকল্পনার ভূমিকা কী ছিল ? 6 + 2 

উত্তর:- 

 1 ] ট্রুম্যান নীতি:- ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ মার্কিন সংসদের এক যৌথ অধিবেশনে টুম্যান বলেন যে , এখন থেকে পৃথিবীর যে কোনো স্থানে স্বাধীন জনগণ যদি সশস্ত্র সংখ্যালঘু অথবা বাইরের শক্তির আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে , সেক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করাই হবে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি । এই ঘোষণাই ট্রুম্যান নীতি নামে পরিচিত ।

 পটভূমি:-

 [ a ] চার্চিলের ফালটন বক্তৃতা :- ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্গত মিসৌরি প্রদেশের ফালটন শহরে এক ভাষণে সাম্যবাদের প্রসার রোধ করার লক্ষ্যে ইঙ্গ - মার্কিন যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান ।

 [ b ] কেন্নানের বেষ্টনী নীতি :- মার্কিন বিদেশনীতির উপদেষ্টা জজ এফ . কেন্নান সোভিয়েত সম্প্রসারণ প্রতিহত করার লক্ষ্যে এক প্রবন্ধ লিখে জানান , রুশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অহেতুক কোনো যুদ্ধে না গিয়ে আমেরিকার উচিত হবে যে অঞ্চলে সোভিয়েত প্রভাব রয়েছে তাকে সীমাবদ্ধ রাখা ।

উদ্দেশ্যে :-

 [ a ] রাজনৈতিক :- যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে ইউরোপে ক্রমবর্ধমান সোভিয়েত বা সাম্যবাদী প্রভাব প্রতিহত করার জন্য প্রতিরোধমূলক রণকৌশল গ্রহণ । 

[ b ] অর্থনৈতিক :- ট্রুম্যান নীতি ঘোষণার অন্যতম লক্ষ্য ছিল , অর্থসাহায্যের নামে অন্যান্য দেশকে অস্ত্র ও শিল্পজাত ঢুক বিক্রি করে বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটানো । 

মার্শাল পরিকল্পনা:-  ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৫ জুন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্শাল তাঁর ভাষণে বলেন— যুদ্ধবিধবস্ত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দারিদ্র্য , মুধা , হতাশা , বেকারত্ন সহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংকটমোচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র অথসাহায্য দেবে । 

পটভূমি :-  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়কালে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলির অর্থনীতি সম্পূর্ণরূপে পঙ্গু হয়ে পড়েছিল । এইসমস্ত দেশ আমেরিকার কাছ থেকে অর্থসাহায্য না পেলে স্বাভাবিকভাবেই সোভিয়েত রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়বে , তখন আর এইসমস্ত দেশকে সাম্যবাদের প্রভাব থেকে মুক্ত করা যাবে না । আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্শাল এই সত্যের পটভূমিকায় তাঁর পরিকল্পনার নীতি গ্রহণ করেন ।

উদ্দেশ্য :- 

[ a ] সোভিয়েত প্রভাবমুক্ত ইউরোপ গঠন :-  যুদ্ধবিধৰস্তু ইউরোপের দেশগুলিকে অর্থসাহায্য দিয়ে তাদের সোভিয়েত প্রভাব থেকে মুক্ত করা ।

 [ b ] মার্কিন আধিপত্য প্রতিষ্ঠা :-  অর্থসাহায্য গ্রহণকারী দেশগুলির অভ্যন্তরীণ ও বিদেশ নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রেও মার্কিন আধিপত্য কায়েম করা ।

 প্রয়োগ :-  ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের মধ্যে পশ্চিম জার্মানি সহ পশ্চিম ইউরোপের ১৬ টি দেশ মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল । এইসমস্ত দেশ মিলিত হয়ে গঠন করেছিল OEEC ( Organisation for European Economic Cooperation ) বা ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা " । 

অব - শিল্পায়নের কারণ&আলিগড় আন্দোলন &শেখ মুজিবুর

1. ‘ অব - শিল্পায়ন ’ বলতে কী বোঝ ? উপনিবেশিক আমলে ভারতে অব - শিল্পায়ন সম্পর্কে আলোচনা করো । 3 + 5

অব- শিল্পায়ন:- 

 অব - শিল্পায়নের কারণ :-

[ 1 ] মূলধনের অভাব :- আঠারো শতকে আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রের ব্যবহার করে ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লব ঘটানো সম্ভব হয়েছিল । এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় শিল্পগুলিতে মূলধনের জোগান দেওয়া তো দূরের কথা এদের অর্থ ও সম্পদকে কোম্পানি নিংড়ে শোষণ করে নিয়েছিল | ফলে মূলধনের অভাবে অব - শিল্পায়ন ছিল এক অবশ্যম্ভাবী ঘটনা । 

[ 2 ] কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্য :- দেওয়ানি লাভের পর শুরু হয় ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যিক আধিপত্যের যুগ । অ্যাডাম স্মিথ তাঁর ‘ Wealth of Nation ' গ্রন্থে লিখেছেন — ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার ব্রিটিশ বাণিজ্যের পক্ষে ক্ষতিকর ও ভারতীয় স্বার্থবিরোধী । 

 [ 3 ] ভারতীয় বস্ত্রশিল্পের ধ্বংসসাধন :- এ সময়ে ভারতে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের সুতিবস্ত্র ইংল্যান্ড ও ইউরোপের প্রত্যেক দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল । এ প্রসঙ্গে ড্যানিয়েল ডেফো ‘ রবিনসন ক্রুশো ' গ্রন্থে লিখেছেন— “ ইংল্যান্ডের ঘরে ঘরে , বসার ঘরে , শোয়ার ঘরে , সবজায়গায় ভারতীয় বস্তু ঢুকে পড়েছে । ” তা দেখে ব্রিটিশ শাসকরা শঙ্কিত হয়ে পড়ে ও ভারত থেকে ব্রিটেনে রপ্তানিকৃত সুতিবস্ত্রের ওপর শুল্ক চাপায় । এর ফলে ব্রিটেনের ভারতীয় সুতিবস্ত্রের চাহিদা কমে যায় ও দেশীয় বস্ত্রশিল্প ধ্বংসের মুখে পড়ে ।

 [ 4 ] শিল্পবিপ্লব :- ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লব ঘটে যাওয়ার অনেক কম সময়ে বেশ উন্নতমানের অথচ সস্তা দ্রব্য উৎপাদন শুরু হয় , যা সহজে ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন বাজার দখল করে নেয় । ফলে ভারতীয় বস্ত্রশিল্প পিছু হটতে বাধ্য হয়।

[ 6 ] অবাধ বাণিজ্যনীতি :-১৮১৩ খ্রি . সনদ আইনের মাধ্যমে কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যিক অধিকারের অবসান ঘটিয়ে অবাধ বাণিজ্যনীতি গৃহীত হয় । ফলে ইংল্যান্ডের অন্যান্য বণিক সম্প্রদায়ও তখন থেকে অবাধে ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে শুরু করে । ইংল্যান্ডে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীতে ভারতীয় বাজার ছেয়ে যায় । 

অব - শিল্পায়নের ফলাফল :-

[ 1 ] বেকারত্ব :-দেশীয় কুটির শিল্পের ধ্বংসের ফলে ভারতের বিপুল সংখ্যক হস্তশিল্পী ও কারিগর বেকার হয়ে পড়ে ।  নরেন্দ্রকৃষ্ণ সিংহের মতে , “ শুধু বাংলাতেই ১০ লক্ষ লোক জীবিকা হারিয়েছিল । ” 

[ 2 ] কুটিরশিল্পের ধ্বংসসাধন :- অব - শিল্পায়নের ফলে কুটিরশিল্পের ধ্বংসসাধন সম্পূর্ণ হয় । ফলে , কুটিরশিল্পের বিকল্প জীবিকাক্ষেত্রের অভাবে মানুষ দুর্দশার মুখে পড়ে । 

[ 3 ] শহরগুলির শ্রীহীনতা : -অব - শিল্পায়নের ফলে ভারতের বিভিন্ন শহরগুলি শ্রীহীন হয়ে পড়ে। অবশিল্পায়নের ফলে অসংখ্য কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। লক্ষ লক্ষ শ্রমিক, কারিগর বেকার হয়ে অন্যত্র চলে যেতে থাকে। ফলে শহর কাঠামো নষ্ট হয়ে যায়।

 [ 4 ] কাঁচামাল সরবরাহের দেশে রূপান্তর :- অব - শিল্পায়নের মাধ্যমে ভারতবর্ষ পরিণত হয়েছিল কাঁচামাল সরবরাহের দেশে | রেলপথ চালু হলে ভারত থেকে কাঁচা রেশম , নীল , চা , কাঁচা তুলো প্রভৃতি ব্রিটেনে ‘ সরবরাহ শুরু হয় ।

[ 5 ] কৃষির ওপর চাপ বৃদ্ধি:- কাজ হারানো শিল্পী ও কারিগররা বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাবে কৃষিক্ষেত্রে ভিড় জমায় । ফলে কৃষির ওপর চাপ বাড়ে । 

[ 6 ] গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভাঙন :-অব - শিল্পায়নের ফলে ভারতীয় গ্রামীণ অর্থনীতি ভেঙে পড়ে ।  অর্থনীতি সম্পূর্ণরূপে কৃষিকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে । ফলে কৃষিমরশুম বাদ দিয়ে অন্যসময়ে মানুষের কাজ না থাকায় সার্বিকভাবে গড় আয় কমে যায় ।

2)  মুসলিমসমাজের অগ্রগতির ক্ষেত্রে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের অবদান উল্লেখ করো ।

 অথবা , আলিগড় আন্দোলনের প্রসারে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের কৃতিত্বের পরিচয় দাও । 

উত্তর:-

  ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতীয় মুসলিমসমাজের সংস্কার ও অগ্রগতির কাজে যিনি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান ( ১৮১৭-১৮৯৮ খ্রি . ) । 

স্যার সৈয়দ আহমদ খানের অবদান:-

 [ 1 ] পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রতি সমর্থন :- স্যার সৈয়দ আহমদ খান পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসারে আরবি , ফারসি , উর্দু ভাষা ও ইসলামীয় শাস্ত্রে জ্ঞান অর্জন করেন ও পরে ইংরেজি ভাষায়ও দক্ষতা লাভ করেন । তিনি ভারতের মুসলিমসমাজকে বোঝান যে , মুসলিম সম্প্রদায়ের অগ্রগতির জন্য তাদের ইংরেজি ও আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি ।

 [ 2 ] ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আনুগত্য :-  মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে সৈয়দ আহমদ ইংরেজ সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন । তিনি মুসলিমদের পরামর্শ দেন যে ইংরেজদের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমেই মুসলিমসমাজের স্বার্থ নিরাপদ ও সুরক্ষিত হবে । 

[ 3 ] রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি :- স্যার সৈয়দ আহমদ খান প্রথম জীবনে হিন্দু - মুসলিম ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন । কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে । তিনি | ' পাইওনিয়ার ' পত্রিকায় লেখেন যে , হিন্দু ও মুসলিম দুটি পৃথক জাতি । এদের রাজনৈতিক স্বার্থও পৃথক ।

 [ 4 ] শিক্ষার প্রসার :- স্যার সৈয়দ আহমদ খান মুসলিম সম্প্রদায়কে যুক্তিনির্ভর ও স্বাধীন চিন্তাভাবনার অধিকারী হওয়ার পরামর্শ দেন । মুসলিমদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে তিনি গাজিপুরে একটি ইংরেজি বিদ্যালয় ( ১৮৬৩ খি ) প্রতিষ্ঠা করেন ।তিনি ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে আলিগড়ে অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন । পরবর্তীকালে এটি ‘ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ' - এ ( ১৯২০ খ্রি . ) পরিণত হয় ।

 [ 5 ] নারীমুক্তি :- স্যার সৈয়দ আহমদ খান মুসলিমসমাজে নারীমুক্তি ও নারীশিক্ষার বিস্তারের পক্ষে এবং পর্দাপ্রথা , বহুবিবাহ ও ‘ তালাক ’ দেওয়ার বিরুদ্ধে মতামত ব্যক্ত করেন । মানবিকতা ও যুক্তির আলোকে তিনি ইসলামকে শক্তিশালী করতে সচেষ্ট হন ।

[6] আলিগড় আন্দোলন :- সৈয়দ আহমদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আলিগড় কলেজকে কেন্দ্র করে পরে মুসলিম সমাজের সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চিন্তাধারা বিবর্তিত হয় । মুসলিমসমাজের এই জাগরণ ‘ আলিগড় আন্দোলন ' নামে পরিচিত । এই আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন চিরাগ আলি , আলতাফ হোসেন আলি , মৌলানা শিবলি নোমানি , নাজির আহম্মদ , খুদা বক্স প্রমুখ । 

মূল্যায়ন :- স্যার সৈয়দ আহমদ খানের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আলিগড় আন্দোলনের মাধ্যমে মুসলিমসমাজে আধুনিকতার ঢেউ লাগে । ঐতিহাসিক ড . রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন যে , “ হিন্দুসমাজের মঙ্গলসাধনের জন্য রাজা রামমোহন যা করেছিলেন , মুসলিমসমাজের মঙ্গলের জন্য স্যার সৈয়দ আহমদও অনুরূপ ভূমিকা পালন করেন । ”

3) স্বাধীন বাংলাদেশের উথ্বানে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা আলোচনা করো । 

 সূচনা :- পূর্ব পাকিস্তানের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের বঞ্চনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের মনে ক্ষোভ  জমতে থাকে । এর পরিণতি হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উত্থান ঘটে ।

 স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান ও শেখ মুজিবুর ভূমিকা:-

[ 1] পূর্ববঙ্গের প্রতি বদনা :-  দেশভাগের  পর থেকে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তান বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু  করে । পাকিস্তানের জাতীয় আয়ের সিংহভাগ পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ করা হলেও পূর্ব পাকিস্তান অবহেলিত থেকে যায় । তারা পূর্ব পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দের দাবিদাওয়ার প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীনতা দেখায় । ফলে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের মনে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয় । 

[2]  ভাষা আন্দোলন :- পূর্ব পাকিস্তানে ৯৮.৯৬ শতাংশের বেশি মানুষের মাতৃভাষা ছিল বাংলা  ; অথচ পাকিস্তানের জনক মহম্মদ আলি জিন্না বাংলার পরিবর্তে উর্দুকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন । পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনও মনে করেন যে , বাংলা হল হিন্দুদের ভাষা । এই পরিস্থিতিতে বাংলা ভাষা রক্ষার দাবিতে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র আন্দোলন শুরু হয় ।

 [ 6 ] শেখ মুজিবরের নেতৃত্ব :-  সরকার গঠনে আওয়ামি লিগ ব্যর্থ হলে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন । শেখ মুজিবরের ধর্মঘটের ডাকে গোটা পূর্ব পাকিস্তান অচল হয়ে পড়ে | মুজিবুর ২৫ মার্চ ( ১৯৭১ খ্রি . ) ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের এক সভার ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা করেন যে , “ এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম , এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম । ” তাঁর ভাষণে পূর্ববঙ্গের গোটা বাঙালি জাতির মধ্যে উন্মাদনার সৃষ্টি হয় |

 [ 7 ] গণহত্যা :- বেলুচিস্তানের কসাই নামে পরিচিত জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর করে ঢাকায় পাঠানো হয় । পূর্ব পাকিস্তানে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ আনা হয় | ২৫ মার্চ রাতে পাক সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ব্যাপক হারে হত্যা করতে শুরু করে । এই হত্যা অভিযানের পোশাকি নাম দেওয়া হয় ‘ অপারেশন সার্চ লাইট ’ | 

[ ৪ ] স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম : - ২৫ মার্চ মধ্যরাতে শেখ মুজিবুর গ্রেপ্তার হলেও আন্দোলন দমন করা যায়নি | স্বাধীনতা আদায়ের লক্ষ্যে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ ও মুক্তি বাহিনী ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের শুরুতে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করে । ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির নেতৃত্বে ভারতীয় সেনা পূর্ববঙ্গে মুক্তি বাহিনীকে সহায়তা শুরু করার কিছুদিনের মধ্যেই পাক বাহিনী বিপাকে পড়ে যায় । শেষপর্যন্ত পাক বাহিনীর প্রধান জেনারেল এ . এ . কে . নিয়াজি ভারতীয় বাহিনীর প্রধান জগজিৎ সিং অরোরা - র কাছে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেন এবং স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম হয় ।

উপসংহার : - স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও বাংলাদেশে রাজনৈতিক সুস্থিতি অধরাই থেকে যায় । স্বাধীন বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট আততায়ীর হাতে নিহত হন ।


চীন ও জাপানের ইতিহাস

 চীন ও জাপানের ইতিহাস

MARKS:- 15

1. Give a brief account for the Meiji Restoration in Japan . Was this restoration a mark of " a sharp break with the past " ? (জাপানে মেইজি পুনরুদ্ধারের জন্য একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিন।  এই পুনরুদ্ধার কি "অতীতের সাথে একটি তীক্ষ্ণ বিরতির" একটি চিহ্ন ছিল?)

Answer:- 

মেইজি পুন:প্রতিষ্ঠা:-

ঊনবিংশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে কিয়োটোর রাজদরবারে একটি শোগুন - বিরোধী গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল । শোগুনতন্ত্রের রাজনৈতিক দুর্বলতার সুযোগে রাজতন্ত্রের সমর্থক এই প্রভাবশালী চক্র রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি করার বিষয়ে উৎসাহী হয়ে উঠেছিল । শোগুন যখন বহিঃচাপের মুখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশসমূহের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় , তখন এই গোষ্ঠী শোগুন- বিরোধী আন্দোলন শুরু করে ও “ সোন্নো - জো - ই " ( সম্রাটকে সমর্থন কর ও বিদেশীদের বিতাড়িত কর ) স্লোগান তোলে । এই চক্র বিদেশিদের কাছে জাপানকে উন্মুক্ত করার ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল । কিন্তু শোগুনতন্ত্রের সমর্থক গোষ্ঠী পাশ্চাত্য দেশসমূহের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী ছিল ।শোগুন - বিরোধী গোষ্ঠী শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে সম্রাটের রাজনৈতিক পুনরভ্যুদয়ের জন্য সচেষ্ট হয় ৷ এই বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে সাৎসুমা , চোসু , হিজেন ও তোসা — এই চারটি গোষ্ঠী । হ্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর শোগুনতন্ত্রের বিরোধিতার সঙ্গে বিদেশি বিরোধিতারও তীব্রতা বৃদ্ধি পায় । কিছুদিনের মধ্যেই এই বিরোধিতা উগ্র রূপ ধারণ করে ।

বহুদিন ধরেই সাৎসুমা ও চোসু গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্ক ছিল তিক্ত । কিন্তু শোগুন - বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে ঐ দুই গোষ্ঠী একটি গোপন মিত্রতা চুক্তিতে আবদ্ধ হয় । তারপর তারা পশ্চিম জাপানেরই আরও দুটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী হিজেন ও তোসার সঙ্গে হাত মেলায়।সম্রাটকে ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলন ক্রমশ জোরদার হতে থাকে । এই অবস্থায় তোসা গোষ্ঠীভূক্ত কিছু ব্যক্তি সাৎসুমা ও চোসু গোষ্ঠীর ক্ষমতাবৃদ্ধিতে আশঙ্কিত হয়ে প্রস্তাব দেন যে , শোগুন যদি স্বেচ্ছায় তাঁর সার্বভৌম ক্ষমতা পরিত্যাগ করেন , তবে নতুন ব্যবস্থায় তাঁকে একটি সম্মানজনক স্থান দিতে হবে । কিন্তু চোসু ও সাৎসুমা নেতাদের উদ্দেশ্য ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন । এই দুই গোষ্ঠীর তরুণ উগ্রপন্থী নেতারা শোগুনের রাজনৈতিক ক্ষমতার অবসান ঘটিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চাননি । তার ওপর তাঁরা শোগুনের সম্পত্তি গ্রাস করতেও উদ্যোগী হয়ে উঠেছিলেন ।

সাৎসুমা ও চোসু নেতাদের তীব্র শোগুন বিরোধিতার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বশেষ শোওন যোশিনবু ওরফে কেইকি ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে সম্রাটের হাতে যাবতীয় রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্পণ করেন ।এরপর বিদ্রোহীরা ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের ৩ জানুয়ারি তাঁরা কিয়োটোতে অবস্থিত শোগুনের প্রাসাদ আক্রমণ করেন এবং সম্রাটের রাজনৈতিক ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন । এই ঘটনাই জাপানের ইতিহাসে মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ( Meiji Restoration ) নামে বিখ্যাত ।পরবর্তীকালে মুৎসুহিত সম্রাট মেইজি নামে পরিচিত হন । " মেইজি ” শব্দের অর্থ “ জ্ঞানদীপ্তের শাসন " ( Enlightened Rule ) । তাঁর সুদীর্ঘ ৪৫ বছরব্যাপী শাসনকালের মধ্যে জাপান বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিল এবং একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল ।

*** " a sharp break with the past (অতীতের সাথে একটি তীক্ষ্ণ বিরতি) / প্রকৃতি:- 

1. বৈপ্লবিক পরিবর্তন :-

আপাতদৃষ্টিতে মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঘটনা একটি বলপূর্বক রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের ঘটনামাত্র , যার মাধ্যমে শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতা শাসক শ্রেণীর একাংশের কাছ থেকে অন্যশ্রেণীর কাছে হস্তান্তরিত হয়েছিল । কিন্তু বিষয়টিকে বৃহত্তর প্রক্রিয়ায় ব্যাখ্যা করলে দেখা যাবে যে , উনিশ শতকের মধ্যভাগের আগে থেকেই জাপানে কতকগুলি পরিবর্তন আসতে শুরু করেছিল । এই পরিবর্তনের পরিণতি হিসাবে শতাব্দীর অন্তিম লগ্নে জাপান একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল । জাপানের সামাজিক প্রেক্ষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল । 

2.সম্রাটের প্রতি আনুগত্য বৃদ্ধি :-

জাপানের ইতিহাসের রক্ষণশীল গোঁড়া ও ঐতিহ্যবাদীরা মনে করে টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের যুগে সম্রাটকে ক্ষমতাহীন করে তুললেও জাপানের মানুষের সম্রাটের প্রতি আনুগত্যে এতটুকু চিড় ধরেনি ।এই পরিস্থিতিতে একদল স্বার্থচিন্তাহীন দেশপ্রেমিক জাতীয়বাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্রাটের কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধারে প্রয়াসী হয়েছিলেন । বস্তুত মেইজি জাপানের শিক্ষা সংস্কারের মধ্যে এই উদ্দেশ্যই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল । নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ছিল দেশপ্রেম ও সম্রাটের প্রতি আনুগত্য বৃদ্ধি করা ।

3. সামন্ততন্ত্রের অবসান:-

মার্কসবাদী ঐতিহাসিকরা  মেইজি পুনঃ- প্রতিষ্ঠাকে একটি বুর্জোয়া নিয়ন্ত্রিত আন্দোলন হিসাবে বর্ণনা করেছেন , যার পরিণতি ছিল জাপানে সামন্ততন্ত্রের অবসান ।  মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঘটনা বুর্জোয়া শ্রেণী নিয়ন্ত্রিত হলেও পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরও জাপানের গ্রামাঞ্চলে বহু এলাকায় সামন্ততান্ত্রিক সম্পর্ক ও বন্ধনগুলি থেকে গিয়েছিল ।

4.ক্ষমতার পুন:প্রতিষ্টা:-

মেইজিপুনঃপ্রতিষ্ঠার পর  থেকে সম্রাট  দেশের প্রকৃত শাসকে পরিণত হন । সেদিক থেকে ঘটনাটি ছিল যথার্থই পুন:প্রতিষ্টা ।মেইজিপুনঃপ্রতিষ্ঠার পর জাপানে  দ্বৈত শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটেছিল ও সম্রাট তাঁর হারানো ক্ষমতা ফিরে পেয়েছিলেন ।

উপসংহার :- 

মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরও জাপানে বৈদেশিক আক্রমণের আশঙ্কা থেকে গিয়েছিল । এই পুনঃপ্রতিষ্ঠাকে যারা কার্যকরী করেছিলেন , সেই সমস্ত তরুণ সামুরাই নেতারা স্পষ্টই উপলব্ধি করেছিলেন যে , কেবলমাত্র টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েই বিদেশী আক্রমণ রোধ করা যাবে না । বৈদেশিক আক্রমণ ঠেকাতে হলে জাপানকেও পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলির ঢঙে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তুলতে হবে । ইউরোপীয় শক্তিবর্গ কর্তৃক আক্রমণের তীব্র আশঙ্কা মেইজি শাসকদের সন্ত্রস্ত করে তুলেছিল । মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরবর্তীকালে তারা কতকগুলি সংস্থার সাধন করেন । এই সংস্কারগুলি পুঁজিবাদী অর্থনীতি গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত করেছিল ( These reforms paved the road for the development of the modern capitalistic economy ) ।


2. What were the causes and consequences of the Russo - Japanese War ? Why was Russia defeated ?[ রুশ-জাপান যুদ্ধের কারণ ও পরিণতি কী ছিল?  রাশিয়া কেন পরাজিত হয়েছিল? ]

Answer :- চীন - জাপান যুদ্ধের প্রায় দশ বছর পর জাপান অধিকতর প্রবল প্রতিপক্ষ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল ।কোরিয়া এবং মাঞ্চুরিয়া এই দুটি অঞ্চলের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করেই রাশিয়া ও জাপানের মধ্যে তিক্ত সম্পর্কের সূচনা হয়েছিল ।এই স্বার্থান্বেষী ও আগ্রাসী বৈদেশিক নীতি রুশ - জাপান যুদ্ধের ( ১৯০৪ ) পটভূমিকা তৈরি করেছিল ।

রুশ-জাপান যুদ্ধের কারণ:-

চীনকে পরাস্ত করার পর শিমনোসেকির সন্ধি- চুক্তির মাধ্যমে জাপান চীনের যে সমস্ত অঞ্চল অধিকার করেছিল , রাশিয়ার  হস্তক্ষেপ জাপান তা থেকে বঞ্চিত হয়েছিল । উপরন্ত রাশিয়া ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে চীনের সাথে লি - লোবানত চুক্তি নামে একটি গোপন চুক্তি স্বাক্ষর করে , যা ছিল অবশ্যই জাপানের বিরুদ্ধে একটি আক্রমণাত্মক চুক্তি । জাপান চীন - জাপান যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত লিয়া ওটাং উপদ্বীপ সমেত বেশকিছু অঞ্চল চীনকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয় । 

জাপান কোরিয়াকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করার পক্ষপাতী ছিল । কিন্তু রাশিয়া কোরিয়াতে কোনো আধুনিক সংস্কার সাধনের বিরোধী ছিল । কারণ রাশিয়া জানত যে , কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা এবং দুর্বলতা তাকে রাশিয়ার ওপর অধিকতর নির্ভরশীল করে তুলবে । কিন্তু জাপানের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন ধরনের , কারণ কোরিয়াতে জাপানের অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িত ছিল । ঊনবিংশ শতকের শেষদিকে জাপানে দ্রুত শিল্পায়ন ঘটেছিল এবং জাপানি শিল্পপতিরা কোরিয়ার বাজারের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন ।

কোরিয়ার পর চীনের মাঞ্চুরিয়া দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণ হিসাবে দেখা দেয় । রাশিয়া মাঞ্চুরিয়ার ভেতর দিয়ে ট্রান্স- সাইবেরিয়ান রেলপথ নির্মাণ এবং রুশ - চীন যৌথ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠা  করেছিল । আবার অন্যদিকে শিল্পায়নের গতি দ্রুততর করার তাগিদে মাঞ্চুরিয়ার বনজ সম্পদ , কয়লা , লোহা , সোনা প্রভৃতির ওপর জাপানের দৃষ্টি ছিল ।  চীনের বক্সার বিদ্রোহের সুযোগে রাশিয়া মাঞ্চুরিয়াতে সৈন্য পাঠিয়েছিল । এই ঘটনায় সবথেকে আতঙ্কিত হয়েছিল জাপান । ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব এশিয়াতে রুশ আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে যে ইঙ্গ - জাপান মৈত্রী চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল , তার অব্যবহিত পরেই রাশিয়া কথা দেয় যে , সে শীঘ্রই মাঞ্চুরিয়া থেকে তার সৈন্য অপসারণ করবে । দক্ষিণ মাঞ্চুরিয়া থেকে ছমাস ও মধ্য মাঞ্চুরিয়া থেকে এক বছরের মধ্যে যাবতীয় রুশ সৈন্য প্রত্যাহৃত হবে বলে , রাশিয়া প্রতিশ্রুতি দেয় । কিন্তু রাশিয়া এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং জাপান উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে ।

১৯০৪ খ্রি: জাপান পোর্টআর্থার আক্রমন করলে রুশ-জাপান যুদ্ধ শুরু হয়।

পোর্টসমাউথের সন্ধি - চুক্তি:-

রুশ - জাপান যুদ্ধে জাপান রাশিয়াকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে । ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে  পোর্টসমাউথের সন্ধি - চুক্তির মাধ্যমে রুশ - জাপান যুদ্ধের অবসান ঘটে । জাপান যেহেতু জয়ী পক্ষ ছিল , তাই জাপান স্বাভাবিকভাবেই চুক্তির শর্ত হিসাবে রাশিয়ার কাছে কতকগুলি দাবি পেশ করে । দাবিগুলি ছিল : 

( ১ ) কোরিয়াতে জাপানের প্রাধান্য স্বীকার করে নিতে হবে । 

( ২ ) দক্ষিণ মাঞ্চুরিয়াতে রাশিয়ার ইজারাধীন অঞ্চল ও রুশ রেলপথ জাপানকে ছেড়ে দিতে হবে।

 ( ৩ ) দূরপ্রাচ্যে রাশিয়ার নৌশক্তি হ্রাস করতে হবে । 

( ৪ ) জাপানকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে । 

( ৫ ) সাইবেরীয় উপকূলে জাপানি নাগরিকদের মাছ ধরার অধিকার দিতে হবে ।

 ( ৬ ) জাপানের হাতে রাশিয়াকে সাখালিন অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে । 

রাশিয়া জাপানের  বেশকিছু দাবি মেনে নিলেও , অনেকগুলি দাবি মেনে নেয়নি।

গুরুত্ব:-

আধুনিক দূরপ্রাচ্য তথা সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে রুশ - জাপান যুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম । রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাপানের বিজয় পূর্ব এশিয়াতে রাশিয়ার আগ্রাসী বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল । প্রাচ্যে রাশিয়ার সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণ ব্যাহত হবার ফলে রাশিয়া পুনরায় ইউরোপে , বিশেষত বলকান অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হয়। ফলে বলকান সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে।

রাশিয়াকে পরাস্ত করার ফলে জাপানের আন্তর্জাতিক মর্যাদা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং জাপান পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির সমপর্যায়ে পৌছাতে পেরেছিল । এই যুদ্ধে বিজয়ী হবার পরেই  জাপান কোরিয়াকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়।  ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে কোরিয়া তার স্বাধীনতা হারিয়ে জাপানি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় । 

যদিও এই যুদ্ধ জাপানকে নিরবচ্ছিন্ন সাফল্য এনে দিয়েছিল , তবুও এই যুদ্ধের ফলে জাপানে অসংখ্য জীবনহানি ঘটেছিল এবং যুদ্ধের ব্যয়ভার জাপানের জাতীয় অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল । ফলে জাপানে এক তাৎক্ষণিক অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে গণ- অসন্তোষ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ।

MARKS:-10

1.  Discuss the causes of Sino - Japanese War . (চীন-জাপান যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর।)

Answer :- চীন - জাপান বিরোধের প্রেক্ষাপট আলোচনা করতে গিয়ে ঐতিহাসিক হ্যারল্ড ভিনাক ( Harold Vinacke ) বলেছেন , চীন ও জাপানের ঐতিহাসিক সম্পর্ক কোরিয়াকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল এবং আধুনিক ইতিহাসে তাদের মধ্যে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিরোধ কোরিয়াকে নিয়েই আরম্ভ হয়েছিল ( The historical relations of Japan and China all centred in Korea , and it was in and over Korea that they first came into serious conflict in the modern period of their history .)।

চীন-জাপান যুদ্ধের কারণ :-

১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে কোরিয়ার বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান চালানোর পরিকল্পনা পরিত্যক্ত হবার পর জাপান কোরিয়ার সঙ্গে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে । ঐ চুক্তির মাধ্যমে কোরিয়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি লাভ করে । জাপান ও কোরিয়ার মধ্যে একটি নিয়মিত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় । অন্যদিকে জাপান যে মুহূর্তে কোরিয়াকে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দেয় , সে মুহূর্তেই স্বাভাবিকভাবেই চীনের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়েছিল । কোরিয়াতে জাপানের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে প্রতিহত করার জন্য চীন সচেষ্ট হয় । ফলে চীন - জাপান দ্বন্দ্ব অনিবার্য হয়ে ওঠে ।

ইতিমধ্যে কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দুটি গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয় । একটি ছিল জাপানের সমর্থক , অপর গোষ্ঠী ছিল চীনের সমর্থক । জাপান সমর্থক গোষ্ঠী ছিল প্রগতিবাদী ও কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ সংস্কারের পক্ষপাতী । কিন্তু চীনপন্থী গোষ্ঠী ছিল প্রগতি - বিরোধী এবং যাবতীয় আধুনিক সংস্কারের বিপক্ষে ।কোরিয়ার এই অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে চীন ও জাপানের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল । 

এই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই কোরিয়াতে টংহ্যাক অভ্যুত্থান দেখা দেয় । বিদ্রোহীদের দমন করতে ব্যর্থ হবার পর কোরিয়া ইউয়ান শিশু কাই এর সাহায্য প্রার্থনা করে । এই সময়ে জাপান একটি অনবদ্য কুটনৈতিক চাল চালে । জাপানের উদ্দেশ্য ছিল চীন কোরিয়াতে সৈন্য প্রেরণের সঙ্গে সঙ্গে জাপানও কোরিয়াতে সামরিক বাহিনী পাঠাবে । চীন জাপানের ফাদে পা দেয় এবং টংহ্যাক বিদ্রোহ দমন করার জন্য একটি ছোটো বাহিনী কোরিয়াতে পাঠিয়ে দেয় । জাপান তৎক্ষণাৎ প্রায় ৮০০০ সৈন্যের একটি বাহিনী কোরিয়াতে পাঠায় । টংহ্যাক বিদ্রোহ সহজেই দমন করা হয় । কিন্তু জাপান তখনও কোরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করে না । 

ইতিমধ্যে চীন ও জাপান — উভয়পক্ষের সৈন্যবাহিনী কোরিয়ার সিওলে পরস্পর পরস্পরের সম্মুখীন হয় । চীন যুদ্ধ এড়াতে চেয়েছিল । চীনের  আশা ছিল যে , পাশ্চাত্য শক্তিবর্গের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ মীমাংসায় আসা যাবে । রাশিয়া তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে চীনকে কোনোরকম সাহায্য করা থেকে বিরত থাকে । ব্রিটেন ও আমেরিকা অবশ্য জাপানের কাছে শান্তি বজায় রাখার জন্য আবেদন রাখে , কিন্তু জাপান তা প্রত্যাখ্যান করে । ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে জাপানি সৈন্যরা সিওলের রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করে এবং রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি সরকার গঠন করে । ২৫ জুলাই জাপানিরা কোরীয় উপসাগরে " কাওশিং " নামে একটি চীনা জাহাজ ডুবিয়ে দেয় । ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের ১ আগস্ট উভয়ে উভয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ।এই যুদ্ধে চীন চুড়ান্ত ভাবে পরাজিত হয়। ফলে চীন জাপানের সাথে সিমনোসেকির সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।

চীন-জাপান যুদ্ধের ফলাফল :-

চীন - জাপান যুদ্ধে চীনের শোচনীয় পরাজয় চীনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে । পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তিবর্গ চীনের দুর্বলতার সুযোগে নিয়ে চীনকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় । চীনের সার্বভৌমত্ব , স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা বিপন্ন হয়ে পড়ে ।তাছাড়া , জাপানের মতো একটি ক্ষুদ্র দেশের হাতে পরাজয়ের ফলে দেশের জনসমক্ষে মাঞ্চু রাজবংশের প্রভাব , প্রতিপত্তি ও মর্যাদা নষ্ট হয়ে যায় । অন্যদিকে চীনের মতো একটি সুবিশাল দেশকে পরাস্ত করার পর জাপানের আত্মবিশ্বাস অনেকাংশে বেড়ে যায় । চীন - জাপান যুদ্ধে জাপানের সাফল্য রাশিয়াকে ভীত করে তুলেছিল।

2.  What were the causes and consequences of Japanese aggression at Manchuria(মাঞ্চুরিয়ায় জাপানি আগ্রাসনের কারণ ও পরিণতি কী ছিল?)

Answer :- জাপানের মাঞ্চুরিয়া আক্রমণের কারন:-

জাপানের মাঞ্চুরিয়া আক্রমনের পিছনে কতগুলি গুরুত্বপূর্ন কারন ছিল । মাঞ্চুরিয়ার ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়কে কেন্দ্র করে রুশ - জাপান যুদ্ধ ( ১৯০৪-০৫ ) যুদ্ধ হয়েছিল এবং এই যুদ্ধে প্রায় ১ লক্ষ জাপানির প্রাণহানি হয়েছিল । তাছাড়া , জাপানের সামরিক নীতি নির্ধারকরা উত্তরমুখী রুশ সম্প্রসারণের প্রতিবন্ধক হিসাবে মাঞ্চুরিয়াকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন । ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের পর থেকে সাম্যবাদের অগ্রগতি রোধ করার প্রশ্নে মাঞ্চুরিয়ার সামরিক সুরক্ষা জাপানের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ছিল।

প্রথমে অবশ্য জাপান মাঞ্চুরিয়াকে তার উপনিবেশে পরিণত করতে চায়নি । জাপান চেয়েছিল একজন সমরনায়কের অধীনে মাঞ্চুরিয়াতে চীনা সার্বভৌমত্ব বজায় থাকুক । চীনের অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে জাপান মাঞ্চুরিয়াতে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকতে চেয়েছিল । কিন্তু ১৯২০ - র দশকে চীনা জাতীয়তাবাদের উত্থান জাপানের এই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হতে দেয়নি । চীনা জাতীয়তাবাদীরা মাঞ্চুরিয়াতে জাপানের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন নতুন পরিস্থিতিতে জাপানের কোনো গুরুত্বপূর্ণ গোষ্ঠীই মাঞ্চুরিয়া থেকে সে মুহূর্তে হাত গুটিয়ে নিতে চায়নি ।মধ্যপন্থী সামরিক নেতারাও বুঝেছিলেন যে মাঞ্চুরিয়াতে জাপানের কর্তৃত্ব বহাল রাখার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কিছু করা দরকার।

জাপানের মাঞ্চুরিয়া আক্রমণ:-

দূরপ্রাচ্যের ইতিহাসে জাপানের মাঞ্চুরিয়া আক্রমণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে চিহ্নিত । ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে রুশ - জাপান যুদ্ধের অবসান ঘটে পোর্টস্মাউথ সন্ধি - চুক্তির মাধ্যমে । এই চুক্তির দ্বারা সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে , জাপান দক্ষিণ  মাঞ্চুরিয়াতে  রেলপথের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য মাঞ্চুরিয়াতে ১৫,০০০ সৈন্য মোতায়েন রাখতে পারবে । এই বাহিনীর কেন্দ্রীয় দপ্তর মুকডেনে অবস্থিত ছিল । ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ সেপ্টেম্বর মুকডেনের কাছে ঐ রেলপথের ওপর বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে । মুকডেনে বসবাসকারী জাপানি সামরিক নেতারা এই ঘটনার জন্য সরাসরি একদল চীনা সৈন্যকে দায়ী করেন এবং বলেন যে , চীনা সৈন্যরা ঐ রেলপথ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল । তাঁরা তৎক্ষণাৎ সমগ্র মাঞ্চুরিয়া জুড়ে একটি সামরিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন ।  মাত্র চারদিনের মধ্যেই মুকডেনের উত্তরে ২০০ মাইল এলাকা বিস্তৃত সব কটি চীনা শহর জাপান দখল করে নেয় ।

ফলাফল:-

সদুরপ্রাচ্যে জাপানের আগ্রাসী নীতি বন্ধ করতে বা শান্তিভঙ্গের অপরাধে জাপানের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জাতিসংঘ চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছিল । জাপানের মাঞ্চুরিয়া আক্রমণ জাতিসংঘের সক্ষমতাকে প্রশ্ন করেছিল । একটি জটিল ও সংকটজনক পরিস্থিতির সামনে জাতিসংঘের দুর্বলতাকে বিশ্বের সামনে প্রকাশ করেছিল । 


Marks:-5

1.Write a note on " Tonghak " rebellion . (" টং - হ্যাক " বিদ্রোহ কী)

Answer :-1894-95 সালের চীন - জাপান যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ ছিল কোরিয়ার " টং - হ্যাক বিদ্রোহ " । টং - হ্যাক কথাটির অর্থ হলো প্রাচ্যের শিক্ষা ( Eastern learning )। 1890 এর দশকের শুরুতে কোরিয়ায় টং হ্যাক নামের এক  জাতীয়তাবাদী  কৃষক অভ্যুত্থান ঘটে | সরকারি নিপীড়ন এবং খ্রিস্ট ধর্মের প্রসারে অত্যাচারিত  হয়ে " টং - হ্যাক " ধর্মীয় সম্প্রদায় এই  আন্দোলন  গড়ে তোলেন | এই সম্প্রদায় ছিল বৌদ্ধ ধর্ম , কনফুসীয় মতবাদ এবং তাও মতবাদের মেনে চলতেন। কোরিয়ার সরকার এই সম্প্রদায়কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

কালক্রমে এই টং - হ্যাক সম্প্রদায়ের বিদ্রোহ এমন চেহারা নেয় যে , কোরিয়ার সরকার চীনের মাঞ্চু সম্রাটের কাছে সামরিক সাহায্য চান | ইতিপূর্বে 1885 সালে চীন ও জাপানের মধ্যে এই মর্মে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল যে , কোন দেশেই অপর দেশকে না জানিয়ে কোরিয়ার ভূখণ্ডে সেনাবাহিনীর পাঠাতে পারবে না | কাজেই চীন যখন কোরিয়ার রাজার অনুরোধে উত্তর কোরিয়ায় সেনাবাহিনী পাঠালো , তখন জাপানও দক্ষিণ কোরিয়ায় সেনা পাঠায় | এরই ফলশ্রুতি ছিল চীন - জাপান যুদ্ধ ( 1894-95 )শুরু হয় | এই যুদ্ধে চীনের পরাজয় ঘটে এবং 1895 সালের মার্চ মাসে উভয়ের মধ্যে শিমনোসেকির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় |

4.What is " extra - territoriality " ? 

3.Write a note on " Sphere of Influence " . 

2.Write a note on " Nine Power Treaty " . 

Answer :- চীনের আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষার জন্য একটি গুরুত্ব পূর্ণ পদক্ষেপ হল ১৯২২ খ্রি: ওয়াশিংটন সন্মেলনে স্বাক্ষরিত নয় শক্তির চুক্তি (Nine power Treaty).  ১৯২১ ২২ খ্রি: ওয়াশিংটন সন্মেলনে আমেরিকা ও ব্রিটেনসহ মোট নয়টি দেশ যোগদান করলে তাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে সাতটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি গুলির মধ্যে  অন্যতম হল নয় শক্তির চুক্তি (Nine power Treaty)।স্বাক্ষরকারী দেশগুলি চীনের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা , আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও মুক্তদ্বার নীতি মেনে চলতে রাজি  হয় । পশ্চিমি দুনিয়ায় এই চুক্তিটির কথা ঘটা করে প্রচার করা হয়েছিল কিন্তু চীনের কাছে এই চুক্তি ছিল মূল্যহীন । যদিও শানটুং ফিরে পেয়ে চীন কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল , কিন্তু চীন যে আশা নিয়ে এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল তার অধিকাংশই ওয়াশিংটন সম্মেলন পূরণ করতে পারেনি।

এই চুক্তির পরেও চীনের অভ্যন্তরে বিদেশি শক্তিগুলি যে সমস্ত অন্যায় সুযোগ - সুবিধা উপভোগ করত , সেগুলি অক্ষুণ্ণ থেকে গিয়েছিল এবং চীনে নিজেদের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করার জন্য তারা যে নির্লজ্জ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিল তা অব্যাহত ছিল । চীনে বিদেশিদের অতি আঞ্চলিক অধিকার এবং চীনা শুল্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে বৈদেশিক নিয়ন্ত্রণ চীনের সার্বভৌমত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল । কিন্তু ওয়াশিংটন সম্মেলনে এই ব্যবস্থা দুটিকে রদ করার বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট আশ্বাস দেয়নি । তাই চীনের কাছে তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতা নিয়ে স্বাক্ষরিত এই নয় শক্তির চুক্তিটি ছিল অর্থহীন ।

Mark:- 1

A.  Answer any ten questions from the following : 

( a ) In which year the First Opium War took place ? (প্রথম আফিম যুদ্ধ কোন সালে সংঘটিত হয়েছিল? )

answer :- প্রথম আফিম যুদ্ধ কোন সালে সংঘটিত হয়েছিল 1840 খ্রিষ্ঠাব্দে।

( b ) Mention the " Three Principles " of Sun Yat Sen.(সান ইয়াৎ সেনের "তিনটি নীতি" উল্লেখ করো।)

Answer :- সান ইয়াৎ সেনের "তিনটি নীতি" হল --- জাতীয়তাবাদ , সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র।

 ( c ) Who was the leader of Taiping rebellion ?(তাইপিং বিদ্রোহের নেতা কে ছিলেন?)

Answer :- তাইপিং বিদ্রোহের নেতা  ছিলেন -- হুং শিউ চুয়ান।

 ( d ) When the Treaty of Shimonoseki was signed ? (শিমোনোসেকি চুক্তি কবে স্বাক্ষরিত হয়? )

Answer :- শিমোনোসেকি চুক্তি কবে স্বাক্ষরিত হয় 1895 খ্রি: 17 ই এপ্রিল।

( e ) Who were Samurais ? (সামুরাই কারা ছিল? )

Answer:- প্রাক-শিল্পাঞ্চল যুগে  জাপানী যোদ্ধা বা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সামুরাই বলা হয়। । 

একজন সামুরাই অনেক ধরনের অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করার অধিকারী ছিলেন।  তাদের কাছে জনপ্রিয় অস্ত্র ছিল একধরনের  লম্বাটে তলোয়ার।

 ডান হাতেই তারা অস্ত্র ধারণ করে থাকে। যোদ্ধার করণীয়  নীতি অনুসরণ করে সামুরাই নিজ জীবন সচল রাখেন। 

( f ) Who were Zaibatsu ?(জাইবাতসু কারা ছিলেন? )

Answer:- zaibatsu, হল  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে জাপানে সংগঠিত এককটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান যা প্রধাণত একটি পরিবারকে ঘিরে গঠিত হয়েছে। 

zaibatsu বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যকলাপ যেমন ব্যাঙ্ক পরিচালনা, বৈদেশিক বানিজ্য নিয়ন্ত্রন , খনি, বীমা পরিচালনা ইত্যাদি কাজে অংশগ্রহন করতেন।  

জাইবাতসু ছিল জাপান সাম্রাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক ও শিল্প কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু, এবং জাপানের জাতীয় ও বিদেশী নীতির উপর তাদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। 

 ( g ) What is warlordism ?(সমরনায়কতন্ত্র কি?  )

Answer:- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে চীনে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে সমরনায়ক ইউয়ান শি - কাই সর্বপ্রথম রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন ।  তিনি রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তৎপর হয়েছিলেন । গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদগুলিতে তিনি সামরিক অফিসারদের নিযুক্ত করেছিলেন । প্রদেশসমুহের শাসনভার তাঁরই অনুগত সামরিক নেতাদের উপর তিনি দিয়েছিলেন । এইভাবে তিনি দেশে সামরিক শাসন প্রচলিত করেছিলেন । কেন্দ্রে অর্থাৎ পিকিং - এ ইউয়ানের শাসন প্রচলিত হল আর প্রদেশগুলিতে থাকল প্রাদেশিক সমরনায়কদের অধীনে । ১৯১৬ সালে ইউয়ান - শি - কাই -এর মৃত্যুর পরে  এই প্রাদেশিক শাসনকর্তারাই দেশে সামরিক শাসন প্রবর্তন করেন । সমর নেতাদের ক্ষমতার উৎস ছিল সেনাবাহিনী । এই সেনাবাহিনী পাশ্চাত্য ধাঁচে গঠিত হওয়ার জন্য দুর্বল কেন্দ্রীয় শাসন তা প্রতিরোধ করতে পারেনি ।

 ( h ) What is Taoism ?(তাওবাদ কি?)

Answer:-তাওবাদ: 

 তাওবাদী দর্শনের মূল কথা ছিল প্রকৃতির মধ্যে পথের অনুসন্ধান করা । ' তাও ' শব্দের অর্থ পথ ( way ) । তাওপন্থীরা মনে করতেন জ্ঞানের প্রকৃত উৎস প্রকৃতি । সকলেরই উচিত প্রকৃতি সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান আহরণ করা এবং প্রকৃতিকে বিশ্লেষণ করা।

 প্রাচীন চৈনিক চিন্তার ইতিহাসে কনফুসীয় পন্থার পরেই তাওবাদের স্থান । তাওবাদ ছিল সবকিছু থেকে সরে থাকার ও প্রত্যাহার করে নেওয়ার দর্শন । তাঁরা ক্ষমতা , মর্যাদা ও সম্পদ অর্জনের জন্য সংঘাত এড়িয়ে চলার পক্ষপাতী ছিলেন । 

অন্যান্য রহস্যবাদীদের মতোই তাওপন্থীরাও তাঁদের মৌলিক ধারণাগুলি শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করতেন না । তাঁরা বলতেন— “ যিনি জানেন তিনি কথা বলেন না , যিনি কথা বলেন তিনি জানেন না ” ( The one who knows does not speak , and the one who speaks does not know ) । তাও হল নামহীন আকারহীন এমন এক পথ , যা সার্বিকভাবে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভরশীল । 

 ( i ) Which country was not invited in the Washington Conference ?(ওয়াশিংটন সম্মেলনে কোন দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি?)

Answer :- ওয়াশিংটন সম্মেলনে রাশিয়াকে  আমন্ত্রণ জানানো হয়নি ।

 ( j ) Who was Confucius ? (কনফুসিয়াস কে ছিলেন?  )

Answer :- কনফুসীয় পন্থা:-

 চীনা ঐতিহ্যে তথা চীনা সভ্যতার প্রাচীন ইতিহাসে কনফুসীয়পন্থার প্রভাব অপরিসীম । কনফুসীয় পন্থার প্রবক্তা ছিলেন কনফুসিয়াস। ফেয়ারব্যাঙ্ক লিখেছেন— কনফুসিয়াস ছিলেন চীনের প্রথম পেশাদার শিক্ষক ও দার্শনিক এবং আজও তিনি পূর্ব এশিয়ার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও দার্শনিক হিসাবে স্বীকৃত । চৌ রাজত্বে ৫৫১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কনফুসিয়াসের জন্ম হয়।তিনি ছিলেন গৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক। 

কনফুসিয়াস , তাঁর মতাদর্শ ও তাঁর দর্শন সম্পর্কে আমরা জানতে পারি ' লুন - উ ' ` বা ' বচনসংগ্রহ ' গ্রন্থ থেকে । লুন - উ  কতকগুলি প্রশ্নের উত্তর । শিষ্য প্রশ্ন করেছেন , গুরু কনফুসিয়াস তার উত্তর দিয়েছেন । বচন সংগ্রহ ' বা লুন - উ  গ্রন্থটি সংকলন করেন  কনফুসিয়াসের কোনো শিষ্য বা শিষ্যের শিষ্যা । 

কনফুসিয়াস বিশ্বাস করতেন সমাজে প্রতিটি মানুষের জন্য একটি ভূমিকা নির্দিষ্ট করা আছে । প্রতিটি মানুষেরই সেই নির্দিষ্ট ভূমিকা যথাযথ ও আন্তরিকভাবে পালন করা উচিত । এ প্রসঙ্গে তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য — একজন শাসক শাসক হবেন , প্রজা হবেন প্রজা । পিতা পিতার মতো আচরণ করবেন , পুত্রের আচরণ হবে পুত্রবৎ । কনফুসিয়াস জোরের সঙ্গে বলেছিলেন — এই নীতি হবে সমাজের ভিত্তি ।

কনফুসিয়াসের মতাদর্শ তার সময় থেকেই চ্যুই ধর্ম নামে পরিচিত ছিল । চীনা সভ্যতায় একজন চ্যুই ছিলেন রক্ষণশীল মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি , যার দেশ ও বিশ্বের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে অনন্যসাধারণ পাণ্ডিত্য ছিল । চ্যুই ধর্মের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কনফুসিয়াস বলেছেন- একজন চ্যুই হবেন উদারমনোভাবাপন্ন , ক্ষমতাসীন মানুষের অনুগ্রহের প্রতি লালায়িত হবেন না তিনি , সাফল্য বা অসাফল্য , কোনো কিছুতেই সত্যের পথ বর্জন করবেন না তিনি এবং একই সঙ্গে তিনি অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন এবং নিয়মনীতি সম্পর্কে নমনীয় মনোভাব গ্রহণ করবেন । 

( k ) Who formed K.M.T ? (কে এম টি গঠন করেন?)

Answer :-কুয়োমিনটাং:- 

 1912 সালে চীনে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সান ইয়াৎ সেনের নেতৃত্বাধীন তুং - মেং - হুই দলের নতুন নামকরণ হয় কুয়োমিনটাং(KMT) বা জাতীয়তাবাদী দল ।

বিপ্লবী সংগঠনের পরিবর্তে কুয়োমিনটাং একটি সাধারন শিথিল সংগঠনে পরিণত হয়েছিল | ইউয়ান - শি - কাই এর ক্ষমতা দখলের পর চীনা সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছিল কুয়োমিনটাং দল | যদিও কুয়োমিনটাং এর সদস্যরা মাঝে মধ্যে সমাজসেবা মূলক কর্মসূচি , এমনকি সমাজতন্ত্রের কথাও বলতেন | তবে তারা কখনোই কৃষি সংস্কারের উপর গুরুত্ব দিতে চাননি | 

যদিও সান ইয়াৎ সেনের উদ্যোগেই কুয়োমিনটাং দল গঠিত হয়েছিল , তা সত্ত্বেও প্রথম থেকেই এই দলের কার্যকলাপে তিনি যথেষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন পুরনো বিপ্লবী চেতনা সদস্যদের মধ্যে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে সান ইয়াৎ সেন কুয়োমিনটাং এর ভেতরেই তুং- যেং - হুই ইয়ুথ ক্লাব নামে ক্ষুদ্র সংগঠন তৈরি করেন |

( l ) When did U.S.A throw atomic bomb at Hiroshima and Nagasaki ?(মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখন হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে?)

Answer :- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র 1945 খ্রি: 6 ও 9 ই আগষ্ট হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে ।

m) What is the meaning of Taiping ? (তাইপিং কথার অর্থ কী? )

Answer :- তাইপিং কথার অর্থ হল -- মহতী শান্তি বা মহান সামাজিক সঙ্গতি [Great social Harmony]


Tuesday, December 12, 2023

CBPBU 5th sem. CORE :- 12

 CBPBU B.A HISTORY

5th sem. CORE :- 12 

Answer any ten questions from the following : 

( a ) Who did belong to " First Estate " in the French Society ?( ফ্রান্সের সমাজব্যবস্থায় প্রথম শ্রেনী কারা ?)

Answer:- ফ্রান্সের সমাজব্যবস্থায় প্রথম শ্রেনী ছিল যাজকরা। মোট জনসংখার এক শতাংশ না হলেও এরা খুব শক্তিশালী ছিল । এরা গির্জার সম্পত্তির মুল অধিকারী ছিলেন।

 ( b ) Who was Voltaire ? (ভলতেয়ার কে ?)

Answer:- ভলতেয়ার ( Voltaire ১৬৯৪–১৭৭৮ ) ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী । তিনি ছিলেন একজন কবি , নাট্যকার, সাহিত্যিক , দার্শনিক । তাকে ইউরোপের সাহিত্য জগতের মধ্যমনি বলা হয়। তার লেখা দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল --- কাদিদ ও লেতর ফিলোজফিক ।

 ( c ) What is Zollverein ? (জোলভেরাইন কী )

Answer :- প্রাশিয়ার নেতৃত্বে গঠিত একটি শুল্কসংঘ হল জোলভেরাইন । ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির রাজ্যগুলিকে নিয়ে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে এটি গড়ে ওঠে। 

 ( d ) When was the treaty of Tilsit signed ? (কখন টিলজিটের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় ? )

১৮০৭ খ্রি., ৮ জুলাই  রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার নেপোলিয়নের সঙ্গে টিলজিটের সন্ধি স্বাক্ষর করেন।

( e ) Who were Physiocrats ? (ফিজিওক্র্যাট কারা ?)

Answer :- ফিজিওক্র্যাট ছিলেন 1760-এর দশকের এক  দল ফরাসি  চিন্তাবিদ।যারা বিশ্বাস করতেন যে জাতিগুলির সম্পদ সম্পূর্ণরূপে "কৃষিজমি  বা কৃষিপন্য  " থেকে প্রাপ্ত হয়েছিল । 

( f ) Give the name of the place where Napoleon was exiled . ( নেপোলিয়নকে কোথায় নির্বাসন দেওয়া হয় ? )

Answer :- নেপোলিয়নকে সেন্ট এলবা দ্বীপে  নির্বাসন দেওয়া হয় ।

( g ) Who won the battle of Trafalgar ?  (ট্রাফালগারের যুদ্ধে কে জয়ী হয়?)

Ans:- 1805 খ্রি: ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের মধ্যে  ট্রাফালগারের যুদ্ধ হয়।  এই যুদ্ধে ইংল্যান্ড জয়ী হয়।

( h ) Who were Girondists ?

জিরোন্দিসরা বা গিরোন্দিসরা  Girondists, ছিল ফরাসি বিপ্লবের সময় একটি রাজনৈতিক দল ।  1791 থেকে 1793 সাল পর্যন্ত, জিরোন্ডিনরা আইনসভা এবং জাতীয় সম্মেলনে সক্রিয় ছিল। তারা প্রাথমিকভাবে জ্যাকবিন আন্দোলনের অংশ ছিল।

( i ) What do you mean by Spanish ulcer ? (স্প্যানিশ আলসার বলতে কী বোঝ ?)

স্পেন এবং পর্তুগালের উপদ্বীপের যুদ্ধ ছিল উনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপের সবচেয়ে তিক্ত লড়াই। 1808 থেকে 1814 সাল পর্যন্ত, স্প্যানিশ রেগুলার এবং গেরিলারা, স্যার জন মুর এবং ডিউক অফ ওয়েলিংটনের নেতৃত্বে ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে নেপোলিয়নের সৈন্যদের  যুদ্ধ হয়। ওয়েলিংটনের সেনাবাহিনী পাইরেনিস অতিক্রম করে ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। নেপোলিয়ন এদের  "স্প্যানিশ আলসার" বলেছিলেন ।

( j ) What is Kulturkampf ? (কুলটুর কাম্ফ কী? )

রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের জার্মান ঐক্যের বিরোধী বলে মনে করতেন। এজন্য তিনি ক্যাথলিকদের দমন করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আইন জারি করেন। ফলে জার্মান রাষ্ট্র ও চার্চের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এই দ্বন্দ্ব কুলটুর কাম্ফ বা সভ্যতার সংগ্রাম নামে পরিচিত।

( k ) Who was called " the sick man of Europe " ? (ইউরোপের রুগ্ন মানুষ কাকে বলা হয়?)

Answer:- ইউরোপের রুগ্ন মানুষ বলা হয় তুরষ্ককে।



1. Give an estimate of the role of Mazzini and Cavour in the unification of Italy . Do you notice any difference in their approach to the problem ?

* ইটালির ঐকা আন্দোলনে জোসেফ ম্যাসিনি ও ক্যাভুরের  ভূমিকা উল্লেখ করো । উভয়ে যে পন্থা অবলম্বন করেছিল তাতে কী কোন পার্থক্য দেখতে পাও ?

 উত্তর :-

প্রাচীন সভ্যতার লীলাভূমি ইটালি ফরাসি বিপ্লবের ( ১৭৮৯ খ্রি . ) আগে বিভিন্ন ছোটোবড়ো পরস্পর বিরোধী রাজ্যে বিভক্ত ছিল । ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন এই রাজ্যগুলি জয় করে ঐক্যবন্ধ করলেও তাঁর পতনের পর ভিয়েনা বন্দোবস্তের দ্বারা ইটালিকে আবার বিভিন্ন রাজ্যে বিভক্ত করে সেখানে অস্ট্রিয়া সহ বিভিন্ন বিদেশি শক্তির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয় । ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ইটালির জাতীয়তাবাদীরা রাজনৈতিক ঐক্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে । এই আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন জোসেফ ম্যাৎসিনি ও ক্যাভুর।


জোসেফ ম্যাৎসিনি ও ইয়ং ইটালি আন্দোলন 

ম্যাৎসিনি ছিলেন দেশপ্রেমিক , সুলেখক , চিন্তাবিদ ,  ও বিপ্লবী । তিনি ইটালির জেনোয়া প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন ( ১৮০৫ খ্রি ) । অল্প বয়সেই তিনি স্বাধীন ও ঐক্যবদ্ধ ইটালির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন । প্রথম জীবনে তিনি কার্বোনারি নামে এক গুপ্ত সমিতিতে যোগ দিয়ে ইটালিকে বিদেশি শাসনমুক্ত করার চেষ্টা করেন । কিন্তু শীঘ্রই এই আন্দোলনের দুর্বলতা উপলব্ধি করে তিনি এই দল ত্যাগ করেন । বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে কারাদণ্ড ও নির্বাসন দেওয়া হয় । 

আদর্শ : ম্যাৎসিনি উপলব্ধি করেন যে , ইটালির ঐক্যের পথে সবচেয়ে বড়ো বাধা হল অস্ট্রিয়া । অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি ইটালির যুবশক্তিকে ঝাপিয়ে পড়তে অনুরোধ করেন । তাঁর আদর্শ ছিল বিদেশি শক্তির সহায়তা ছাড়া ইটালিবাসী রক্ত ঝরিয়ে দেশে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে । তিনি বলেন , “ শহীদের রক্ত যত ঝরবে , আদর্শের বীজ ততই ফলবতী হবে । ” তিনি উপলব্দি করেন যে , গনসমর্থন ও গনজাগরন ছাড়া কোন সংগ্রাম সফল হতে পারে না। তিনি সমগ্র ইতালিবাসীকে "একাগ্রতার সাথে এগিয়ে চলার (Italia fare de se) আহ্বান করেন।

ইয়ং ইটালি দল গঠন : দেশবাসীকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে ম্যাৎসিনি নির্বাসিত অবস্থায় ফ্রান্সের মার্সাই শহরে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে ' ইয়ং ইটালি ' নামে একটি যুবদল প্রতিষ্ঠা করেন । এই দল শিক্ষা , আত্মত্যাগ ও চরিত্র নিষ্ঠার দ্বারা দেশবাসীর মধ্যে জাতীয়তাবোধের প্রসার ঘটানোর উদ্যোগ নেয় । এই দল শীঘ্রই অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই দলের সদস্যসংখ্যা ৩০ হাজারে পৌঁছায় । ম্যাৎসিনি ' ইয়ং ইটালি ' নামে একটি পত্রিকাও প্রকাশ করেন ।

 ফেব্রুয়ারি বিপ্লব : ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লব শুরু হলে ইটালিতেও ব্যাপক জাগরণ দেখা দেয় । ভেনিসে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় । নেপল্‌স , মিলান , লম্বাডি প্রভৃতি রাজ্যেও তীব্র আন্দোলন শুরু হয় । পিডমন্ট সার্ডিনিয়ার রাজা চার্লস অ্যালবার্ট অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন । এসময় ম্যাৎসিনি নির্বাসন ছেড়ে ইটালিতে ফিরে এসে ইয়ং ইটালির সদস্যদের নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন । তাঁর নেতৃত্বে রোম ও টাস্কানিতে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় । 

ব্যর্থতা : সংগঠনের অভাব , অস্ট্রিয়া ও ফরাসি শক্তির তীব্র দমননীতির ফলে ইয়ং ইটালির আন্দোলন স্তদ্ধ হয় । শেষপর্যন্ত তাঁর আন্দোলন বার্থ হয়ে যায় রোম ও টাস্কানির প্রজাতন্ত্র ধ্বংস হয় । ম্যাসিনি ভগ্নহৃদয়ে বাকি জীবন লন্ডনে কাটান । তবে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন ঠিকই , কিন্তু তিনি ইটালিবাসীর মনে দেশপ্রেমের যে আগুন জ্বালিয়েছিলেন তা পরবর্তীকালে ইটালির ঐক্য আন্দোলনকে শক্তিশালী করে । 


কাউন্ট ক্যাভুরের ভূমিকা :-

 বিদেশি শক্তিগুলিকে বিতাড়িত করে ইটালির ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যাঁরা অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কাউন্ট ক্যামিলো  ক্যাভুর ( ১৮১০-১৮৬১ খ্রি . ) । পিডমন্টের এক অভিজাত পরিবারে তার জন্ম হয়। পড়াশুনা শেষ করে ক্যাভুর ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি পিডমন্টের মন্ত্রীসভায় যোগ দেন।

মতাদর্শ : বাস্তববাদী ক্যাভুর উপলব্ধি করেন যে , বৈদেশিক শক্তির সাহায্য ছাড়া অস্ট্রিয়ার মতো প্রবল শক্তিকে ইটালি থেকে বিতাড়িত করা যাবে না । ক্যাভুর পিডমন্ট সার্ডিনিয়ার স্যাভয় রাজবংশের অধীনে ইটালিকে ঐক্যবদ্ধ করার নীতি গ্রহণ করেন ।  পিডমন্টের শক্তিবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন সংস্কারমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন ।শিল্প , বাণিজ্য ও কৃষিতে উন্নতির জন্য জরুরি ভিত্তিতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয় । ইংল্যান্ড , ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের সাথে বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদন করে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করে । বাণিজ্য শর্তগুলি শিথিল করে অবাধ বাণিজ্যকে উৎসাহিত করেন ।

কার্যকলাপ :- 

 অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে বিদেশি শক্তির সাহায্য লাভের উদ্দেশে  ক্যাভুর ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ( ১৮৫৫-১৮ খ্রি . ) ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে সহায়তা করেন । যুদ্ধ পরবর্তী প্যারিসের শান্তি বৈঠকে ( ১৮৫৬ খ্রি . ) অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে ইটালি তার অভিযোগগুলি পেশ করার সুযোগ পায় । তিনি ইতালির সমস্যাকে ইউরোপের সমস্যা হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। ফ্রান্সের সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন ক্যাভুরকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন।

 প্লোমবিয়ার্সের চুক্তি :-   এই উদ্দেশ্যে ক্যাভুর ১৮৫৬ খ্রি ফ্রান্সের সঙ্গে প্লোমবিয়েসের গোপন চুক্তি  স্বাক্ষর করেন । এই চুক্তি অনুসারে  ফ্রান্স অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে  যুদ্ধে পিডমন্টকে সাহায্য দিতে রাজি হয় ।  ফ্রান্সের সঙ্গে গোপন সন্ধির পর ক্যাভুর অস্ট্রিয়াকে নানাভাবে যুদ্ধের উস্কানি দিলে অস্ট্রিয়া পিডমন্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ( ১৮৫৯ খ্রি . ) করে । ফলে ফ্রান্সও পিডমন্টের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দিয়ে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করতে সাহায্য করে। কিন্তু ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন মাঝপথে যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি ( ১৮৫৯ খ্রি . ) স্বাক্ষর করে । এই সন্ধির দ্বারা পিডমন্টের সঙ্গে লম্বার্ডি ও মিলান যুক্ত হয় ।

ক্যাভুরের প্রতিক্রিয়া :- 

ক্যাভুর ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধির বিরোধিতা করলেও পিডমন্টের রাজা ভিক্টর ইমান্যুয়েল উপলব্ধি করেন যে , ফ্রান্সের সহায়তা ছাড়া অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে জয় লাভ করা সম্ভব নয় । তাই তিনি যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিয়ে এই সন্ধি মেনে নেন এবং অস্ট্রিয়ার সঙ্গে জুরিখের সন্ধি ( ১৮৫৯ খ্রি . ) স্বাক্ষর করেন । এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ক্যাভুর পদত্যাগ করেন ।

কাভূরের ক্ষমতা লাভ :-

কাভূরের পক্ষে বেশিদিন রাজনীতির বৃত্তের বাইরে থাকা সম্ভব হয়নি । ১৮৫৯ - এর জুলাইয়ে পদত্যাগ করে ১৮৬০ - এর জানুয়ারিতে স্বেচ্ছায় তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরে এসেছিলেন । এই দ্রুত প্রত্যাবর্তনের কারণ ছিল ইতালির পরিবর্তিত পরিস্থিতি । ভিল্লাফাৎকার চুক্তির রাজনৈতিক গুরুত্ব যাই থাক , সাধারণ মানুষের কাছে তা ছিল মূলাহীন । তাই মধ্য - ইতালির জনগণ গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পিড্‌মন্টের সাথে সংযুক্তির দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ করে । টাস্কেনির অস্ট্রীয়ান শাসক পালিয়ে যান । সেখানে অস্থায়ী সরকার স্থাপিত হয় । আসলে গণজাগরণের এই সুযোগ কাতুর হাতছাড়া করতে চাননি । তিনি স্বেচ্ছায় নিজ দায়িত্ব পুনগ্রহণ করেন এবং কূটনৈতিক উপায়ে ইতালির ঐক্য প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে উদ্যোগী হন । কাভুর ফ্রান্সকে স্যাভয় ও নিস প্রদানের শর্তে পিডমন্টের সাথে মধ্য ইতালীয় ডাচিগুলির সংযুক্তির ক্ষেত্রে ফ্রান্সের সমর্থন আদায় করেন । ১৮৬০ - এর ১১-১২ই মার্চ গণভোটের মাধ্যমে পিডমন্টের সাথে টাস্তেনি , পার্মা ও মডেনার সংযুক্তি ঘটে । 

জোসেফ ম্যাসিনি ও ক্যাভুরের নীতির মধ্যে  পার্থক্য :- 

ম্যাসিনির আদর্শ ছিল বিদেশি শক্তির সহায়তা ছাড়া ইটালিবাসী রক্ত ঝরিয়ে দেশে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা । তিনি উপলব্দি করেন যে , গনসমর্থন ও গনজাগরন ছাড়া কোন সংগ্রাম সফল হতে পারে না। অন্যদিকে ক্যাভুর উপলব্ধি করেন যে , বৈদেশিক শক্তির সাহায্য ছাড়া অস্ট্রিয়ার মতো প্রবল শক্তিকে ইটালি থেকে বিতাড়িত করা যাবে না । 

ম্যাসিনি স্বাধীন ও ঐক্যবদ্ধ ইটালির স্বপ্ন দেখতেন কিন্তু ক্যাভুর পিডমন্ট সার্ডিনিয়ার স্যাভয় রাজবংশের অধীনে ইটালিকে ঐক্যবদ্ধ করার নীতি গ্রহণ করেন ।

গ্যারিবল্ডি : ইতালির এমন একটা সংকটময় সময়ে আগমন ঘটে ইতালির ঐক্য আন্দোলনের অপর একজন প্রাণপুরুষ গ্যারিবল্ডি । গ্যারিবল্ডি ছিলেন একজন আদর্শ দেশপ্রেমিক । তিনি ছিলেন ইয়ং ইতালির সদস্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার উরুগুয়েতে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র সরকার গঠনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল । 

সিসিলিতে কৃষক আন্দোলন:- ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ ইতালির সিসিলিতে কৃষক বিদ্রোহ শুরু হলে গ্যারিবল্ডির কাছে সিসিলি ও নেপলসের অধিবাসীরা সাহায্য প্রার্থনা করেছিল । গ্যারিবল্ডি গেরিলা যুদ্ধ কৌশলে দক্ষ ছিলেন । তার সেনাবাহিনীকে ' লাল কোর্তা ' বলা হত ।

গ্যারিবল্ডির সিসিলি ও নেপলস অভিযান:- গ্যারিবল্ডি তার এক হাজার লাল কোর্তা বাহিনীর সাথে সিসিলি ও নেপলসে অবতরণ করেন । এই অঞ্চল দুটিকে তিনি অধিকার করে নেন এবং এর ফলে দক্ষিণ ইতালিতে প্রজাতন্ত্র স্থাপিত হয় । এরপর তিনি ইতালিতে পোপের রাজ্য আক্রমণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন । 

গ্যারিবল্ডির অবদান :- গ্যারিবল্ডি এবং ম্যাৎসিনি নীতির দিকে থেকে অনেকটা কাছের লোক ছিলেন , কারণ উভয়েই ছিলেন প্রজাতন্ত্রের সমর্থক । তিনি সিসিলি ও নেপলসকে ভিক্টর ইম্যানুয়েলের হাতে সমর্পণ করেন । এরফলে গৃহযুদ্ধের হাত থেকে ইতালি রক্ষা পায় । এর ফলে তার উদারতা ও দূরদর্শিতার পরিচয় পাওয়া যায় ।


Marks :-10

1. What were the causes of the Industrial Revolution in England ? (ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের কারণ কী?)

Answer :- Industrial Revolution ' কথাটির বাংলা প্রতিশব্দ হল ‘ শিল্পবিপ্লব ’ । ফরাসি দার্শনিক অগাস্ত ব্লঙ্কি ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম ‘ শিল্পবিপ্লব ' কথাটি ব্যবহার করেন । পরবর্তীকালে ইংরেজ ঐতিহাসিক আর্নল্ড টয়েনবি তাঁর অক্সফোর্ড বক্তৃতামালায় ‘ শিল্পবিপ্লব ' কথাটি ব্যবহার করে এটি জনপ্রিয় করে তোলেন ।অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে ইউরোপের শিল্পক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে শিল্পোৎপাদনের পরিমাণগত ও গুণগত যে অগ্রগতি ঘটে তা ' শিল্পবিপ্লব ’ নামে পরিচিত ।ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্প বিপ্লব শুরু হলে ক্রমে তা আমেরিকা, ফ্রান্স , জার্মানি ইত্যাদি দেশে ছড়িয়ে পড়ে।ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্প বিপ্লবের কারনগুলি হল ----

a) উন্নত কৃষি ব্যবস্থা:- অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডের জনসংখ্যা প্রবল ভাবে বৃদ্ধি পায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাদ্য ও কৃষিজাত পন্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এককথায় ইংল্যান্ডে কৃষিতে বিপ্লব ঘটে যা শিল্প বিপ্লবের সুচনা ঘটাতে সাহায্য করে।

b) প্রাকৃতিক পরিবেশ:- সাধারণভাবে কেউ কেউ ইংল্যান্ডের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভৌগোলিক অবস্থানকে  শিল্পায়নের কারণ বলে উল্লেখ করেছেন । এঁদের মতে , ইংল্যান্ডের স্যাঁতসেতে আবহাওয়া সুতো কাটা ও রং পাকা করার উপযোগী ছিল । তাই বস্ত্রশিল্পে ইংল্যান্ড অগ্রণী ভূমিকা নিতে পেরেছিল । তাছাড়া ইংল্যান্ডের নদী ও জলপ্রপাতগুলি জলপথে পরিবহনের  সুবিধা করেছিল । এছাড়া শিল্পায়নের অতি উপযোগী দুটি উপাদান কয়লা ও লোহার সহজলভ্যতা ইংল্যান্ডে শিল্পায়নে সাহায্য করেছিল । 

c) কাঁচামালের জোগান :- অষ্টাদশ শতকে কৃষিবিপ্লবের ফলে শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রচুর কাঁচামাল উৎপাদিত হতে থাকে । তাছাড়া ইংল্যান্ড তার সুবিশাল ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য থেকে সস্তায় শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারত। ফলে শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের কোন অভাব হত না।

d) মূলধনের জোগান :- শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে  প্রচুর পরিমানে মূলধনের প্রয়োজন হয়। ইংল্যান্ডে ব্যাংক ব্যবস্থার প্রসার এই মূলধনের জোগান দিয়েছিল । তাছাড়া ইংল্যান্ড তার  উপনিবেশগুলি থেকে যে অর্থসম্পদ শোষণ করেছিল তা  ব্যবসা বানিজ্যে বিনিয়োগ করেছিল । ফলে ইংল্যান্ডের শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের কোনো অভাব হয়নি । 

e )  বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার :- ইংল্যান্ডে প্রথম শিল্প - বিপ্লবের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে কেউ কেউ সেদেশে বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও  বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলির কথা বলেছেন । এই গোষ্ঠির ঐতিহাসিকেরা মনে করেন , অন্যান্য দেশের তুলনায় ব্রিটেনে মানসিক বিকাশ ও বিজ্ঞানচর অনুকূল পরিবেশ ছিল । ফলে বিজ্ঞানচর্চা বেড়েছিল ।  ঐতিহাসিক রস্টো লিখেছেন , “ অষ্টাদশ শতকে ব্রিটেনের এই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারমূলক দৃষ্টিভঙ্গীই তাকে অবশিষ্ট ইউরোপ থেকে স্বতন্ত্র করে দিয়েছে । " অষ্টাদশ শতকে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার , যেমন —–— ফ্লাইং শাটল , স্পিনিং জেনি , ওয়াটার ফ্রেম , মিউল প্রভৃতি আবিস্কার  ইংল্যান্ডের শিল্পায়নের অগ্রগতিতে বিশেষ ভুমিকা পালন  করে ।

f ) বাজার : এসময় ইংল্যান্ডের কৃষকদের আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পেলে তাদের শিল্পপণ্য কেনার ক্ষমতা বাড়ে,  অন্যদিকে  ইংল্যান্ড তার সুবিশাল  উপনিবেশগুলিতে পণ্য বিক্রির সুযোগ পায় । ফলে ইংল্যান্ডের শিল্পসামগ্রী বিক্রির সুবিশাল বাজার গড়ে ওঠে । 

g ) শ্রমিকের যোগান :- পুঁজি , বাজার ও কাঁচামালের যোগান যেমন দ্রুত শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজন , তেমনি কলকারখানায় শ্রমিকের স্বাভাবিক যোগান ছাড়া শিল্পবিকাশ সম্ভব নয় । এদিক থেকেও ইংল্যান্ড । অন্যান্য দেশের তুলনায় অনুকূল অবস্থায় ছিল । সপ্তদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ইংল্যান্ডের জনসংখ্যা অভাবনীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল । জনসংখ্যার বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শিল্পবিকাশে সহায়ক ছিল । তাছাড়া অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডের কৃষি জমিগুলিকে চারনভুমিতে পরিনত করা হয়। ফলে অসংখ্য বেকার যুবক নামমাত্র মজুরিতে শহরের কারখানা গুলিতে শ্রমিক হিসাবে নিযুক্ত হয়।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে শিল্পবিপ্লব কোন আকস্মিক ঘটনা নয় , ধীরে ধীরে এর সুচনা ঘটেছিল এবং বিভিন্ন কারন দায়ী ছিল।

Explain whether the unification of Germany under the leadership of Bismarck was German unification or Prussian expansion .বিসমার্কের নেতৃত্বে জার্মানির একীকরণ জার্মান একীকরণ নাকি প্রুশিয়ান সম্প্রসারণ ছিল তা ব্যাখ্যা কর।

Answer :-

ইউরোপের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৭৯৯ থেকে ১৮১৪ সময়কালকে যদি বোনাপার্টের যুগ বলা যায় ,তাহলে ১৮৭১ থেকে ১৮৯০ সময়কালকে ইউরোপে " বিসমার্কের যুগ ' বলা মন্দ হয় না । বিচ্ছিন্ন জার্মান আজগুলিকে যে তীক্ষ্ণ কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক দক্ষতায় তিনি ঐক্যবদ্ধ করে মধ্য ইউরোপে একটি শক্তিশালী সামরিক রাজতন্ত্র ( military monarchy ) গড়ে তুলেছিলেন , তা অনবদ্য । 

বিসমার্ক  :-

ঐক্যবদ্ধ  জার্মানির প্রধান রূপকার ছিলেন বিসমার্ক । ১৮৬২ খ্রি: প্রাশিয়ার চ্যান্সেলার যোগদানের পর তিনি জার্মানির একীকরণের জন্য যুদ্ধনীতি গ্রহণ করেন । তখন বিসমার্কে উপাধি ছিল যে , নিছক আলাপ - আলোচনা দ্বারা বিচ্ছিন্ন জার্মানির ঐক্য সম্ভব নয় । ফ্রাঙ্কফ পার্লামেন্টের ব্যর্থতা তাঁকে এই সত্যে উপনীত হতে সাহায্য করেছিল । অতঃপর তিনি রক্ত ও লৌহ নীতি দ্বারা তিনটি যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ করেন ( ১৮৭০ খ্রঃ ) । ১৮৭১ এ ঐকাবন্ধ জার্মান  রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর প্রত্যাশামতো বিসমার্কই নতুন জার্মানির চ্যান্সেলার নিযুক্ত হন । 

বিসমার্কের লক্ষ্য ছিল জার্মানির ঐক্যসাধন । তাই পর পর তিনটি যুদ্ধ দ্বারা তিনি জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেন ----

a) ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ :-

ডেনমার্কের রাজা লন্ডন চুক্তি ( ১৮৫২ খ্রি . ) লঙ্ঘন করে ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে শ্লেসউইগ ও হলস্টাইন নামে প্রদেশ দুটি সরাসরি দখল করে নেন । ফলে বিসমার্ক অস্ট্রিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ( ১৮৬৪ খ্রি . ) করেন । যুদ্ধে পরাজিত হয়ে  ডেনমার্ক গ্যাস্টিনের চুক্তি ( ১৮৬৫ খ্রি ) স্বাক্ষরে বাধ্য হয় । চুক্তিতে স্থির হয় যে প্রাশিয়া শ্লেসউইগ এবং অস্ট্রিয়া হলস্টাইন লাভ করবে । ভবিষ্যতে তারা যৌথভাবে শ্লেসউইগ ও হলস্টাইন সমস্যা সমাধান করবে।

b) অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে স্যাডোয়ার  যুদ্ধ :-

 ইতিমধ্যে অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয়তা কমে গেলে বিসমার্ক গ্যাস্টিনের চুক্তি ভঙ্গের অজুহাতে  অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন । ১৮৬৬ খ্রি:  স্যাডোয়ার যুদ্ধে অস্ট্রিয়া প্রাশিয়ার কাছে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয় । প্রাশিয়ার কাছে পরাজিত অস্ট্রিয়া প্রাগের সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় । এই সন্ধির ফলে  অস্ট্রিয়া জার্মানির নেতৃত্ব ত্যাগ করে।

c) ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ :-

অস্ট্রিয়া পরাজয়ের পর ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য অগ্রসর হয় প্রাশিয়া। অস্ট্রিয়া,  ইতালি ও রাশিয়াকে নিরপেক্ষ রেখে বিসমার্ক ফ্রান্সকে যুদ্ধের জন্য পরোচিত করেন। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে  ফ্রান্স  বিসমার্কের কূটনৈতিক জালে জড়িয়ে প্রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এবং সেডানের যুদ্ধ ফরাসি সম্রাট তৃতীয়  নেপোলিয়ন পরাজিত হন।ফ্রাঙ্কফুর্টের সন্ধির দ্বারা ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে ১০মে, এই যুদ্ধের অবসান ঘটে। এবং জার্মানির রাজনৈতিক ঐক্য সম্পন্ন হয়।

ফ্রান্সকে বিচ্ছিন্ন করার  নীতি :- 

বিসমার্ক কার্যত ফ্রান্সকে ইউরোপের অন্যান্য রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার নীতি অনুসরণ করেন। তিনি জানতেন যে, ফ্রান্সের পক্ষে পরাজয়ের অপমান সহ্য করা সম্ভব নয়। সেইজন্য তিনি অসাধারণ কূটকৌশল প্রয়োগ করে ফ্রান্সকে বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করেছিলেন। 


ফ্রান্সকে মিত্রহীন ও একা রাখার জন্য বিসমার্ক যে কূটনৈতিক নীতি গ্রহণ করেন। তার দ্বারা তিনি ইউরোপের বিভিন্ন শক্তিশালী রাষ্ট্রের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপনে ব্রতী হন। এই মৈত্রী নীতি বিসমার্কের  বিচক্ষণতার অপূর্ব নিদর্শন।

বিসমার্ক জার্মানির ঐক্য সাধন করতে বিসমার্ক কতগুলো চুক্তি সম্পাদন করে সেগুলি হল নিম্নরূপ ---

তিন সম্রাটের চুক্তি :-

বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে বিসমার্কের কূটনৈতিক দক্ষতা প্রথমেই প্রমাণিত হয়। ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে তিনি এই সময় অস্ট্রিয়া, রাশিয়া ও জার্মানি-র সম্রাটদের মধ্যে একটি সহযোগিতামূলক চুক্তি বা বন্ধুত্বের এর চুক্তি সম্পাদন করেন। এর নাম ছিল তিন সম্রাটের চুক্তি। 

দ্বিশক্তি চুক্তি : বিসমার্ক অস্ট্রিয়ার সাথে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে একটি গোপন দ্বিশক্তি চুক্তি সম্পাদন করেন । এই চুক্তির দ্বারা স্থির হয় যে ,  রাশিয়া যদি যুদ্ধে ফ্রান্সকে সাহায্য করতে অগ্রসর হয় তবে উভয়পক্ষ মিলিতভাবে যুদ্ধ করবে । 

ত্রিশক্তি চুক্তি : বিসমার্কের চেষ্টার ফলে জার্মানি ও অষ্ট্রিয়াকে নিয়ে গঠিত দ্বিশক্তি চুক্তিতে ইতালি যোগদান করতে সমর্থ হয় । এর ফলে জার্মানি ও অষ্ট্রিয়া পররাষ্ট্রীয় আক্রমণ ও যুদ্ধ থেকে অনেকটা নিরাপদ অনুভব করে । ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দে এই শক্তি ফলে ইতালি অনেকটা নিরাপদ অনুভব করে এবং ঐতিহাসিক ত্রিশক্তি চুক্তির উদ্ভব হয় ।

রি - ইনসিওরেন্স চুক্তি : বিসমার্ক দ্বিশক্তি- ত্রিশক্তি চুক্তিতেও সন্তুষ্ট হয়নি । যদি চার মিত্র না হয় তাহলে জার্মানি পূর্ব রাশিয়াতে অসংরক্ষিত হয়ে পড়বে । বিসমার্ক কোন উপায় রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা চুক্তি নতুবা নিরপেক্ষ চুক্তি স্বাক্ষর করতে বদ্ধপরিকর হয় । তার অসাধারণ কূটনৈতিক বিচক্ষণতার ফলে শেষ পর্যন্ত তার উদ্দেশ্য সফল  হয় । ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে বিসমার্ক রাশিয়ার সঙ্গে রি - ইনসিওরেন্স চুক্তি সম্পাদন করেন । এই চুক্তি দ্বারা রাশিয়া প্রতিশ্রুতি দেয় যে তৃতীয় কোন রাষ্ট্র জার্মানি আক্রমণ করলে রাশিয়া নিরপেক্ষতা অবলম্বন করবে । এইভাবে বিসমার্ক অন্যান্য সাধারণ কুটকৌশল ও কূটনৈতিক দক্ষতার সাহায্যে জার্মানিকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করেন ।

Write a short note on ' Metternich System ' . Why did it ultimately fail ? (মেটারনিক ব্যবস্থা কী ?  এটি শেষ পর্যন্ত কেন ব্যর্থ হয় ?  )

Answer :-  অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স ক্লেমেন্স মেটারনিখ ছিলেন সমকালীন ইউরোপীয় রাজনীতির উজ্জ্বলতম নক্ষত্র । ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে ইউরোপীয় রাজনীতিতে তিনিই ছিলেন প্রধান নিয়ন্ত্রক । এজন্য ঐতিহাসিক ফিশার এই সময়কালকে ‘ মেটারনিখের যুগ ' বলে অভিহিত করেছেন । 

 মেটারনিখ ব্যবস্থা:- অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ ভিয়েনা সম্মেলনের সিদ্ধান্তের দ্বারা ইউরোপের অন্যান্য দেশে বিভিন্ন রক্ষণশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।  ইউরোপে বিপ্লবের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে তিনি উদ্যোগী হন।  ফরাসি বিপ্লব - প্রসূত উদারতন্ত্র , জাতীয়তাবাদ , গণতন্ত্র প্রভৃতি প্রগতিশীল ভাবধারার অগ্রগতি রোধ করার চেষ্ঠা করেন।  অস্ট্রিয়ার স্বার্থসিদ্ধি করা এবং ইউরোপে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য বজায় রাখার জন্য তিনি যে যে দমনমূলক নীতি চালু করেন তা ‘ মেটারনিখ পদ্ধতি ’ বা ‘ মেটারনিখ ব্যবস্থা ’ নামে পরিচিত ।

মেটারনিখ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য :-

মেটারনিখ ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল—

 1 )পুরাতনতন্ত্র : মধ্যযুগীয় অভিজাততন্ত্র , ঐশ্বরিক এবং বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র , পুরোহিততন্ত্র , ক্যাথোলিক গির্জার প্রাধান্য প্রভৃতি পুরোনো ভাবধারাগুলি পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মেটারনিখ আজীবন সংগ্রাম চালিয়ে যান । 

2 ) বিপ্লব - বিরোধিতা : মেটারনিখ ফরাসি বিপ্লব এবং বিপ্লব প্রসূত আধুনিক যেমন – উদারতন্ত্র , জাতীয়তাবাদ , গণতন্ত্র প্রভৃতির তীব্র বিরোধী ছিলেন । তিনি এসব আধুনিক ভাবধারাকে রাজনৈতিক মহামারি বলে মনে করতেন ।

 3 ) পরিবর্তনের বিরোধিতা : মেটারনিখতন্ত্রের মূলকথা হল পরিবর্তনের বিরোধিতা করে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা । সব ধরনের পরিবর্তনের বিরোধী মেটারনিখ ইউরোপের রাজাদের পরামর্শ দিতেন , “ রাজত্ব করুন কিন্তু কোনো পরিবর্তন বা সংস্কার করবেন না । "

 4 ) অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য রক্ষা : অস্ট্রিয়ায় বহু জাতি , ভাষা ও ধর্মের মানুষের বসবাসের ফলে সেদেশে বিপ্লব - প্রসূত ভাবধারাগুলির প্রবেশ ঘটলে সাম্রাজ্য ভেঙে যেত । এজনা পুরাতনতন্ত্র ফিরিয়ে এনে অস্ট্রীয় সাম্রাজ্যকে রক্ষা করা এবং ইউরোপীয় রাজনীতিতে যে কোনো উপায়ে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য ও নেতৃত্ব বজায় রাখাই মেটারনিখের মূল উদ্দেশ্য ছিল ।

 5)  ইউরোপে পদক্ষেপ : মেটারনিখ অস্ট্রিয়ায় রক্ষণশীল নীতি চালু করলেও ইউরোপের অন্যান্য দেশে বিপ্লবী ভাবধারা ছড়িয়ে পড়লে তা ক্রমে অস্ট্রিয়ায় ঢুকে এই সাম্রাজ্য ধ্বংস করবে বলে সন্দেহ করেন । এজন্য তিনি অস্ট্রিয়ায় নয় , ইউরোপের অন্যান্য দেশেও আধুনিক ভাবধারা প্রতিহত করার উদ্যোগ নেন ।

মেটারনিখের ব্যর্থতার  কারণ :-

অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ ইউরোপে অন্তত তিন দশক সাফল্যের সঙ্গে তাঁর রক্ষণশীল নীতি কার্যকর করলেও শেষপর্যন্ত তাঁর নীতি ব্যর্থ হয় এবং ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের আঘাতে তাঁর পতন ঘটে । মেটারনিখের ব্যর্থতার  কারণ গুলি হল ----

a) নেতিবাচক নীতি : -মেটারনিখের নীতি ছিল নেতিবাচক এবং সংস্কারবিরোধী । তিনি ফরাসি বিপ্লব ও উদারতন্ত্রের ধ্বংসাত্মক দিকটি দেখলেও এর গঠনমূলক দিকটি দেখতে ব্যর্থ হয়েছেন । 

b) নতুন যুগের আগমন :-ঊনবিংশ শতকে ইউরোপে শিল্পবিপ্লব , নগরজীবনের প্রসার , বুর্জোয়াদের প্রাধান্য প্রভৃতির ফলে নতুন যুগের আগমন ঘটে । এর সঙ্গে মেটারনিখের পুরোনো নীতি মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না ।

c) যুগধর্মের বিরোধিতা :- ঊনবিংশ শতকের শুরুতে ইউরোপে ফরাসি বিপ্লব - প্রসূত আধুনিক ভাবধারাগুলি দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে । কিন্তু মেটারনিখ যুগধর্মকে উপেক্ষা করে পিছিয়ে পড়া পুরানো নীতিগুলিই আঁকড়ে ধরে থাকেন । 

d ) ইউরোপীয় দেশগুলির বিরোধিতা :- ইউরোপের বিভিন্ন দেশ মেটারনিখের নীতির বিরোধিতা করে এই নীতি ত্যাগ করে । ইংল্যান্ড ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে , রাশিয়া ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে এবং ফ্রান্স ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে এই নীতি থেকে সরে আসে । 

e ) ফেব্রুয়ারি বিপ্লব : ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সময় অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় যে ছাত্র ও শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয় তা ক্রমে বিভিন্ন প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে । নিরুপায় মেটারনিখ ইংল্যান্ডে পালিয়ে যান । এভাবে মেটারনিখতন্ত্রের পতন ঘটে ।

To what extent did the writings of the philosophers in the 18th century France influence the French Revolution of 1789 ? (ফ্রান্সে দার্শনিকদের লেখা 1789 সালের ফরাসি বিপ্লবকে কতটা প্রভাবিত করেছিল?)

or, 

Do you think that the fiscal causes lay at the root of the French Revolution ? (আপনি কি মনে করেন যে ফরাসি বিপ্লবের মূলে আর্থিক কারণগুলি নিহিত ছিল?)

Or,

Do you think that a more responsible monarchy could have prevented the French Revolution ? (আপনি কি মনে করেন যে আরও দায়িত্বশীল রাজতন্ত্র ফরাসি বিপ্লবকে প্রতিরোধ করতে পারে? )

Or, 

What was the Tennis Court Oath ? (টেনিস কোর্টের শপথ কি ছিল?)

 Who was Rousseau ? What were his chief ideas ? (রুশো কে ছিলেন?  তার প্রধান ধারণা কি ছিল? )

ফরাসি বিপ্লবের অর্থনৈতিক কারণ :- 

 ফ্রান্সের আর্থিক দুরবস্থা ফরাসি বিপ্লবের জন্য বহুলাংশে দায়ী , ফরাসি সমাজ অধিকারভোগী এবং অধিকারহীন এই দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল অধিকারভোগী শ্রেণি ফ্রান্সের অধিকাংশ ভূ - সম্পত্তির মালিক ছিল , কিন্তু এজন্য তারা রাষ্ট্রকে কোনো কর দিত না । অপরপক্ষে দরিদ্র জর্জরিত কৃষকদের সমস্ত করের বোঝা বহন করতে হত । রাষ্ট্র , জমিদার , গির্জা তাদের কাছ থেকে নানা প্রকার কর আদায় করতো । এই সমস্ত কারণ প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত , যথা--

প্রত্যক্ষ কর :- সরাসরি তৃতীয় সম্প্রদায়ের কাছ থেকে এই কর আদায় করা হত । এই করগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য টেইল বা ভূমিকর , ক্যাপিটেশন বা উৎপাদন কর , ভিটিংয়েম বা আয়ের উপর ধার্য কর ।

 পরোক্ষ কর:- ফ্রান্সে একাধিক পরোক্ষ কর চালু ছিল । যথা গ্যাবেলা বা লবণের ওপর ধার্য কর , টাইথ ' বা ধর্মকর , এইডস বা মদ , তামাকের ওপর আরোপিত কর । এছাড়া নানা ধরণের সামন্তকর আদায় করা হত জনগণের কাছ থেকে । এছাড়াও ছিল জনাকর , মৃত্যুকর । পথ , সেতু , খেয়াঘাটের ওপর নির্ধারিত পেয়াজ প্রভৃতি কর । বলাবাহুল্য এই বৈষম্যমূলক কর ব্যবস্থা ফরাসি বিপ্লবের একটি অন্যতম কারণ।

ফরাসি বিপ্লবের সামাজিক কারণ :- বিশ্ব ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য , যুগান্তকারী , সুদূরপ্রসারী ঘটনা হয় ফরাসি বিপ্লব । বিপ্লব বলতে বোঝায় কোন প্রচলিত । ব্যবস্থার অতি দ্রুত ও কার্যকরী পরিবর্তন । এই অর্থে ফরাসি বিপ্লব ফরাসি পুরাতন তন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে ফ্রান্সের সর্বত্র এক নতুন দিশা জুগিয়েছিল । অষ্টাদশ শতকে ফ্রান্সে প্রচলিত চিরাচরিত আর্থ - সামাজিক কাঠামোয় অসঙ্গতি ও ত্রুটি ছিল যার মধ্যেই ফরাসি বিপ্লবের বীজ নিহিত ছিল । ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফরাসি সমাজ তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল যথা -- 

( 1 ) প্রথম এসেস্ট বা শ্রেণি : যাজকরা ছিল প্রথম সম্প্রদায়ভুক্ত । 1789 খ্রি . তাদের সংখ্যা ছিল । লক্ষ 20 হাজার , মোট জনসংখ্যার এক শতাংশও না হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে তারা প্রবল শক্তিশালি ছিল । এরা ছিল আইনের উর্দ্ধে , এদের মধ্যে দুটি ভাগ ছিল । যথা- ( ক ) উচ্চ যাজক : এরা গির্জার সম্পত্তির মূল অধিকারী ছিল । ( খ ) নিম্ন যাজক : গির্জার সম্পত্তিতে এদের অধিকার না থাকলেও এরা ছিল সৎ , উচ্চ যাজকদের এরা ঘণার চোখে দেখত ।

দ্বিতীয় এসেস্ট বা শ্রেণি : অভিজাতরা ছিল দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত । 1789 খ্রি . তাদের সংখ্যা ছিল 3 লক্ষ 50 হাজার । সমগ্র জনসংখ্যার দেড় ভাগ , অথচ মোট কৃষি জমির 1/5 অংশের মালিক ছিল এরা । এরা দুটি দলভুক্ত ছিল- ( ক ) দরবারি অভিজাত : যে সমস্ত অভিজাতরা জন্মসূত্রে অভিজাতপদ পেত তাদের দরবারি বা জন্মসূত্রে অভিজাত বলা হত । এরা রাজাকে স্বেচ্ছাকর দিত । ( খ ) পোশাকি অভিজাত : যে সমস্ত ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে অভিজাত পদ ক্রয় করতো তাদের পোশাকি অভিজাত বলে । এই দুই দলের বিরোধ বিপ্লব ডেকে আনে ।

( iii ) তৃতীয় এসেস্ট বা শ্রেণি:- ফ্রান্সের সাতানব্বই জনকে নিয়ে গঠিত হয় তৃতীয় শ্রেনি। এদের মধ্যে ছিল বুর্জোয়া , কৃষক , শ্রমিক , কারিগর , ভবঘুরে প্রমুখ । সমাজের সর্বপ্রকার করের বোঝা এদের বইতে হত অথচ এদের কোনো সামাজিক মর্যাদা ছিল না । ফলে এই শ্রেণির মধ্যে অসন্তোষ , ক্ষোভ ক্রমশ পুঞ্জিভূত হয় যা 1789 খ্রি . ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে প্রকাশ পায় ।


ফরাসি বিপ্লবের রাজনৈতিক কারণ :-

অষ্টাদশ শতকে ফ্রান্সে বুরবো বংশের নেতৃত্বে কেন্দ্রীভূত স্বৈরাচারী রাজতত্ব প্রতিষ্ঠিত ছিল । ঐশ্বরিক ক্ষমতায় বিশ্বাসী এই রাজতন্ত্রে রাজা ছিলেন দেশের সর্বোচ্চ শাসক , আইন প্রণয়নকারী এবং প্রধান বিচারক । শাসনব্যবস্থায় জনগণের মতামতের কোনো মূল্য ছিল না । ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লব সৃষ্টিতে রাজতন্ত্রের বিভিন্ন ত্রুটিবিচ্যুতি ও রাজতন্ত্রের দায়িত্ব বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল । 

1 রাজাদের দুর্বলতা : ফরাসি রাজা চতুর্দশ লুই ( ১৬৪৩ ( ১৭১৫ খ্রি . ) ছিলেন চরম স্বৈরাচারী । তিনি বলতেন “ আমিই রাষ্ট্র ” । অলস ও বিলাসী রাজা পঞ্চদশ লুই ( ১৭১৫-৭৪ খ্রি . ) তাঁর উপপত্নী  এর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শাসন পরিচালনা করলে প্রশাসন দুর্নীতি ও স্বজনপোষণে ছেয়ে যায় এরপর অযোগ্য রাজা ষোড়শ লুই ( ১৭৭৪-৯৩ খ্রি . ) রাজতন্ত্রকে অবক্ষয়ের শেষ সীমায় নিয়ে যান । 

2. অভিজাতদের আধিপত্য : প্রশাসনে অভিজাত সম্প্রদায়ের আধিপতা শাসনব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে । প্রশাসন প্রচণ্ড দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে । ইনটেনডেন্ট ' নামে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীরা খুবই ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে । অভিজাত রাজপুরুষরা লেত্র দ্য ক্যাশে নামে এক রাজকীয় পরোয়ানার দ্বারা যে - কোনো বাস্তিকে গ্রেপ্তার করে বিনা বিচারে কারারুদ্ধ করে রাখার অধিকার পায় ।

 3 | ত্রুটিপূর্ণ আইন : অষ্টাদশ শতকে ফরাসি আইন ছিল । অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ , জটিল ও দুর্বোধ্য । দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের আইন ও দণ্ডবিধি প্রচলিত ছিল । আইনগুলি ছিল অত্যন্ত নির্মম । সাধারণ অপরাধের জন্যও অনেকসময় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হত ।



Answer:-ফরাসি বিপ্লব পৃথিবীর ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা । যেকোনো বিপ্লবের মতো ফরাসি বিপ্লবের পিছনে সামাজিক , রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক কারণ দায়ী ছিল । পাশাপাশি দার্শনিকরা ফরাসি বিপ্লবের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল । তাই বিপ্লবে তাদের অবদান কম নয় । যেসমস্ত দার্শনিক ফরাসি বিপ্লবে অবদান রেখেছিলেন তাদের ভূমিকা নিচে আলোচনা করা হল --- 

মন্তেন্ধু : পেশায় আইজীবি ফরাসি দার্শনিক মন্ত্যে ছিলেন বিপ্লব বিমুখ এবং নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের সমর্থক । 1748 খ্রি . তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থ The spirit of laws - রাজার ঈশ্বরদত্ত ক্ষমতার বিরোধিতা করে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সমর্থন করেন । তার অপরগ্রন্থ দি পার্সিয়ান লেটার্স ' - এ ফ্রান্সের প্রচলিত সমাজ অভিজাততন্ত্র ও রাজতন্ত্রের কঠোর সমালোচনা করেন । 

 ৩ ) ভলতেয়ার : কবি , নাট্যকার , সাহিত্যিক , দার্শনিক ভলতেয়ার ইউরোপীয় সাহিত্য জগতের মধ্যমণি ।  ভলতেয়ার প্রায় শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। সমকালিন ফ্রান্সের গির্জার দুর্নীতি , সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনাচার , বৈষম্যকে সর্ব সমক্ষে তুলে ধরে এক জাগরণ সৃষ্টি করেন । তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে ব্যক্তিস্বাধীনতাকে স্থান দিয়েছেন । তাঁর মতে , “ সব ধরনের স্বাধীনতা - চিন্তা , মতপ্রকাশ লেখা , কাজ করার স্বাধীনতা " মানবিকতার বিকাশের আবশ্যিক শর্ত । ভলতেয়ার তীক্ষ্ণ ও ব্যঙ্গাত্মক ভাষায় চার্চের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আক্রমণ হেনেছেন । তিনি ছিলেন প্রজাহিতৈষী রাজতন্ত্রের সমর্থক । তার রচিত দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল কাদিদ , লেতর ফিলোজফিক।ভলতেয়ারের লেখা প্রবন্ধ ও বক্তৃতা ফরাসি বুর্জোয়াদের গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল ।

 রুশো :  ফরাসি দার্শনিকদের মধ্যে সর্বপেক্ষা জনপ্রিয় রুশো । তাকে ফরাসি বিপ্লবের জনক বলা হয় । সামাজিক চুক্তি ' নামক গ্রন্থে তিনি বলেন “ Man is boch free . but every where he is in chains . " এই গ্রন্থে তিনি মানবজাতির আদি জীবন এবং ক্রম রূপান্তরের মধ্য দিয়ে সংঘবদ্ধতার দিকে অগ্রসরের বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন । তিনি বলেন যে মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন , সৎ ও সুখী । কিন্তু সমাজ তাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রেখেছে । প্রকৃতির রাজ্যে ( State of nature ) মানুষ ছিল স্বাধীন ও সুখী । কিন্তু সমাজ ও সভ্যতার বন্ধন তাকে পরাধীন করেছে । সেই পুরাতন ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় ।অসাম্যের সূত্রপাত নামক গ্রন্থে তিনি প্রচলিত সামাজিক কুসংস্কার ও বৈষম্য অত্যাচারের মূলে কুঠারাঘাত করেছেন । রাজার দ্বৈত অধিকারকে তিনি অস্বীকার করেছেন । 

বিশ্বকোষ :- দেনিস দিসেরো , দ্য এলেমবার্ট সমসাময়িক বিভিন্ন পণ্ডিতদের সহযোগিতায় 35 টি খণ্ডে বিশ্বকোষ সংকলন করে গির্জা , চার্চ ও প্রচলিত সমাজের দুর্নীতি তুলে ধরেন ফিজিওক্রাটস নামক গোষ্ঠী । কুইসনের নেতৃত্বে ফিজিওক্রটিস নামে এক অর্থনীতিবিদদের আবির্ভাব ঘটে যারা উদার বাণিজ্য নীতির সমর্থক ছিলেন । এইভাবে দার্শনিকরা তাদের রচনাবলির মাধ্যমে বিপ্লবের বীজ বপন করেছিল।

What is Declaration of Rights of Man and Citizen ? (ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণা কী)

ফরাসি সংবিধান সভা মূল সংবিধান রচনার আগে ১৭৮৯ খ্রি  ২৬ শে আগস্ট ‘ ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণা ’ ( ' Declaration of Rights of Man and Citizen ) নামে একটি দলিল প্রকাশ  করে ।

ঘোষণাপত্রের ভিত্তি : ফরাসি সংবিধান সভা কর্তৃক প্রকাশিত ‘ ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্র রচনার ক্ষেত্রে আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ' এবং ইংল্যান্ডের ' ম্যাগনা কার্টা ’ ও ‘ বিল অব রাইট্স ' , লক , রুশো , মন্তেস্ক প্রমুখ দার্শনিকের মতাদর্শ প্রভৃতির বিশেষ প্রভাব লক্ষ করা যায় ।

মানুষের অধিকার ঘোষণাপত্রের শর্ত:- ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্রে বলা হয় যে – 

[ 1 ] মানুষ জন্মগতভাবে মুক্ত ও স্বাধীন , [ 2 ] মানুষের জন্মগত অধিকারগুলি পবিত্র ও অলঙ্ঘনীয় , [ 3 ] আইনের চোখে সব মানুষ সমান , [ 4 ] রাষ্ট্রের প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হল জনগণ [ 5 ] যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার অধিকারী , [ 6 ] বাকস্বাধীনতা , সংবাদপত্রের স্বাধীনতা , ধর্মীয় স্বাধীনতা , সম্পত্তির অধিকার প্রভৃতি হল মানুষের সর্বজনীন অধিকার । 

3 সীমাবদ্ধতা : ব্যক্তি গরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্রের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল । যেমন— 

[ 1 ] ঘোষণাপত্রে সামাজিক সাম্যের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি । [ 2 ] এতে মানুষের অর্থনৈতিক অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি । [ 3 এতে শিক্ষার অধিকার সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি । 4 ] মানুষের সংগঠিত আন্দোলন করার অধিকার সম্পর্কেও ঘোষণাপত্রটি নীরব থেকেছে । [ 5 ] নাগরিকের অধিকারের কথা বলা হলেও তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ঘোষণাপত্রে কিছুই বলা হয়নি ।

  গুরুত্ব : কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্রের গুরুত্বকে মোটেই অস্বীকার করা যায় না । ঐতিহাসিক ওলার বলেছেন যে , এই ঘোষণার মাধ্যমে “ বিশেষ অধিকার ও অসাম্যের বিরুদ্ধে মানুষের অধিকার ও সাম্যের নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । ঐতিহাসিক কোবান মনে করেন যে , এই ঘোষণাপত্র “ বিশেষ অধিকারের অবসান ঘটিয়ে নতুন যুগের সূচনা করেছে।

What is Sans-culottes ( সান-কুলটস কারা ?)

Sans-culottes ছিল শহুরে শ্রমিক, কারিগর, অপ্রাপ্তবয়স্ক জমির মালিক যারা ফরাসি বিপ্লবের সময় গণ-প্রদর্শণে অংশ নিয়েছিল । 'সান-কুলটস' নামটির আক্ষরিক অর্থ হল 'কুলোটস ছাড়া', একটি কুলোট হাঁটু-উঁচু পোশাকের একটি রূপ যা শুধুমাত্র ফরাসি সমাজের ধনী সদস্যরা পরতেন। নিজেদেরকে 'কুলোটস ছাড়া' পরিচয় দিয়ে তারা ফরাসি সমাজের উচ্চ শ্রেণীর থেকে তাদের পার্থক্যের উপর জোর দিচ্ছিল। 

সান-কিউলোটস একটি দল যারা বিপ্লবে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছিল এবং কখনও কখনও বিপ্লব পরিচালনা করেছিল । এরা ছিল নিম্ন-মধ্যবিত্তের মানুষ, কারিগর এবং শিক্ষানবিশ, দোকানদার, কেরানি এবং সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ।